সাক্ষাৎকারঃ মেজর মোঃ আনোয়ার হোসেন

সশস্ত্র প্রতিরোধঃ রংপুর-দিনাজপুর
শিরোনাম সূত্র তারিখ
৯। রংপুর-দিনাজপুর জেলায় প্রতিরোধের বিবরণ বাংলা একাডেমীর দলিলপত্র ১৯৭১

 

<৯, ৯.১, ২৭৯-২৮২>

সশস্ত্র প্রতিরোধে ৩য় বেঙ্গল
সাক্ষাৎকার:মেজর মোঃ আনোয়ার হোসেন

…… ১৯৭২

(১৯৭১ সালে ক্যাপ্টেন হিসাবে কর্মরত ছিলেন)

 

       ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ আমি সৈয়দপুর সেনানিবাস ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের কোয়ার্টার মাস্টার হিসাবে নিযুক্ত ছিলাম। ১লা মার্চ ইয়াহিয়া খানের জাতীয় পরিষদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনার পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দপুরে বাঙালি ও অবাঙালিদের ভিতরে প্রথমে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয় ও পরে অবাঙালিরা বাঙালিদের উপরে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাটালিয়নের জোয়ান ও অফিসারদের মধ্যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সব সময়ের জন্য দিয়ে দেয়া হয়। কারণ, যে কোন সময়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে।

 

সেই সময়ে আমাদের কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্নেল ফজল করিম (পাঞ্জাবী), ২য় অধিনায়ক মেজর আকতার (পাঞ্জাবী) ও ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ খান মালিক (পাঞ্জাবী) আমাদের ব্যাটালিয়ন ছত্রভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে বাঙালি অফিসার দ্বারা বিভিন্ন কোম্পানী কে অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিভিন্ন জায়গায় দেশের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য পাঠায়।

 ১। মেজর নিজাম, লেঃ মোখলেস ও ২য় লেঃ রফিক সহ বিওডি কোম্পানী কে রংপুর জেলার ঘোড়াঘাটে পাঠানো হয়;

২। ক্যাপ্টেন আশরাফকে সৈয়দপুর ও দিনাজপুর রোডের মধ্যবর্তী মগুলপাড়া নামক স্থানে বৈদ্যুতিক সংযোগস্থল পাহারার জন্য ৪০ জন জোয়ান দিয়ে পাঠানো হয়;

৩। সুবেদার রহমতউল্লাহ ও অবাঙালি মেজর শাফায়াত হোসেন কে নিয়ে ১ প্লাটুন পার্বতীপুর পাঠানো হয়;

৪। মর্টার প্লাটুনের জোয়ানদের কে মর্টার রেখেদিয়ে শুধু রাইফেল দিয়ে শহরের অনতিদূরে পাওয়ার হাউস পাহারায় পাঠানো হয়। ১৭ মার্চ অয়ারলেস সেট ও ভারী হাতিয়ারগুলি ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার থেকে ব্রিগেড হেডকোয়ার্টারের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা হয়।

 

আামি কোয়ার্টার মাস্টারের দায়িত্বে থাকায় ব্যাটালিয়ন হেড কোয়ার্টারের কাছে নিয়োজিত ছিলাম। সেই সময় দেশের পরিস্থিতি খুবই ভয়ংকর ছিল। ২৪শে মার্চ আমাকে এবং আমাদের ব্যাটালিয়নের সুবেদার মেজর হারি কে ব্রিগেডিয়ারের অফিসে ডাকা হয়। ব্রিগেডিয়ার আমাকে ও সুবেদার মেজর সাহেবকে বাইরের গুজব না শুনে শৃংখলার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন, কিন্তু আমাদের ২য় অধিনায়ক মেজর আক্তারের সাথে রূদ্ধদ্বার কক্ষে বহু সময় আলাপ আলোচনা করেন। এতে আমাদের মনে আরো সন্দেহের ভাব উদয় হল।

 

২৮শে মার্চ মগুলপাড়া থেকে ক্যাপ্টেন আশরাফ অফিসে এসে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়। তখন ২৩ ফিল্ড রেজিমেন্টের একজন বাঙালি অফিসার লেঃ সালামকেও ডাকা হয়। আমরা তিনজন রূদ্ধদ্বার কক্ষে ভবিষ্যতে কি কর্মপন্থা অবলম্বন করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করি। সৈয়দপুর সেনানিবাসে অপর যে দুইটি ব্যাটালিয়ন ছিল তাদের ৩১শে মার্চ রাতে বগুড়ায় চলে যাবার কথা ছিল। আমরা অই সময় সৈয়দপুর সেনানিবাস দখল করার সিদ্ধান্ত নেই। সেই অনুযায়ী ক্যাপ্টেন আশরাফ কে এক ট্রাক গোলাবারুদ মগুলপাড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য দিয়ে দেই।

