পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি মওলানা ভাসানীর আবেদন

      <৪,২০৪,৪৪২-৪৪৫>               

অনুবাদকঃ জিহাদ

শিরোনাম সূত্র তারিখ
২০৪। পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি মওলানা ভাসানীর আবেদন মওলানা ভাসানীর প্রচারপত্র ৫ মে, ১৯৭১

পূর্ব বাংলার সংগ্রামী জনতার প্রতি মওলানা ভাসানীর আবেদন

দালাল, বিশ্বাঘাতক ও মোনাফেক হইতে সাবধান হউন

 

 

    গত ২৩ বৎসর যাবত পশ্চিম পাকিস্তানী শোষকদিগের নির্মম শোষণ ও শাসনে পূর্ববাংলা আজ কঙ্কালসার হইয়া পড়িয়াছে। দীর্ঘকাল নিরবিচ্ছিন্ন এই ধরনের হৃদয়হীন শোষণ, অবিচার ও অন্যাচার কি করিয়া সম্ভব হইল? স্থানীয় পুঁজিদার ও সাহায্যকারী সাঙ্গাৎ না থাকিলে বাহিরের ডাকাত আসিয়া অজানাভাবে এমন নিপুণতার সহিত লুণ্ঠন করিতে পারে না। পশ্চিম পাকিস্তানী সামন্তবাদী প্রভু, পুঁজিপতি, স্বেচ্ছাচারী সামরিক দানব ও ষড়যন্ত্রকারী আমলাগণ পূর্ব পাকিস্তানে তাহাদের জঘন্য শোষণের উচ্ছিষ্টভোগী একশ্রেণীর বিশ্বাসঘাতক ও দালাল সৃষ্টি করিয়া পাকিস্তানের জনসংখ্যার একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালীদিগের সর্বপ্রকার ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক অধিকার হইতে বঞ্চিত করিতে এবং তাহাদের উলঙ্গ শোষণ ও শাসন অব্যাহত রাখিতে সমর্থ হইয়াছে। মুসলীগ লীগ, জামাতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি দক্ষিণপন্থী দলগুলির পূর্ব পাকিস্তানী দালালেরা ধর্ম, সংহতি, ইসলাম বিপন্ন, কাশ্মীর গেল ইত্যাদির বাহানায় তাহাদের পশ্চিম পাকিস্তানী প্রভুদিগের সহিত এক শ্লোগান তুলিয়া বাংলার বুকের উপর বসিয়া পশ্চিম পাকিস্তানী শোষকদিগকে বাংলার বুকের রক্ত শুষিয়া লইতে সুযোগ করিয়া দিয়াছে এবং নিজেরাও কথাকিঞ্চিৎ উচ্ছিষ্ট পাইয়াছে। ১৯৫১, ১৯৫৪ ও ১৯৭০ সালে পূর্ববাংলার সংগ্রামী জনসাধারণ এই দালালদিগকে বার বার উচ্ছেদ করিয়া দিলেও সমূলে বিনাশ করিতে পারে নাই। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দালালরা সুচতুর চাতুরি দ্বারা বার বার পূর্ব বাংলার জনসাধারণের সর্বনাশ করিতে সফল হইয়াছে। এই সকল দালালরা পূর্ববাংলার জনতার রুদ্ররোষে জনতার হাতে মার খাইয়া আত্মগোপন করিয়াছে বা ভেক পাল্টাইয়াছে। সুযোগ বুঝিয়া বর্ণচোরারা স্বরূপ ধারণ করিয়াছে। বর্তমান পূর্ব বাংলার টেক্কা-এহিয়ার নরপশু সৈনিকদিগের ছত্রচ্ছায়ায় এই দালালেরা স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করিয়া বিভিন্ন টালবাহানায় পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের স্থায়ী শোষণদাসে পরিণত করিতে সুচতুর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়াছে। অথচ আপনারা অবগত আছেন এই মির্জাফরেরা ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর গণ ও অসহযোগ আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গে নিজেদের চামড়া বাঁচাইবার জন্য পূর্ব বাংলার এই ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রতি জোর গলায় সমর্থন জানাইয়াছিল। এখন যখন টেক্ক-এহিয়ার অভিশপ্ত দানবদিগের হাত পূর্ব বাংলার নারী শিশু বৃদ্ধ অসহায় নিরপরাধ মানুষের ঘর-বাড়ি-স্কুল-কলেজ জ্বালাইয়া দিতেছে, এমন কি মসজিদ-মন্দির কুলষিত করিতেছে, নারীদিগকে ধর্ষণ ও তৎপর খুন করিতেছে তখন এই সকল মুখচেনা দালালেরা ধর্ম, ইসলাম, সংহতি ও ভারত বিরোধী প্রচারণা দ্বারা সংগ্রামকে বানচাল করিয়া দিতেছে এবং পশ্চিম পাকিস্তানী নরপিশাচদিগের তবেদার বানিয়া তাহাদিগকে মদদ যোগাইয়া বাঙ্গালীদিগের স্থায়ী সর্বনাশ সাধন করিতেছে।

