শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
৪। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সদর দপ্তর প্রকাশিত যুদ্ধ ইস্তেহার | বাংলাদেশ আর্কাইভস, মুজিবনগর | আগস্ট-ডিসেম্বর, ১৯৭১ |
ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash
<১১, ৪, ৫০-১৭৪>
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগে
আগস্ট ১৫, ১৯৭১
১। পাক বাহিনী, রাজাকার এবং তাদের বেসামরিক এজেন্টদের উপর মুক্তিবাহিনীর তীব্রতর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ এলাকার মধ্যে তাদের প্রচারণা-সেতু, টেলিফোন লাইন, পাওয়ার সাপ্লাই ধ্বংস, রেল লাইনের অপসারণ, পাকবাহিনীর যোগাযোগ ব্যাহত করার কাজ সারা বছর চলছে।
২। ১৪ আগস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায় যে বিভিন্ন সেক্টরে ৩১৪ পাকসৈন্য নিহত ও ৭৩ জন আহত হয়েছে মুক্তিবাহিনীর একশনে। মুক্তিবাহিনী ৫০ জন রাজাকার নিহত ও ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। কমপক্ষে ১৩ জনসহযোগিতাকারিও নিহত হয়। তারা ৪২ রকম বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দখল করে। পাক বাহিনী দ্বারা ব্যবহৃত ৫ টি গাড়ি তারা ধ্বংস করে। এছাড়া তারা ৫টি সড়ক সেতু, ৫টি রেল সেতু, ৫টি বৈদ্যুতিক পাইলন এবং ৫ স্থানে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, অপসারিত রেললাইন ধ্বংস এবং অধিকৃত এলাকার ৫ জায়গায় টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে। তারা সিলেট জেলার দিরাই এলাকার কাছাকাছি ২১ জনের একটি ডাকাত দলকে হানা দেয় এবং তাদের সবাইকে হত্যা করে। তারা ১ টি এলএমজি, ৮ টি রাইফেল, ২১ টি শট বন্দুক, ৪ টি গ্রেনেড ও গোলাবারুদের একটি বৃহৎ পরিমাণ জব্দ করে। স্থানীয় মানুষ তাদের কার্যক্রমে নিশ্চিন্ত ও নির্ভার ছিল। ঢাকা শহরের মধ্যে তারা একটি চেকপোস্ট করে এবং ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি জিপ মাইনে ধ্বংস করে।
আরও বিস্তারিত বর্ণনা নিচে দেওয়া হল:-
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
৮ আগস্ট মুক্তিবাহিনী বাদলগাছিতে তিনটি বিদ্যুৎ পাইলন ধ্বংস করে।
পত্নীতলা-মহাদেবপুরে এক পাক গাড়ির মাইন বিস্ফোরণের ছয় পাকসৈন্য নিহত ও তিন জন আহত হয়। বগুড়া এলাকায় ১১ জুলাই থেকে ১৮ আগস্ট এর মধ্যে গেরিলা হামলা চালায়।
তারা বগুড়া ও গাবতলীর মধ্যে রেলসেতু ক্ষতিগ্রস্থ করে। তারা শীকরকান্দি পুলিশ স্টেশনে আক্রমণ করে এক অফিসার এবং ৪ রক্ষির প্রাণনাশ করে। দুই সেনা ট্রাক মাইনে বিস্ফোরিত হয়। বগুড়া-রংপুর রোডে আলিতলায় তারা হ্যান্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ করে পেট্রোল পাম্প ধ্বংস করে। সোনাতলায় মাইনে একটি মাল ভর্তি ওয়াগন বিস্ফোরিত হয়।
২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই এর মধ্যে মুক্তিবাহিনী বগুড়ায় অনেক গেরিলা আক্রমণ করে। বগুড়া গাবতলি সড়কে আর্মি জিপে তারা গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং ২ জন পুলিশ কনস্টেবল ও চার পাক সমর্থকদের হত্যা করে। ১০ আগস্টে তারা মাছক্ষরিয়ার তিন বিশিষ্ট জামাত নেতাদের হত্যা করে।
৯ আগস্ট মুক্তিবাহিনী দানিয়ারিতে দুই পাকসেনা হত্যা করে এবং একজনকে আহত হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
৯ আগস্ট মুক্তিবাহিনী শ্যামনগর রাজাকার দপ্তরে আক্রমণ করে একজন বিখ্যাত রাজাকার জনাব মাওলানা আবদুল সাত্তার রাজাকারসহ তিনজন রাজাকারকে হত্যা হয়। তারা ৩ রাজাকারকেও গ্রেফতার করে এবং দুটি রাইফেল জব্দ করে।
