পাকিস্তান ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে

অনুবাদঃ রাইসা সাবিলা

<৭,৫,২২-২৩> ৫০১৭-৫০১৮

শিরোনাম সূত্র তারিখ
৫। পাকিস্তান ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ করেছে পাকিস্তান অবজার্ভার
উদ্ধৃতিঃ ডন
২ এপ্রিল, ১৯৭১

 

পাকিস্তান ভারতের কাছে তীব্র প্রতিবাদ করেছে

 

        ৩০ মার্চ, ইসলামাবাদঃ আজ পাকিস্তানি সরকার দেশটির অন্তর্বর্তী বিষয়ে বারবার ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের নিকট তীব্র প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে। এই নিয়ে এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মত প্রতিবাদ জ্ঞাপন করল পাকিস্তান সরকার এ মর্মে যে, এই হস্তক্ষেপকে একটি বিপদজনক নজির হিসেবে গন্য করা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।

 

        ইসলামাবাদে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনারকে আজ সকালে আবার পররাষ্ট্র কার্যালয়ে তলব করে জানানো হয় যে ভারত সরকার এবং তাদের প্রচার সংস্থা গুলো পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতা স্বত্বেও ক্রমাগত পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা সম্পর্কে বিদ্বেষপরায়ণ এবং ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করে যাচ্ছে, এবং তাদের এহেন আচরন পাকিস্তান সরকার বিরক্ত ও বিব্রত হচ্ছে।

এপিপি এর এই রিপোর্টে আরও বলা হয়ঃ এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত উদাহরণ উদ্ধৃত করা হয়েছে :

১। পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কথিত বোমা বর্ষণ।

২। এক লক্ষ মানুষ হত্যা।

৩। জেনারেল টিক্কা খান গুলিতে নিহত হয়েছেন।

৪। শেখ মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়নি।

৫। বেলুচিস্তান ও এনডাব্লিউএফপি এর একতরফা স্বাধীনতার ঘোষণা।          

ভারতীয় সংসদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিও হাই কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানানো হয় যে তাদের দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নীতি ভঙ্গ করে এবং এধরনের বক্তব্য পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী বিষয়ে চরম হস্তক্ষেপের সামিল।

ভারতের দুতকে জোরালভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয় যে এধরনের আচরন খুবি বিশ্ময়কর। সরদার স্মরন সিং বলেছেন, ভারতীয় সরকার আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সদস্য বা মানবাধিকার সংস্থাগুলিকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহন করেছে যেন তারা এই সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রান সরবরাহ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধিও সংসদে বলেছেন যে- “ভারত সমসাময়িক সিধান্ত নিবে, কেননা সময়ের পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন লাভ নেই”। তার এ বক্তব্য উল্লেখ করে জানানো হয় যে এধরনের বক্তব্য অত্যন্ত বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

ভারতীয় হাই কমিশনারকে আরো জানানো হয়, যে রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দীপনা ও উৎসাহেই তাদের সংবাদ মাধ্যম কোলকাতা থেকে সশস্ত্র সেচ্ছাসেবীদের পূর্ব পাকিস্তানের তথাকথিত মুক্তিবাহিনিকে সাহায্য করার জন্য পাঠানো অথবা নৌবাহিনী দ্বারা অবরোধ সৃষ্টি করে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে সাগর পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবার মত চমৎকার সব পরামর্শ প্রতিনিয়ত প্রদান করে চলছে।

উপরন্তু, ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দল নয়াদিল্লী, কোলকাতা এবং বোম্বেতে অবস্থিত পাকিস্তানি দুতাবাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আয়োজন করছে এবং সেখান থেকে পাকিস্তানি সরকার ও নেতাদের বিরুদ্ধে চরম মর্যাদাহানিকর স্লোগান দাওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে একি ধরনের ঘটনা পাকিস্তানেও ঘটতে পারে।

হাই কমিশনারকে আরো জানানো হয় যে হুগলি নদীমুখে কিছু চোরাগোপ্তা প্রেরকযন্ত্রের কার্যক্রম ধরা পড়েছে, যা হতে পুরো বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার জন্য সম্পূর্ণ মিথ্যা রিপোর্ট প্রেরিত হচ্ছে।

পাকিস্তানি সরকার আশা প্রকাশ করে যে ভারতীয় সরকার এধরনের আচরন সংবরন করবে এবং প্রতিবেশি দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত সকল নিয়ম মেনে চলবে।

-ডন।

Scroll to Top