 

    ১৯৬৭ সালে আরব-ইহুদী যুদ্ধের পর ইহুদীরা দখলকৃত আরব এলাকা হইতে আরবী মুসলমানদিগকে জর্ডানে পাঠাইয়া দিয়াছে, জানে মারে নাই। ইহুদীদিগের নিকট মুসলমানদিগের জীবনের যেটুকু মূল্য আছে পাঞ্জাবী মুসলমানদের কাছে বাঙ্গালী মুসলমানের জীবনের ততটুকু মূল্যও নাই। পূর্ব বাংলার সাম্প্রতিক ব্যাপক গণহত্যা তাহা প্রমাণ করিয়াছে।

 

    পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমান নামধারী এহিয়া-টেক্কার সৈনিকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলের অসংখ্য মুসলমান ছাত্রীদিগকে উলঙ্গ করিয়া তাহাদিগের সতীত্ব নাশ করিয়াছে এবং পরে গুলি করিয়া ও বেয়নেট দিয়া খোঁচাইয়া নির্মমভাবে হত্যা করিয়াছে। এইরূপ নারীধর্ষণ ও হত্যা পূর্ব বাংলার প্রায় প্রতিটি শহর বন্দর ও গ্রামে অনুষ্ঠিত হইয়াছে।

 

    মুসলমান নামধারী এহিয়া-টেক্কার সৈনিকেরা মসজিদে নামাজরত মুসলিমদিগকে হত্যা করিয়াছে ও মসজিদ জ্বালাইয়া দিয়াছে।

 

    মুসলমান নামধারী এহিয়া-টেক্কার সৈনিকেরা লাখ লাখ নিরপরাধ মুসলমান শিশু, বৃদ্ধ ও যুবককে পাইকারীভাবে হত্যা করিতে সামান্যতম কুন্ঠাও বোধ করে নাই।

 

    প্রবল ঘূর্ণিবাত্যায় পূর্ব বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষ যখন মারা গিয়াছে তখন পশ্চিম পাকিস্তানের কোন মানুষই কোন প্রকার সাহায্য কিম্বা দুর্গত এলাকা সফর তো দুরের কথা সামান্যতম সহানুভূতিও জানায় নাই। এহিয়া খানের মুসলমানী শাসনে ঘূর্ণিবাত্যায় নিহত ৩ লক্ষ মুসলমানের যথাবিহীত দাফন-কাফন ও কবর দেওয়ার কোন ব্যবস্থা হয় নাই।

 

    এহিয়া-টেক্কার বর্বর সৈনিকেরা পূর্ব বাংলার যে লক্ষ লক্ষ মুসলমানদিগকে নির্বিচারে হত্যা করিতেছে তাহাদিগকে যথাবিহীত দাফন-কাফন-জানাজা ও কবর দিবার ব্যবস্থা করিতেছে না। এই সকল নরপশুরা যাহাদিগকে হত্যা করিতেছে তাহাদিগকে দিয়া পূর্বে কবর খোঁড়াইয়া লইতেছে।

 

    প্রতিটি মুসলমান জীবনে শেষে কামনা করে তাহার মৃত্যুর পর যেন ধর্মীয় বিধানুযায়ী তাহার সঠিক দাফন, কাফন, জানাজা ও কবর হয়। এহিয়া-টেক্কার বর্বর সৈনিকদিগের পৈশাচিক লীলায় লাখ লাখ মৃত মুসলমানের আত্মা সঠিকভাবে দাফন, কাফন, জানাজা ও কবর না পাইয়া আল্লার দরবারে ফরিয়াদ করিতেছে।

 

    মুসলমান হইয়া পশ্চিম পাকিস্তানী ঐ সকল মুসলমানরা পূর্ব বাংলার মুসলমান কৃষক শ্রমিক মজুর ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষদিগের ধনসম্পদ, ধর্ম, সংহতি ও ইসলামের ছলনায় হরণ করিয়া লইয়া তাহাদিগকে হাড়ে মাংসে জরাজীর্ণ করিয়া ফেলিয়াছে। সোনার বাংলাকে চির দুর্ভিক্ষ-বন্যা-মহামারী দেশে পরিণত করিয়া ফেলিয়াছে।