১১ আগস্ট চন্দরবাসে মুক্তিবাহিনী রাইফেল ও গোলাবারুদসহ ৫ জন রাজাকার বন্দী করে। একই দল জবানাথপুরে অ্যামবুশ করে ৩ পাকসৈন্য ও তিন রাজাকার হত্যা করে।
১০ আগস্ট তারা গোদাগাড়ীতে ১ জন পিস কমিটির সদস্যকে হত্যা করে।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী মরভাতালি এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করে এবং ৫ পাকসেনা নিহত হয়।
১২ আগস্ট তারা মন্দভাগ বাজারে আক্রমণ করে ৫৫ পাকসেনাকে হত্যা করে।
৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনী সাতকানিয়া কলেজ এলাকায় পাক বাহিনীর উপর অভিযান চালায় যেখানে পাক বাহিনীর ৪০ জন হতাহত হয়েছে।
৩ আগস্ট তারা একজন বিশিষ্ট পাকসহযোগী মোঃ আব্দুল কুয়াইরকে হত্যা করে-তিনি প্রিন্সিপাল ছিলেন সাতকানিয়া কলেজের। তারা একই এলাকায় একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে তারা পটিয়া এলাকায় ১০ পাকসহযোগীরা হত্যা করে।
৫ আগস্ট তারা মেহাব বাজারে মধ্যে সেতু ধ্বংস করে। তারা একই এলাকায় একটি ক্যাম্পে অভিযান চালায় এবং ৩ জন পাকসেনাকে হত্যা করে এবং পাঁচ জন আহত হয়।
৯ আগস্ট মুক্তিবাহিনী কোতেশর পাক অবস্থানের উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে এবং ৬ জনকে হত্যা করে।
৭ আগস্ট তারা হরিমঙ্গলে ২ পাকসেনাকে হত্যা করে ও ৩ জনকে আহত হয়।
৭ অগাস্ট তারা কসবা এলাকায় ৩ জন পাকসেনাকে হত্যা করে।
৯ আগস্ট বিজয় নগরে ৯ রাজাকার হত্যা এবং তিন জনকে আহত হয়।
২১ জুলাই বোয়ালিয়া গ্রামে এক বিশিষ্ট শান্তি কমিটির সদস্যকে হত্যা করে।
৯ অগাস্ট কামাল্পুরে ৩ জন পাকসৈন্য হত্যা করে।
২ আগস্ট মুক্তিবাহিনী দুটি টেলিফোনের খুঁটি ভেঙ্গে ও টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে। ভৈরববাজার এবং ঢাকার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এ (রেল এবং সিভিল) কার্যক্রম চালায়।
২৬ জুলাই তারা নারায়াণঙ্গঞ্জ এলাকায় রেলসেতু ধ্বংস করে।
১২ জুলাই তারা গদনাইলে যন্ত্রপাতি ও বিল্ডিং বা বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন ধ্বংস করে। এর জন্য কাছাকাছি মিলের পাওয়ার সাপ্লাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
৪ আগস্ট তারা গদনাইলে পাট গুদামএ আগুণ দ্যায়। প্রায় তিন মণ পাট পুড়ে যায়। গুদামঘর বিল্ডিং পুড়ে যায়।
৩০ জুলাই ও ৫ আগস্টএর মধ্যে মুক্তিবাহিনী ঢাকার চারপাশে নিম্নলিখিত গেরিলা কার্যক্রম সম্পন্ন করে। তারা সড়ক সেতু ও এই এলাকায় দুটি রেল সেতু ধ্বংস করে। একটি গাড়ী মাইনে মিরপুর-ঢাকা রোডে বিস্ফোরিত হয়। ঢাকার পাক চেক পোস্টে আক্রমণ করে ৫ পাকসৈন্য নিহত ও চার জন আহত হয়। তারা ঢাকায় পাকসেনাদের প্রতিষ্ঠিত ২ টি দোকান আক্রমণ করে এবং এতে এক ব্যক্তি আহত হয়। ৩০ জুলাই আশুগঞ্জ প্রধান গ্রিড লাইনের বাংকা শিবপুর থানায় ২ টি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করে। এতে ঢাকা-আশুগঞ্জ মধ্যে ইলেকট্রিকসাপ্লাই দরুন ব্যাহত হয়। একই দল একই এলাকায় ১০০০কেভি গ্রিড লাইন ধ্বংস করে।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী শ্রীমঙ্গল এবং কোমল গঞ্জের মধ্যে তিনটি স্থানে রেললাইন উপড়ে ফেলে।
১০ আগস্ট তারা কালীঘাট-মতিগঞ্জ রাস্তার উপর একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
৯ আগস্ট আলীনগর এক রাজাকার হত্যা করে।
১০ অগাস্ট কানাইঘাট এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় ও এক পাকসেনা হত্যা করে।
