পাকিস্তানের নামে (সম্পাদকীয়)

শিরোনামঃ সূত্রঃ তারিখঃ
১০। পাকিস্তানের নামে (সম্পাদকীয়) নিউইয়র্ক টাইমস ৩১ মার্চ, ১৯৭১

 

Nobel Himura

অনুবাদঃ মোঃ রাশেদ হাসান

<১৪,১০,২২>

 

 

নিউইয়র্ক টাইমস, মার্চ ৩১, ১৯৭১

সম্পাদকীয়

ইন দ্যা নেম ওফ পাকিস্তান

 

ইয়াহিয়া খানের সামরিক সরকারের মিলিটারি ফোর্স যারা কিনা ‘সৃষ্টিকর্তার নামে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের নামের’ দোহায় দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে তারা পূর্ব পাকিস্তানীদের উপর নির্মন ক্র্যাকডাউনের মাধ্যমে উপরুক্ত এই দুটি বিষয়কে অসম্মান করেছে।

 

পাকিস্তানী ক্রাকডাউনের সময় সেখানে উপস্থিত কূটনীতিক এবং সংবাদকর্মিদের রিপোর্টে দৃশ্যত নিরস্ত্র মানুষের উপর মিলিটারির এমন ভয়াবহ আক্রমণের ফলে কোন ঐক্যের ছবি পাওয়া যায়নি এবং এই ঘটনার কোন যৌক্তিক অর্থ বা ভবিষ্যৎ থাকতে পারেনা। পশ্চিমা বাহিনীর তাদের ‘মুসলমান ভাইদের’ প্রতি এই নির্মমতা- পূর্বের যারা দাবী করেন যে পশ্চিম এবং পূর্বের মাঝের ভিন্নতা সমাধের অযোগ্য, তাদের সেই দাবীকেই সত্য প্রমাণ করে।

 

যদিও এটা একটা অভ্যন্তরীণ কোন্দল তবুও এটা আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে- বিষেশ ভাবে যদি দির্ঘমেয়াদে গেরীলা যুদ্ধ চলতে থাকে। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক কমিউনিটি একটাই কাজ করতে পারে আর তা হল, ইয়াহিয়া খানকে ডেকে মানবতা এবং শুভ বুদ্ধির দোহায় দিয়ে এই রক্তপাত বন্ধ করে শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর জনগণের নির্বাচিত নেতা হিসেবে প্রাপ্ত ন্যায্য ভূমিকা ফিরিয়ে দিতে। 

 

আমেরিকা, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অস্ত্র এবং প্রশিক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের এখন বিশেষ দায়িত্ব হবে ইয়াহিয়া সরকারের প্রতি যেকোন রকমের সামরিক সাহায্য বন্ধ করা। অর্থনৈতিক সাহায্য শুধু এই শর্তে চলমান রাখা যেতে পারে যে এর বেশীরভাগ অংশ পূর্বপাকিস্তানের দুঃখজনক ক্ষত উপশমে ব্যাবহার হবে।

 

পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, রেডিও পাকিস্তানের এমন দাবির ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে এটি (রেডিও পাকিস্তানের ) একটি সরকারী মুখপাত্র ছাড়া আর কিছু নয়। সত্যি বলতে বিদেশী সংবাদকর্মিদের ঢাকা থেকে বিতাড়নের পর বর্তমান পরিস্থিতি জানার জন্য সেখানে এখন আর কোন বিশ্বাসযোগ্য সূত্র নেই। সরকারী মাধ্যম গুলো সেটাই বলছে যা তাদের বলতে বলা হচ্ছে। বিদ্রোহী একটি রেডিও ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য স্থানে যুদ্ধ চলছে বলে খবর প্রচার করছে কিন্তু এই সূত্রের দায়িত্বশীলতা এখনও প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। ভারত হতে প্রাপ্ত বেশীরভাগ তথ্যই গুজবের মত।

 

তবে এখন একটা বিষয় পরিষ্কার- বিতাড়িত হবার আগে গত সপ্তাহের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে বিদেশী রিপোর্টারদের অব্জারভেশন থেকে যে চিত্র পাওয়া যায় তার সাথে সরকার প্রচারিত চিত্র একেবারেই মিলেনা। সেনাবাহিনী যাদের পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনী বলা চলে, এরা কোন বিদ্রোহ প্রতিহত করতে কাজ করেনি। এরা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করতে আক্রমণ চালিয়েছে।

Scroll to Top