মোহাম্মদ আবদুর রব, মেজর জেনারেল (অব:)আওয়ামী লীগ দলীয় প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, সিলেট; বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর চীফ অব জেনারেল স্টাফ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্রের ১৫তম খণ্ডের ২৩২ নং পৃষ্ঠায় মুদ্রিত ২৯ নং দলিল থেকে বলছি…

মোহাম্মদ আবদুর রব, মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত

স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে আমি এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করি। ১০ই এপ্রিল ভারতে যাই এবং আগরতলা অবস্থান করি। ইস্টার্ন জোনের এক থেকে চারটি সেক্টরের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়। এখানে মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করি। ভারতে জেনারেল মানেক শা, জেনারেল অরোরা, জেনারেল গিল, জেনারেল সরকার, জেনারেল কালকাট প্রমুখ অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। ৭ই মে তারিখে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আমি মুক্তিবাহিনী ইপিআর-দের নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে অপারেশন চালাই। হবিগঞ্জ থেকে শুরু করে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, শমসের নগর, শেরপুর, সিলেট প্রভৃতি স্থানে প্রতিরধ ব্যবস্থা গড়ে তুলি। পাক বাহিনীর সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমাদের দু’জন সৈন্য শহীদ হয়। অন্যদিকে পাক বাহিনীর ১৫/২০ জন সৈন্য মারা যায়।

পাক বর্বর বাহিনী মাখালকান্দি, জিলুয়া, কাটাখালী, আরিয়ামুগুর, বদরপুর, রাজেন্দ্রপুর, রুমিয়া প্রভৃতি গ্রাম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারা মাখালকান্দি গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। পাক বাহিনী আমার এলাকায় প্রায় ৫০০ জন লোককে হত্যা করে। শুধুমাত্র মাখালকান্দিতেই ৩০০ জনকে হত্যা করা হয়। প্রায় ১০/১৫ জন নারীকে পাক বর্বররা ধর্ষণ করে। তাছাড়া পাক বাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েও অনেক লোকের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়।“

-আবদুর রব, মেজর জেনারেল (অবঃ)
গণপরিষদ সদস্য, (সাবেক এম,পি,এ),
সিলেট ৩১ অক্টোবর, ১৯৭২।

Scroll to Top