বাংলাদেশ বুদ্ধিজীবি মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের বিবৃতি

<,২৪৬,৫৫৫৫৫৬>

অনুবাদকঃ নিঝুম চৌধুরী

      শিরোনাম        সূত্র        তারিখ
২৪৬। বাংলাদেশ বুদ্ধিজীবি মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের বিবৃতি      …………………

      ১৯৭১

 

শেখ মুজিবুর রহমানকে সামরিক আদালতে গোপনে অগ্রীম মৃত্যুদন্ডাদেশ দেবার চেষ্টা করে আবারও গোটা বিশ্বকে চমকে দিলো জেনারেল ইয়াহিয়া খান। মূলত ক্ষমতার মোহে অন্ধ , একজন অযোগ্য শাসক শুধু নিজ দেশকেই নয় বরং গোটা বিশ্বকে জানান দিচ্ছিলো যে সে দেশ-বিদেশের জনতার সদিচ্চছা, স্বাধীনতা, সম্ভ্রম তথা মানবতার পথের সুদূরপ্রসারী পথযাত্রার অগ্রনায়ক ব্যক্তিটিকে সে হত্যা করতে চায়।

একটি দেশ যা দশকের চাইতেও বেশি সময় থেকে একনায়ক্তন্ত্রের বুটের তলায় দুমড়ে আছে সেখানে, সংখ্যাগরিষ্ঠের জনতার শাসনের অধিকার যখন সংশয়ের অবকাশ দেখা দেয়, অমন সময়ে- শেখ মুজিবুর রহমান সার্বভৌমত্বের বৈধতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন, প্রথমত সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে, এরপর অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তুলে- যেমনটি বিশ্ববাসী কখনো দেখেনি। যখন ইয়াহিয়া খান জনতার বহুদিনের ইচ্ছা এবং অধিকারগুলো দুমড়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনের শেষ সুযোগ বাতিল করে গণহত্যার আদেশ দেয়, যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে তখন শেখ মুজিবুর রহমান বিরোধীতা করে হাজার মাইল দূরবর্তী সংখ্যালঘু শাসক তথা শোষকগোষ্টীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ও সশস্ত্র সংগ্রামের ডাক দেন।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জবাবদিহিতামূলক সরকারের জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন!কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক জান্তা তা বুট দিয়ে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে।এরপর বিশ্বে নজিরবিহীন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তার দল বিজয় লাভ করে।কিন্তু জনগণের হাতে ক্ষমতা না বুঝিয়ে দিয়ে পাকিস্তানি সরকার টালবাহানা শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির প্রতি অসহযোগিতার ডাক দেন।পাকিস্তানি সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খাঁ বাঙালি জাতির ওপর দমন-পীড়ন এবং গণহত্যা শুরু করে।শেখ মুজিবকে বিনাবিচারে আটকে রাখে। এ সময় তাকে আইনজীবী নিয়োগেরও সুযোগ দেওয়া হয়নি। আটকের আগে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন এবং যার যা আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলার আহ্বান জানান।তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরপর আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়, মানবাধিকার সংস্থাসহ সবার কাছে আমাদের ন্যায্য অধিকার লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানাই।ইসলামাবাদের লৌহমানব আমাদের ওপর যে অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল, তার নিন্দা জানাতে বলি!এশিয়া ও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, গণতান্ত্রিক, মানবতাবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান স্মরণ করা অতীব জরুরি!

Scroll to Top