২৭৭. ১৭ ডিসেম্বর মুক্তাঞ্চলে অসামরিক প্রশাসনে সরকারী নির্দেশ

শিহাব শারার মুকিত

 <৬,২৭৭,৪৭৫>

শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ
মুক্তাঞ্চলে অসামরিক প্রশাসনে সরকারী নির্দেশ অভিযান

১ম বর্ষঃ ৪র্থ সংখ্যা

১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১

 

 মুক্তাঞ্চলে অসামরিক প্রশাসনে সরকারী নির্দেশ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ তার সহকর্মীদের সাথে মুক্তাঞ্চলে সুষ্ঠু অসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য ক্রমাগত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। মুক্তাঞ্চলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় জিনিস সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ভারত সরকার সাহায্য করবেন।

বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনে সহায়তা করার জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে কিছু সরকারী কর্মচারী বাংলাদেশ সরকার পাবার আশ্বাস পেয়েছিল। বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে এরা বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজ নিয়ে যাবেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তারা পুনরায় ভারতে চলে আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ মন্ত্রী পরিষদ, মুক্ত অঞ্চলের প্রয়োজনীয়তার সামগ্রিক পরিচয় না পাওয়াতে সঠিক পন্থা গ্রহণ করতে সমর্থ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে গণপ্রতিনিধিদের নিয়ে যে জোনাল কাউন্সিল গঠিত হয়েছে তাদের কাছ থেকে এগুলি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ সমস্ত খবর সরাসরি পৌছাতে বিলম্ব হচ্ছে; কারণ মুক্তাঞ্চলগুলি প্রায়ই যোগাযোগ ছিন্ন।

মুক্তাঞ্চলে অগ্রাধিকারভুক্ত প্রশাসনিক বিষয়গুলো নিয়ে সরকার ইতিপূর্বেই কর্মপন্থা গ্রহণ করেছেন। এগুলোর উল্লেখযোগ্য হলঃ

১।  আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা।

২। পাকসৈন্য ও রাজাকার বাহিনী যে সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র ফেলে গেছে সেগুলো উদ্ধার করা।

৩। ছিন্নমূল জনসাধারণকে পুনর্বাসন করানো।

৪। পূর্ণ সরকারী প্রশাসন ও গঠনমূলক তৎপরতা চালানো।

বাংলাদেশ সরকার চালানোর জন্য সে পরিমান অভিজ্ঞ অফিসারের প্রয়োজন তার অভাব বোধ করছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার সমস্ত সরকারী অফিসারদের যেখানে তারা অবস্থান করছেন, যেভাবে তাদের পক্ষে সম্ভব সেভাবে তারা যেন কাজে যোগ দেন।

যারা এখনও বিচ্ছিন্ন এবং আত্মগোপন করে আছেন তাদের কাছে এ নির্দেশ আশাব্যঞ্জক হবে। এ ছাড়াও সরকার তথ্যানুসন্ধান কমিটি নিয়োগ করেছেন। এ কমিটি লক্ষ্য রাখবেন কোন কোন অফিসার শত্রুদের হয়ে কাজ করছেন।

স্বাভাবিকভাবেই পূর্ণ সরকারী ব্যবস্থাকে কার্যকর করার জন্য মুক্তিবাহিনীর সাহায্য অতি প্রয়োজন। সঠিক মালিককে সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে মুক্তিবাহিনীকে সরকারকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে। যে লোক নিজের সম্পত্তি থেকে অবৈধভাবে দখলীকৃত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেবে না তাদের শাস্তি দেয়া হবে।

পুনর্গঠনের ব্যাপারে পরিকল্পনা পরিষদ যে ব্লু-প্রিন্ট পেশ করেছে সরকার তা অনুমোদন করেছেন বলেও মুজিবনগর থেকে খবর পাওয়া গিয়েছে।

Scroll to Top