পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য

শিরোনাম সুত্র তারিখ
পাকিস্থানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য প্যট্রিয়ট ৩০ মে, ১৯৭১

 

ইয়াহিয়ার বিবৃতি, বাংলাদেশের মন্ত্রী জনাব এইচ এম কামরুজ্জামানের মন্তব্য, ৩০ মে, ১৯৭১ সা

 

30 মে, (UNI, PTI.) পাকিস্তান;  বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী A.H.M. কামরুজ্জামান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কথা কখনও বিশ্বাস করা যাবে না, তিনি বাংলাদেশের কোথাও কোথাও গণহত্যার  আশ্রয় নিয়েছে তারপর আবার আমাদের আলোচনা সময় আমাদের চাহিদা গ্রহণের কথা বলেছেন।

 

জেনারেল ইয়াহিয়া খান এমনকি 25th মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার চুক্তি রেডিওর মাধ্যমে ঘোষণা করার অঙ্গীকার করে তার পরিবর্তে তিনি বাংলা জাতি নিশ্চিহ্ন করার জন্যে তার সৈন্যদের আদেশ।

 

করাচিতে জনাব কামারুজ্জামান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মন্তব্য বিবৃতি জানায় যে তিনি এখনও বেসামরিক শাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অভিপ্রেত।আমাদের বাংলাদেশের একটি স্বাভাবিক মানুষের কাছে জেনারাল ইয়াহিয়া খানের নাম অর্থ: এটি একটি রক্তপিপাসু অনুষ্ণশোণিত খুনী, বিশ্ব ইতিহাসের পাকিস্তানের disintegrator সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্বাসঘাতক “.যেমন তার কথা, মিষ্টি বা যুক্তিসঙ্গত যাই হোক কিন্তু কখনো বাংলাদেশের জনগণ  তাকে গ্রহণ করা হবে না তারা যুদ্ধ অব্যাহত দ্বারা সঠিকভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখাবেন ।

 

 এটা অসম্ভব যে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানিদের সঙ্গে একটি সাধারণ ছাদের নিচে বসবাস করতে পারবেন-কারন যারা আমাদের নিরপরাধ শিশু ও মানুষদের হত্যা করেছে, আমাদের নারীদের ধর্ষণ ও আমাদের জাতীয়তাকে নিঃচ্ছিন্ন করেছে।তাই কিভাবে আমরা জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নকশা পূরন করবো যেখানে তার পোষা গুন্ডার দল দ্বারা বাংলা জাতি বিনাশ হয়।

 

LIE NAILED

 

জনাব কামারুজ্জামান বলেন,”একত্রে বাস ভিত্তিতে নিছক ভ্রাতৃভাবে একটি পারস্পরিক সম্মতি থাকা উচিত নয় বরং একে অপরের জন্য অন্তর্নিহিত এবং স্পষ্ট সম্মান বোধ করা উচিত। কিন্তু এখন আর এর অস্তিত্ব নেই। “

 

জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বিবৃতিতে উল্লেখ আছে যে আওয়ামী লীগ বিধায়কদের নবনির্বাচিত কিছু  সদস্য আছে যারা কিনা তাদের নীতি ও কর্ম দ্বারা অযোগ্য।জনাব কামারুজ্জামান বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকদের আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যদের  কর্তৃত্বকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার নেই যারা জনসংখ্যার তুলনায় ৯৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।

 

ক্ষমতা-মাতাল পাকিস্তানি প্রতারক যাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য কোন সম্মান নেই তাদের এই সদস্যদের কর্তৃত্বের ওপর বিচার করারও কোন অধিকার নেই।

“আওয়ামী লীগ কথা ভঙ্গ করতো না। আওয়ামী লীগের ভিতর যুদ্ধের ভাব ছিল না, আর না ছিল যুদ্ধের প্রস্তুতি।

 

“এখন আমাদের উপর যে যুদ্ধ নিবদ্ধ হয়েছে, আমাদের  সে যুদ্ধ অব্যাহত করতে হবে,

পাকিস্তানিদের আমাদের পুণ্যভূমি থেকে সরিয়ে ফেলা পর্যন্ত।

 

“ঐ জাতিগুলো যারা শান্তি ও গণতান্ত্রিক নীতি ও মূল্যবোধের অনুশীলন করে তাদের গণতান্ত্রিক শক্তিকে রক্ষা করার চেষ্টা করা উচিত যখন হানাদার বাহিনীর হাতে  বাংলাদেশ ধ্বংশের সম্মুখীন।

তারা সত্যিই মহান যারা নিপীড়িত ও দুর্ভাগাদেরপাশে  দাঁড়িছিলেন “

 

শহীদেরা প্রশংসিত

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে,বাংলাদেশ সরকার ঐ পরিবারগুলির দায়িত্ব গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যারা তাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার  সংগ্রামের জন্যে নিহত, গুরুতর আহত এবং অক্ষম হয়েছে ।

 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার অনুযায়ী,জনাব কামারুজ্জামান এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন এবং গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদদের প্রতি এবং প্রশংসা করেছিলেন মুক্তি বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ ক্রিয়াকলাপকে।

 

মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল একটা প্রঙ্গাপন মুক্তি পায়,বলা আছে যে, ওই সাহসী সৈন্য ও অফিসারগন, যারা এই ধরনের দৃষ্টান্তমূলক সাহস দেখিয়ে স্থায়ী  অনুপ্রেরণা উৎস্য হয়েছিল বাংলার সরকারের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।

 

ব্রডকাস্ট বলেন, সরকার প্রশংসা করে এই বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধেঅংশ নেয়া সকল যোদ্ধাদের প্রশংসা করে এবং সকল প্রতিবন্ধী,অক্ষম সৈন্য এবং শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের জন্যেসরকার পদক্ষেপ নেবে

 

বাঙ্গালী বরখাস্ত

 

আরেকটি ব্রডকাস্ট প্রকাশ করে যে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা “বাংলাদেশের এলাকা দখল করে নিয়ে” বাঙালিদের সরকারি চাকরি  ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের  থেকে নিয়মানুগ বর্জন শুরু করেছে।

 

একটি সম্প্রচার বলেন, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ১৮০০ কর্মচারীর, ১১০০ কর্মচারী বাঙালি-যাদের সবাইকে ছাটাই করা হয়েছিল।

 

ব্রডকাস্ট বলেন,  ইতিমধ্যে ৬০০ বাঙালি কর্মচারীকে আরেকটি  জায়গায় বরখাস্তের নোটিশ দিয়ে দেয়া হয়।যাদের এপ্রিল মাসের জন্য বেতন-ভাতা দেওয়া হয়েছিল, তাদের আবার মার্চ জন্য বেতন দেয়া হয়নি যখন  আওয়ামী লীগের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

 

সেনা কর্তৃপক্ষ অন্তরালে একটি কমিটি গঠন করে, বাংলাদেশের পাকিস্তান অধিকৃত এলাকা থেকে সরকারি সব বাঙালি কর্মকারীদের নিয়মানুগ বর্জন চালিয়ে যাওয়ার জন্যে।

 

(পেটট্রিয়ট, নয়াদিল্লি ৩১ মে)

Scroll to Top