 

৩১শে মার্চ রাত্রি আড়াই ঘটিকার সময় ২৬এফ-এফ ব্যাটালিয়ন ও ২৩ ফিল্ড রেজিমেন্ট গোলন্দাজ বাহিনী আমাদের ব্যারাকের উপরে অতর্কিত হামলা চালায়। কিন্তু আমরা সতর্ক থাকায় সকাল ১০টা পর্যন্ত উভয় পক্ষে গুলি বিনিময় হয়, এবং তারা আমাদের ব্যারাকে প্রবেশ করতে ব্যার্থ হয়। পাক বাহিনী মাইক দ্বারা প্রচার করতে থাকে যে, তোমরা আত্মসমর্পণ করো, তোমাদের কে কিছু করা হবে না। সেই সময় আমাদের অবস্থানের চারিপাশ তারা ঘিরে ফেলতে চেষ্টা করে। আমরা তখন বাধ্য হয়ে সেনানিবস ছেড়ে ফুলবাড়ী নামক স্থানে ডিফেন্স নেই। সাথে সাথে আমাদের বাইরে অবস্থানরত সকল কোম্পানী কে এই ঘটনা অবগত করি।

 

১লা এপ্রিল সুবেদার রহমতুল্লাহ তার অবাঙালি মেজর সাফায়েৎ হোসেনকে হত্যা করে এবং সমস্ত জোয়ান নিয়ে ফুলবাড়ীতে চলে আসে।

 

৩রা এপ্রিল ঘোড়াঘাটে অবস্থানরত বিওডি কোম্পানী ফুলবাড়ী এসে পৌছে। সেই সময় আমাদের মোট শক্তি ছিল ৪৫০ জনের মত। ৪/৫ তারিখে ব্যাটালিয়নকে পুনর্গঠন করা হয় ও তিনটী কোম্পানীতে ভাগ করা হয়।

 

ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক নিযুক্ত করা হয় মেজর নিজাম সাহেব কে। ১টি কোম্পানীর দায়িত্ব দেয়া হয় ক্যাপ্টেন আশরাফকে। লেঃ মোখলেস কে দেওয়া হয় ১টি কোম্পানীর দায়িত্ব। অপর কোম্পানীর দায়িত্ব ন্যস্ত হয় আমার উপরে। ক্যাপ্টেন আশরাফ তার কোম্পানী নিয়ে দিনাজপুরের পথ দিয়ে সৈয়দপুর আসবে বলে স্থির হয়। সৈয়দপুর থেকে তিন মাইল দূরে ৮ই এপ্রিল তার কোম্পানীর সাথে পাকবাহিনীর ভয়াবহ যুদ্ধ বাধে। এখানে পাকবাহিনীর তিনটি গাড়ি সহ বহু পাকসেনা হতাহত হয়। লেঃ মোখলেস তার কোম্পানী নিয়ে নিলফামারী হয়ে সৈয়দপুর আসবে ঠিক হয়। আমার কোম্পানী এবং হেডকোয়ার্টার কোম্পানী নিয়ে আমি ফুলবাড়ী থেকে খোলাহাটিতে শিবির স্থাপন করি।

 

৭ই এপ্রিল সুবেদার রহমতউল্লাহ ১ টি প্লাটুন নিয়ে পার্বতীপুর চলে যায়। আমি সেইদিনই আমার কোম্পানী নিয়ে বদরগঞ্জ ডিফেন্স করি।

 