 

    মুসলমান হইয়া পূর্ব পাকিস্তান নামক দেশের এ অংশে তাহারা প্রয়োজনীয় কলকারখানা গড়ে নাই, কৃষির উন্নতি করে নাই, বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করে নাই, পূর্ব বাংলার লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নাই, চাকুরী ও ব্যবসাতে পূর্ব বাংলাকে দাবাইয়া রাখিয়াছে, মিলিটারীতে পূর্ব বাংলার লোক নেয় নাই প্রভৃতি বহুভাবে পূর্ব বাংলাকে ন্যায্য হিস্যা হইতে বঞ্চিত করিয়াছে।

 

    অথচ পূর্ব বাংলার এই সকল বিশ্বাসঘাতক দালালেরা কোনদিনই তাহার সামান্যতম প্রতিবাদ করে নাই। বরং এই নির্মম শোষণ, অত্যাচার, অবিচার, ধ্বংস-লীলা, গণহত্যায় উহারা সক্রিয় অংশীদার হইয়াছে। আজ তাহারা সুযোগ বুঝিয়া আবার মাথাচাড়া দিয়া উঠিয়াছে। পূর্ব বাংলার ধ্বংস্পস্তুপের উপর দাঁড়াইয়া আবার নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হইয়া ২৩ বৎসরের সেই ঘূণেধরা ধসে পড়া শ্লোগান ধর্ম, সংহতি, ইসলাম ও ভারতীয় বিদ্বেষের নামে তাহাদের প্রভু পশ্চিম পাকিস্তানী দানবদিগকে নানাভাবে মদদ যোগাইতেছে। তাহারা পূর্ববাংলার সংগ্রামী জনসাধারণের মনোবল ভাঙ্গিয়া দিতে চেষ্টা করিতেছে। জনসাধারণের মধ্যে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াইতেছে। জনতার সুদৃঢ একতায় ফাটল ধরাইতে চেষ্টা করিতেছে। মুক্তি সংগ্রামীদিগকে ধরাইয়া দিতেছে। পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্য ও অবাঙ্গালীদিগের সাথে হাত মিলাইয়া বাঙ্গালী হইয়া বাঙ্গালীদিগের বাড়িঘরে লুটপাট ও আগুন জ্বালাইবার সহযোগিতা করিতেছে।

 

    গত মহাযুদ্ধের পর আমি ইউরোপ ভ্রমণে গিয়া পৃথিবীর কুখ্যাত অত্যাচারী ফ্যাসিস্ট হিটলারের শক্তিমত্তা ও তাহার অত্যাচারের বীভৎসতা দেখিয়া আঁতকিয়া উঠিয়াছি এবং ভাবিয়াছি এই সমরদানব হিটলার এত ব্যাপক সৈন্য-সামন্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র লইয়া কি করিয়া পরাজিত হইল? পরে তদন্ত করিয়া দেখিয়াছি- হিটলারের চরম বর্বরোচিত অত্যাচারে কোনক্রমে না ঘাবড়াইয়া ইউরোপের প্রতিটি দেশের সাধারণ মানুষের প্রশংসনীয় অপরূপ মনোবলই হইতেছে হিটলার-মুসোলিনীর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক বিজয়ের মূলমন্ত্র। পাকিস্তানের ক্ষুদ্র হিটলার-মুসোলিনী, এহিয়া-টেক্কার অত্যাচার-অবিচার-গণহত্যা হইতে বাঁচিবার আমাদিগের সর্বপ্রথম অস্ত্র হইতেছে সুদৃঢ় মনোবল। অত্যাচারী কোনদিনই স্থায়ী জয়লাভ করিতে পারে না।

 

    পৃথিবীর সর্বকালের ইতিহাসে এই শিক্ষা দেয় যে সকল বর্বর অত্যাচারীই ধ্বংস হইয়াছে আদর্শে বলীয়ান সুদৃঢ় মনোবলের অধিকারী জনগণের বিরোধিতায়। ফেরাউন, এজিদ, হালাকু খাঁ, হিটলার-মুসোলিনীর মত অত্যাচারীর পতনই আমাদের সম্মুখে টিকাইয়া রাখিতে পারিলেই জয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী। দেশবাসী সর্বশ্রেণীর মানুষের কাছে আমার আবেদন- কোন অবস্থাতেই ঘাবড়াইবেন না, মনোবল হারাইবেন না। অটুট মনোবলই সব অস্ত্রের বড় অস্ত্র।

 

    এমতাবস্থায় পূর্ব বাংলার কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে, ছাত্র, জনতা, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবি ও চাকুরীজীবিদিগের নিকট আমার আকুল আবেদন-

