বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন দান এবং পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও অত্যাচার বন্ধের জন্য প্রভাব খাটানোর আবেদন জানিয়ে গণচীনের চেয়ারম্যানের প্রতি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি

<৪,২৫,৪৫> 

অনুবাদকঃ মুশাররাত আলম মৌ

শিরোনাম সূত্র তারিখ
২৫। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থনদান এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও অত্যাচার বন্ধের জন্য প্রভাব খাটানোর আবেদন জানিয়ে গণচীনের চেয়ারম্যানের প্রতি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি এপ্রিল, ১৯৭১

 

                                                                               ৫৮ বেরুইক স্ট্রিট                                                                           লন্ডন ডব্লিউ টি                                                                  টেলিফোনঃ ৪৩৭ ৭১১১

চেয়ারম্যান

গণপ্রজাতন্ত্রী চিন

চার্জ দ্য’অ্যাফেয়ার এর মাধ্যমে

৪৯ পোর্টল্যান্ড প্লেস, লন্ডন ডব্লিউ ১

মাননীয়,

সাড়ে সাত কোটি বাঙালি তাদের আত্মমর্যাদার অধিকার চর্চার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ এক সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে।

আপনি হয়ত জেনে থাকবেন যে, এই গণহত্যা বাঙালিদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পুর্বপরিকল্পিত সুচতুর এক ধ্বংসযজ্ঞ। আপনি জানেন যে, বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের পুঁজিবাদী চক্র কর্তৃক অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হয়ে আসছে। বাংলাদেশ সম্পর্কিত অর্থনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে পাকিস্তান সাম্রাজ্যবাদী উপাদানের প্রকাশ ঘটিয়েছে। গত বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদ নতুন ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে  অন্তর্বর্তী-গৌণ সহকর্মীদের আমন্ত্রনের মাধ্যমে, যাতে এটি শোষণের নতুন নতুন পন্থা সৃষ্টি করতে পারে। একটি সুচিন্তিত নীতি হিসেবে, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির একটি সঙ্গতিপুর্ণ অংশ এসমস্ত গৌণ সহকর্মীদের কাছে রপ্তানি করে শুধুমাত্র তাদের পরিচিত সাম্রাজ্যবাদী খেলার ছদ্মবেশে আমন্ত্রণের মাধ্যমে পুনঃরপ্তানিকৃত হতে পারে। একই নীতির অংশ হিসেবে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব এদের বাংলাদেশের প্রতি বরাদ্দকৃত পুঁজি শোষণের পরিবর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি পুঁজিবাদীদের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব পুঁজিবাদী কাঠামোর অভ্যন্তরে অন্তর্বর্তী সত্ত্বা হিসেবে কাজ করার এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রশিক্ষণের পুর্বে পুঁজিবাদী ভূমিকা হস্তগত করার।

যদিও বাংলাদেশের বর্তমান সংগ্রাম ভোটবাক্স আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়েছিল, বর্তমানে যেটি জনগণের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। মুক্তির সংগ্রাম ইতোমধ্যে গ্রামের দিকগুলোতেও শুরু হয়ে গিয়েছে এবং প্রথম শ্রেণীর গেরিলা কলাকৌশল অবলম্বনের চিহ্ন প্রদর্শন করছে।

বিশ্বব্যাপী চায়নার জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সংহতি প্রদর্শন করেছে। আপনারা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাস্ক জাতীয়তাবাদী সংগ্রামকে সমর্থন দিয়েছেন। কোরিয়ান যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা এবং ঐতিহাসিক আত্মত্যাগ আজ ও আগামীর মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে সদা জাগ্রত থাকবে।

আমরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করার আবেদন জানাই। আমরা আপনাদের নিকট আবেদন জানাই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য, যাতে অবিলম্বে এই গণহত্যার সমাপ্তি ঘটে, যেটি এখনও পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানি পুঁজিবাদী গোষ্ঠীর ভাড়াটে সৈন্যরা চালিয়ে যাচ্ছে।

                                                                        যুক্তরাজ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পক্ষে                                                                             এ্যাকশন কমিটি, লন্ডন।

Scroll to Top