৯ই এপ্রিল পাকবাহিনী বদরগঞ্জে আমাদের ডিফেন্সের উপরে হামলা করে। এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর পক্ষে ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহ খান মালেক যুদ্ধ পরিচালনা করেন। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। শেষে পাকবাহিনীর তীব্র আক্রমনের মুখে টিকতে না পেরে আমাদের জওয়ানেরা পিছু হটতে শুরু করে। এই সময় আমি এক ডিফেন্স থেকে অন্য ডিফেন্সে যাওয়ার সময় বদরগঞ্জ বাজারে পাক বাহিনীর ঘেরাও এ পড়ে যাই। তখন তারা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে আমাদের ড্রাইভার মারা যায়। আমি গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে অন্য দিকে বদরগঞ্জ বাজারের ভিতরে ঢুকে পড়ি। সেখান থেকে বহু কষ্টে বের হয়ে বদরগঞ্জ রেলস্টেশন হয়ে আড়াই মাইল গ্রামের ভেতরে চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমাদের জোয়ানদের দেখতে পাই। তখন আমার শরীর রক্তাক্ত ছিল ও পায়ে গুলিবিদ্ধ ছিল। সেখান থেকে আমাকে ফুলহাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে আমাদের কোম্পানী খোলাহাটিতে চলে যায়।

 

১০ই এপ্রিল সকালে পাকবাহিনী খোলাহাটি আক্রমণ করে। সেখানে পাকবাহিনীর সাথে আমার কোম্পানী টিকতে না পেরে ফুলবাড়ী তে চলে যায়। এদিকে ক্যাপ্টেন আশরাফ ও লেঃ মোখলেসের কোম্পানী ও ফুলবাড়ীতে চলে আসে।

 

১১ই এপ্রিল পাকবাহিনী ফুলবাড়ি আক্রমণ করে। ফুলবাড়ীতে পাকবাহিনীর সাথে আমাদের ব্যাটালিয়নের ভীষন যুদ্ধ হয়। কিন্তু পাকবাহিনীর তীব্র আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে আমাদের পুরো ব্যাটালিয়ন চরখাইয়ে চলে যায়। চরখাইয়ে ডিফেন্স করে কোম্পানী গুলো কে নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ পথে ডিফেন্স বসানো হয় যেন পাকবাহিনী চরখাই আক্রমণ না করতে পারে।

১। ক্যাপ্টেন আশরাফের কোম্পানীকে ফুলবাড়ী-চরখাই রোডে বসানো হয়।

২। আমি আমার কোম্পানী নিয়ে ঘোড়াঘাট-চরখাই রোডে ডিফেন্স নেই।

৩। লেঃ মোখলেসের কোম্পানীকে ডেপথ কোম্পানী হিসেবে রাখা হয়।

 

১৩ই এপ্রিল সংবাদ পাওয়া গেল পাকবাহিনী বগুড়া দখল করে নিয়েছে। তাই পাকবাহিনী বগুরা জয়পুরহাট ও পাঁচবিবি রোড হয়ে হিলি দখল করে নিতে পারে ভেবে ১৪ই এপ্রিল আমি আমার কোম্পানী নিয়ে পাঁচবিবি- হিলি রোডে ডিফেন্স নেই। অপর দুই কোম্পানী চরখাইতেই ডিফেন্স নিয়ে থাকে।

 

১৯শে এপ্রিল পাকবাহিনী পাঁচবিবির দিক থেকে হিলি আক্রমণ করে। সেইদিন পাকবাহিনীর সাথে আমাদের চার ঘন্টা যুদ্ধ চলে এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেক সৈন্য নিহত হয় ও আমাদের তীব্র আক্রমণের মুখে তারা পিছু হটোতে বাধ্য হয়। সেই দিন চরখাই থেকে ২ কোম্পানী কে হিলি চলে আসার নির্দেশ দেই। সেই সময় ক্যাপ্টেন আশরাফ ও লেঃ মোখলেস তাদের জোয়ানদের ফেলে চলে যায়।

 

২০শে এপ্রিল সুবেদার হাফিজ, নায়েক সুবেদার করম আলী, নায়েক সুবেদার শহীদুল্লাহ দুই কোম্পানী সহ হিলি তে আমার নিকট পৌছে। সেইদিন খুব ভোরে পাকবাহিনী আমাদের উপরে আক্রমণ করে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাকবাহিনীর সাথে আমাদের তীব্র যুদ্ধ চলে। অবশেষে পাকবাহিনী পিছন হটোতে বাধ্য হয়। এদিকে পাকবাহিনীর মর্টার ও শেলিং এ ভারতিয় সীমান্তের কয়েকজন ভারতিয় নাগরিক নিহত হয়। ফলে, ভারতীয় বি-এস-এফ কর্নেল মুখার্জী, পশ্চিম দিনাজপুরের ডি-এম ও পুলিশ সুপারের অনুরোধে ২০ তারিখ গভীর রাতে আমাদের ডিফেন্স ভেঙ্গে দিয়ে হিলি থেকে ১৩ মাইল দূরে ভারতের কামাল্পাড়া নামক স্থানে কুরমাইল বেসিক ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে ২৫০ জনের মত জে,সি,ও, ও জোয়ান আশ্রয় নিই। এই যুদ্ধে ৬ জন জোয়ান শাহাদত বরণ করে। সীমান্ত অতিক্রম করার পূর্বে চরখাই ও হিলি সরকারী গুদাম থেকে চারশত বস্তা চাউল নিয়ে যাই। ২১শে এপ্রিল পাকবাহিনী হিলি দখল করে নেয়।

