বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে ইন্দোনেশীয় জনগণের তৎপরতা সম্পর্কে লিখিত প্রতিবেদন

<৪,১৮৭,৩৭১-৩৭২>

অনুবাদকঃ ফাহমিদা আক্তার বৃষ্টি

 

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮৭। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে ইন্দোনেশীয় জনগণের তৎপরতা সম্পর্কে লিখিত প্রতিবেদন ‘আমরা’ ১৬ আগস্ট, ১৯৭১

 

জাকার্তা- ১৬-৮-৭১

১) প্রায় সব পত্রিকা, রেডিও এবং টিভিই ইন্দো-সোভিয়েত চুক্তির সংবাদ অন্তর্ভুক্ত করেছিলো। নীতিগতভাবে মন্তব্যগুলো তেমন একটা পৃথক ছিলো না। একটি বিষয়ে প্রায় সকলেই সম্মত ছিলো যে পাকিস্তানের দেওয়া যুদ্ধের হুমকি এবং পাকিস্তান প্রতি চীনাদের সমর্থনের কারনে চুক্তিটি ত্বরান্বিত করা হয়েছিলো (সমঝোতা প্রথমে শুরু হয়েছিলো ১৯৬৯) ।

২) পাকিস্তান পরিদর্শনে কেনেডিকে প্রত্যাখান, প্রত্যাখানের ব্যাপারে ইউ এস স্টেট ডিপার্টমেন্টের অনুতাপ ও উদ্বিগ্নতা এখানকার স্থানীয় ও বিদেশি ভাষার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো।

৩) কেনেডির আগরতলা, মেঘালয় এবং অন্যান্য শরণার্থি এলাকা পরিদর্শন এবং তাকে স্বাগত জানানোকালে একসাথে চিৎকার করে বলা “জয় বাংলা”, “শেখ মুজিব দীর্ঘজীবী হোক” এখানের পত্রিকাগুলো প্রচার করেছিলো। তার মন্তব্যগুলোও প্রকাশিত হয়েছিলো।

৪) ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টালে বোমা হামলায় ১৫ জনের মতো লোকের হতাহতের ঘটনায় লোকজন বুঝেছিলো যে বাংলাদেশি গেরিলারা এখনও সজীব আছে এবং তাদের কার্যকলাপ আরো তীব্রতর করছে।

৫) শেখ মুজিবুরের বিচারিক কার্যক্রম তার ছবিসহ ছাপা হয়েছিলো। খবরটি সব পত্রিকাই ছাপিয়েছিলো। জাকার্তা টাইমসের সম্পাদকীয় ছিলো সাহসী, বাস্তবিক এবং ন্যায়নিষ্ঠ (কর্তিত অংশ যুক্ত করা হলো)।

৬) শেখ মুজিবুরের বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের দুঃশ্চিন্তা এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ইউ ট্যান্টের সাথে রজারের আলোচনা এখানে ছাপা হয়েছিলো।

৭) কতগুলো ঠিকানার একটি তালিকা গত সপ্তাহে পাঠানো হয়েছে। এতে দশটি নাম রয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক তাদের নিকট “দ্য পিপল” এর কপি নিয়মিত পাঠাবেন । এই বিষয়ে ব্যয়ভারের জন্য অর্থ প্রেরণের আয়োজন করছি আমরা।

৮) জনাব মাকসুদ আলীর পাঠানো ৭ই আগস্টের চিঠির জন্য ধন্যবাদ। আমরা নিয়মিত সংবাদপত্র এবং অন্যান্য তথ্য পাই না। জরুরি প্রয়োজনের বিষয়ে উপদেশ চাওয়া চিঠিটির উত্তর সম্ভব হলে দ্রুত প্রেরিত হোক।

৯) দুই ভদ্রলোকের আচরণে এখনও কোনোরকম পরিবর্তনের লক্ষণ নেই। তা সত্ত্বেও তাদেরকে আরো কিছু সময় সতর্কতার সাথে বুঝা এবং পর্যবেক্ষণের পরে একটি প্রতিবেদন আসবে।

১০) স্বাধীনতা দিবসে মিসেস গান্ধীর বক্তৃতা এবং তার উল্লেখ করা বাংলাদেশ সংগ্রামের বিষয়টি সব পত্রিকাই সংগ্রহ করেছিলো।

১১) শেখ মুজিবের মুক্তি ও নিরাপত্তার জন্য স্টেটের চব্বিশ জন প্রধানের নিকট মিসেস গান্ধীর আবেদন এখানে প্রকাশিত হয়েছিলো।

১২) সরকারের বিভিন্ন বিভাগ, সংবাদ বিভাগ এবং উচ্চ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাকিস্তান বেশকিছু ‘শ্বেতপত্র’ প্রচার করে । সংবাদ বিভাগকে এর বিষয়বস্তু নিয়ে খুব একটা আগ্রহী মনে হয়নি। কিছু সংবাদপত্র এটি খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করেছিলো।

১৩) পাকিস্তানের প্রাক্তন তথ্যমন্ত্রী স্লায়ার আলী বর্তমানে এই শহরে একটি সফরে আছেন, সম্ভবত স্বরন সিং এর বিরোধিতা করতে এবং সরকারের ও জনগণের মনের ঝোঁক সম্পর্কে তার সরকারকে প্রতিবেদন দিতে। তাকে আমলা ও কূটনীতিকদের পরিমণ্ডলে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছিলো।

১৪) স্বরন সিং এর সফর মনে হয় রাজধানীর কঠোর মনোভাব কিছু পরিমাণে নরম করতে পেরেছে। যৌথ প্রজ্ঞাপনে এটি বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং শরণার্থি সমস্যা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে। সারসংক্ষেপ সংযুক্ত করা হলো।

১৫) শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার কার্যক্রমের ব্যাপারে সংবাদপত্রগুলোর মন্তব্য ছিলো প্রায় সর্বসম্মত যে, এই ধরণের সচিবেরা তাকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করতে পারে। বিচার বিষয়ে অন্যান্য প্রদেশে প্রকাশিত মন্তব্যও বহন করেছিলো সংবাদপত্রগুলো।

১৬) সম্প্রতি যেসব পর্যবেক্ষকেরা বাংলাদেশ সফর করেছিলো, এই মতে ছিলেন যে গেরিলা যুদ্ধ তীব্রতর হয়েছে এবং দখলদার শক্তি ইতোমধ্যেই সাহস এবং নৈতিকতা হারিয়েছে।

                                                                     (আমরা)

প্রাপক

জনাব এম মকসুদ আলী,

প্রেস সহদূত

বাংলাদেশ মিশন,

৯ সার্কাস এভিনিউ, কলকাতা-১৭,

ভারত।

Scroll to Top