পাকিস্তান দূতাবাসের বাঙ্গালী কর্মচারীর কলকাতা গমন সক্রান্ত চিঠি

<৪,১৭৬,৩৫২-৩৫৩>

অনুবাদকঃ সজীব কুমার সাহা, জেসিকা গুলশান তোড়া

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৭৬। পাকিস্তান দূতাবাসের বাঙ্গালী কর্মচারীর কলকাতা গমন সক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ সরকার ২৬শে মে এবং ১ জুন ,১৯৭১

 

 

IPEC জাকার্তার জনাব সানাউল্লাহর লিখিত চিঠির সারাংশ

 

১. জনার সানাউল্লাহ M/o Finance এর একজন অভিঞ্জ বাঙ্গালি শ্রুতিলেখক , ১৯৬৭ সাল থেকে জাকার্তায় IPEC এর প্রতিনিধিত্ব করছে । তার জীবন বৃত্তান্ত সংযুক্ত করা হল ।

২.সে মনে করে যে, যহেতু তিনি বাঙ্গালী এবং আমাদের ব্যাপারে সহানুভূতিশীল , তাকে পশ্চিম পাকিস্তানে স্থানান্তর করা হবে যদিও যারা IPEC তে তার পরে যোগদান করেছেন , এবং এটা অব্যাহত আছে ।

৩. তিনি ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেঙ্কিন্তু এটি ২৫শে মার্চ তারিখে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে । যদি তিনি অতিসত্বর HQrs এ যোগদান না করেন তবে তার ভয়ানক পরিনতী হবে বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে । তাকে গুপ্ত হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে যে তাকে ফিরে যাওয়ার জন্য আইন মন্ত্রনালয়ের কতৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হবে ।

৪. সে তার ভাড়া প্রদান করছে কিন্তু সে ২ মাস ধরে তার বেতন পাচ্ছে না ।

৫. তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য প্রাক্তন মন্ত্রীসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তির সরনাপন্ন হয়েছিলেন । কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার প্রত্যাশা ক্ষীন । যাই হোক না কেন , তাকে বলা হয়েছে যে , তিনি জাকার্তায় থাকতে পারেন । তিনি জানতে চেয়েছেন যে , যদি পাকিস্তান সরকার জোর করে তাকে বিতাড়িত করতে চায় , তাহলে ইন্দোনেশিয়া সরকারের পদক্ষেপ কি হবে ?  তাকে বলা হয়েছে যে , পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি সন্মানের সহিত একটি শ্রেণীগত নিশ্চয়তা পেতে ব্যার্থ হয়েছেন । তা সত্বেও তিনি জাকার্তায় থাকবেন।

৬. তার লিখিত ৫ পৃষ্ঠার পত্রের প্রথমাংশে , তিনি বাঙ্গালিদের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য পশ্চিমাদের দারা সংঘটিত অবিচারের বিশদ  বিবরন দিয়েছেন । তিনি জাকার্তায় বাঙ্গালিদের বিপরীত আনুগত্যেরও বিবরণ দিয়েছেন ।

তার মতে , সেখানে ২২ জন কর্মচারীর মাঝে ৯ জন বাঙ্গালী কর্মচারী রয়েছে । তার বর্ণনা অনুযায়ী ২-১ জন বাঙ্গালী ছাড়া  সকলের নিজেদের প্রকাশ্যে চিহ্নিত করতে অনিচ্ছুক ।

৮. তিনি জানতে চান এখন তিনি কি করবেন এবং বাংলাদেশ সরকার তাকে কীভাবে সহায়তা করবে । তিনি আশংকা করছে নিকট ভবিষ্যতে অন্যান্য বাঙ্গালীরাও একই সমস্যার সন্মূখীন হবেন যা তিনি এখন সন্মুখীন হচ্ছেন ।

 

৯. তিনি ন্যায় প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিয়ে তার পত্র শেষ করেছেন এবং আমাদের সকলকে স্রষ্টার উপর বিশ্বাষ রাখতে বলেছেন ।

 

S d/-

PA to HOM

26.5.71

জনাব সানাউল্লাহ সাহেব,

       আপনার ১৩ই মে তারিখের জনাব হোসেন আলী সাহেবের কাছে লিখিত পত্র পেলাম। ওখানে আপনার কাজের জন্য তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আপনার এখানে আসার বিষয়ে সকল দিক বিবেচনা করে জানানো হচ্ছে যে, একজন স্টেনোগ্রাফারের পক্ষে এখানে কর্মের ব্যবস্থা করা হয়ত খুব কঠিন হবেনা। বাংলাদেশ সরকার আপনার কর্মব্যবস্থা করে দিতে পারবেন বলে আশা করা যায়। তবে প্রশ্ন হলো বাসস্থানের। বাসস্থানের সমস্যা একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা এবং কলকাতা তার কোন ব্যতিক্রম নয়। তদপুরি বাংলাদেশ থেকে লোক চলে আসায় সমস্যা আরও তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে। আপনাকে নিজ চেষ্টায় বাসস্থানের সন্ধান করে নিতে হতে পারে। এ সমস্ত বিবেচনা করে যদি আপনি এখানে চলে আসা মনস্থ করেন,তখন আমাদেরকে জানাবেন। যতদিন ওখানে থেকে বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে পারেন তার চেষ্টা করবেন এবং যদি নিতান্তই আপনাকে এখানে আসতে হয় তাহলে টি-এ ও ডি-এ নিয়ে নেবেন। একথা জানিয়েছেন মিঃ হোসেন আলী সাহেব।

 

       পৃথকভাবে আপনাকে আমাদের রিলিজ, পুস্তিকা ইত্যাদি পাঠানো হলো।

 

শুভেচ্ছান্তে-

(এম. মকসুদ আলী)

Scroll to Top