(১) আপনারা বিশ্বাসঘাতক এই সকল দালালদিগের কোন প্রচারণাতেই কান দিয়ে নিজেদের মনোবল ও একতা নষ্ট করিবেন না।

(২) পূর্ব বাংলার ৪ হাজার ইউনিয়নে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গড়িয়া তুলুন।

(৩) প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং সেন্টার খুলুন। গেরিলা যুদ্ধের তালিম নিন।

(৪) মুক্তিফৌজদিগকে সর্বতোভাবে সাহায্য করুন।

(৫) জানমাল-ইজ্জত বাঁচাইবার জন্য যাহারা হিজরত করিতে বাধ্য হইতেছে দালালদের অত্যাচার হইতে তাহাদিগকে রক্ষা করুন।

(৬) চাউল ডাইল খড়ি নুন তৈল ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য অথবা রন্ধনকৃত খাদ্যদ্রব্য দিয়ে মুক্তিফৌজদিগকে সাহায্য করুন।

(৭) সকল শ্রেণীর যুবকেরা মুক্তিফৌজে যোগ দিন।

(৮) দালাল ও শত্রুর প্রতি কড়া নজর রাখুন।

(৯) দালালদিগকে সামাজিক বয়কট করুন এবং তাহাদিগের জন্য যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

(১০) সমরদানব এহিয়া-টেক্কার নির্মম অত্যাচারে যে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারাইয়াছে অথচ জীবনের অন্তিম বাসনা অনুযায়ী কাফন-দাফন, জানাজা ও কবরের মাটি পায় নাই সে সকল হতভাগ্য মানুষের এবং গত ঘূর্ণিবাত্যায় যে লক্ষ লক্ষ মানুষের জানাজা ও কবর হয় নাই গ্রামে গ্রামে ও শুক্রবারে সকল মসজিদে মসজিদে জমায়েত হইয়া তাহাদিগের আত্মার মাগফেরাত কামনায় গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করুন।

(১১) গ্রামে গ্রামে আবালবৃদ্ধবণিতা শপথ গ্রহণ করুন- যত রক্ত দিতে হয় দিব কিন্তু শোষিত, নির্যাতিত, অবহেলিত পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করিয়া ছাড়ব।

(১২) দলমত ভুলিয়া গিয়া সর্বদলীয় ঐক্যমত গড়িয়া তুলুন।

 

    প্রত্যেক দেশেই দেশের যুবকেরা দেশের মুক্তির জন্য জীবন-মান-ধন-রক্ত দিয়া অসীম ত্যাগ করিয়া থাকেন। পূর্ব বাংলার সেই সংগ্রামী যুবশক্তির কাছে ও দেশের সর্বশ্রেণীর জনসাধারণের কাছে আমার আবেদন- যে জনযুদ্ধ শুরু হইয়াছে তাহা শুধু বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের সংগ্রাম নহে। ইহা পশ্চিম পাকিস্তানী কুটিল সামন্ত প্রভু, শোষক শিল্পপতি অত্যাচারী সমরদানব ও ষড়যন্ত্রকারী আমলাদিগের শোষণ শাসন অত্যাচার অবিচার হইতে নিপীড়িত নির্যাতিত শ্রমিক কৃষক জেলে তাঁতি প্রভৃতি শোষিত মানুষের মুক্তির সংগ্রামও বটে। অতএব, গত ২৩ বৎসরের শোষণ-শাসনের ফলে বাঙ্গালীদিগের সর্বশ্রেণীর মানুষের যে চরম দুর্দশা দেখা গিয়াছে এইবার ধ্বংস না করিয়া পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর পৈশাচিক কবল হইতে মুক্তি না পাইলে বাঙ্গালীদিগের অস্তিত্ব চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত হইয়া যাইবে। তাই প্রতিজ্ঞা করুন যত রক্ত যত জীবন যত কোরবানী করিতে হয় করিব, যুদ্ধ যত কঠিন যত দীর্ঘস্থায়ী হয় হউক। সবকিছুর বিনিময়ে শোষণমুক্ত সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশ গড়িয়া তুলিব। এই মহান সংগ্রামে আল্লাহ আমাদিগের সহায় হইবেন।

    *ছাত্রদিগের ও লেখাপড়া জানা জনসাধারণের নিকট আমার আবেদন- এই প্রচারপত্রটি কার্বনে লিখিয়া কিংবা সাইক্লোষ্টাইলে কপি করিয়া ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করিবেন।

 

    সিলেট

    ৫/৫৭১

মোঃ আবদুল হামিদ খান ভাসানী

Scroll to Top