 

ভারতে অবস্থানকালে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে কামারপাড়া, সোবরা ও আঙ্গিনাবাদে তিনটি অপারেশন ক্যাম্প স্থাপন করি। সুবেদার হাফিজ কে আঙ্গিনাবাদ ক্যাম্প কমান্ডার, সুবেদার আলী নেওয়াজ কে কামাড়পাড়া ক্যাম্প ও জয়পুরহাট চিনি মিলের একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে সোবরার ক্যাম্প কমান্ডার হিসাবে নিযুক্ত করে আমি উক্ত তিনটি শিবির পরিচালনা করি।

 

সেই সময় বাংলাদেশের কমান্ডার ইন চীফ কর্নেল এম, এ, জি , ওসমানী বালুরঘাট আসেন এবং আমাকে হিলি সেক্টর কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন। ১৩ই মে পর্যন্ত আমি হিলি সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করি। আমি সেক্টর কমান্ডার থাকাকালে আরো তিনটি ক্যাম্প স্থাপন করি- মালন ক্যাম্প, তরঙ্গপুর ক্যাম্প ও তপন ক্যাম্প। মেজর নাজমুল আমার নিকট থেকে দায়িত্বভার বুঝে নেন এবং তৎকালীন মেজর বর্তমান কর্নেল শাফায়েত জামিল ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। আমি আঙ্গিনাবাদ ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি।

 

(-উপরে হলুদ মার্ক করা অংশটুকু নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। কারণ মেজর শাফায়েত জামিল ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে কুমিল্লা অঞ্চলে ছিলেন)

 

এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত গেরিলা পদ্ধতি গ্রহণ করা হয় ও পাকবাহিনীর চলাচলের পথে এম্বুশ করে পাকবাহিনী কে নাজেহাল ও তাদের ক্ষতি সাধন করা হয়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশন অপারেশন করে পাকবাহিনীকে সেখান থেকে প্রতিহত করে ২ ট্রাক ঔষধ, ৬০ বস্তা চিনি ও কিছু কাপড় নিয়ে আসা হয়।

 

২৯শে মে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এক কোম্পানী বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিয়ার এর জোয়ান নিয়ে হরতকিডাঙ্গা নামক স্থানে পাকবাহিনীর উপরে এম্বুশ করি। সেই সময় পাকবাহীনির এক কনভয় উক্ত পথ দিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকবাহিনীর একজন অফিসার সহ আনুমানিক ৩০ জন নিহত হয় ও একটি জীপ ধ্বংস হয়। আমাদের পক্ষের ইপিআর এ জলিল শাহাদৎ বরণ করেন। সেখানে একটি পিআরসি-১০ অয়ারলেস সেট ও একটি এস-এম-জি উদ্ধার করি।

 

২৮শে মে দিনাজপুর-ফুলবাড়ী রোডে মোহনপুর ব্রীজ এক্সপ্লোসিভ দ্বারা উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সেখানেই এম্বুশ বসানো হয়। ২৯শে মে ১০ঃ১০ মিনিটে পাকবাহিনীর এক কোম্পানী ঐ পথে অগ্রসর হবার সময় আমরা অতর্কিত আক্রমণ করি। সেখানে পাকবাহিনীর সাথে আমাদের চারঘন্টা গুলি বিনিময় হয়। এখানে পাকবাহিনীর ১১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। আমাদের পক্ষের ২ জন শহীদ ও একজন আহত হয়। এছাড়া জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রামগতি, ফুলবাড়ী, চরখাই, রামনগর, জলপাইতলী, বাজাই, আমবাড়ী, গৌরীপুর, মন্মথপুর রেলওয়ে স্টেশনে রেইড, কমান্ডো ও এম্বুশ করে পাকবাহিনীর বহু ক্ষতি সাধন করি।

 

Scroll to Top