৮ আগস্ট চরখারি-গোপালগঞ্জ এর মধ্যে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে। একই এলাকায় ২ জন রাজাকার হত্যা করে।
১১ আগস্ট সমশের নগরের কাছাকাছি একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করে
১১ আগস্ট সুরমা নদী এলাকায় অ্যামবুশে পাক স্কাউট এবং রাজাকারদের আক্রমণ করে। এবং দুই জন আহত হয়।
৭ আগস্ট সিলেট শহর ও এর উপকণ্ঠে সেনা গাড়ির উপর একটি গ্রেনেড ছুড়ে ফেলে তিন পাকসেনা হত্যা করে।
১৩ জুলাই কোম্পানিগঞ্জের দক্ষিণে তুকার গাওয়ে পাকসৈন্যদের আক্রমণ করে। এক অফিসার এবং খাইবার রাইফেলসের অন্য র্যাঙ্ক এর ৭ জনকে হত্যা করে। তারা একটি রাইফেল জব্দ করে।
১০ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী দিরাই এলাকায় ডাকাতদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং ২১ ডাকাত নিহত হয়। তারা এছাড়াও ১ টি হালকা মেশিন গান, আটটি রাইফেল, ২১ টি শট গান, চারটি গ্রেনেড এবং কিছু গোলাবারুদ জব্দ করে। অভিযান চালিয়ে দিরাই এলাকায় একটি পাক সমর্থকের বাড়ি ধ্বংস করে।
১২ আগস্ট কমলাপুরে পাক অবস্থানে আক্রমণ করে এক পাকসেনাদল এবং
দুই জনকে আহত হয়।
২০ থেকে ২৬ জুলাই কটিয়াদি, পাকুন্দিয়া ও গাচিহাতায় নিম্নলিখিত গেরিলা অপারেশন সম্পন্ন হয়। তারা কটিয়াদি নদীর পাঁচ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে দুই লঞ্চে পাকসৈন্যদের (ঢাকা থেকে দরগাপুর গামী) আক্রমণ করে ৪০ পাকসৈন্য হত্যা এবং ৪৫ জন আহত এবং একটি লঞ্চ ধ্বংস করে। প্রায় ৫০০পাকসৈন্যকে তারা ৫ টি লঞ্চে আক্রমণ করে। প্রচণ্ড যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এবং ৫ দিন ধরে চলে। এবং প্রচুর হতাহত হয়-প্রায় ১০০পাকসৈন্য জখম হয়। ভৈরব-ময়মনসিংহ রেল লাইনে গাছিপারা স্টেশনে এক ট্রুপ পাকসেনা ভর্তি একটি রেল মাইনে আক্রান্ত হয়। এতে ২০ পাকসৈন্য, ১০ পাঞ্জাবি পুলিশ ও দুই ইঞ্জিন ড্রাইভার নিহত হয়।
২৫ জুলাই মুক্তিবাহিনী ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। আরেকটি গ্রুপ রাজাকার ও পাক সমর্থকদের ঘর উপর গ্রেনেড ছুড়ে। তারা ময়মনসিংহে কতভ্যালি থানা ধ্বংস করে। এর প্রতিশোধে পাকসেনারাতেন্তাল বাজার, ফুলপুর জ্বালিয়ে দেয়। ময়মনসিংহ কাছাকাছি কলপারা ঘর পুড়িয়ে দেয় এবং বাইতামারিতে ধানক্ষেতের সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলে।
১১ আগস্ট দরবাস্ত-কানাইহাঁট রাস্তায় আক্রমণে ৩ পাকসৈন্য নিহত ও ২ জন আহত হয়।
১০ আগস্ট কানাইরহাট অভিযান চালিয়ে ৩ রাজাকার হত্যা করে।
৯ আগস্ট দিলকুশা এলাকায় দুজন পাক সমর্থকদের হত্যা করে।
১০ আগস্ট তারা সিলেটীপারা ও মেওয়া র মধ্যে ২ টি টেলিফোনের খুঁটি এবং টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে। এতে বড়্গ্রাম ও সেলিয়ার মধ্যে টেলিযোগাযোগ ব্যাহত হয়।
তারা বিয়ানীবাজারএ গ্রেনেড ছুড়ে ফেলে দুই রাজাকার হত্যা করে।
২ আগস্ট তারা ছাতকের কাছাকাছি পাক গাড়ির ওপর অতর্কিত হামলা করে ৫ জন আহত করে। ৪ আগস্ট সুরমা নদীতে স্পিড বোটে আক্রমণ করে ২ পাকসেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়।
১২ আগস্ট গোসগাও এলাকায় আক্রমণ করে তিন রাজাকার হত্যা ও চার জন আহত হয়।
২৬ জুলাই ময়মনসিংহ পেট্রোল পাম্প দিকে গ্রেনেড ছুড়ে এক প্রহরীর প্রাণনাশ ও একজন আহত হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর। মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
আগস্ট ১৬
যুদ্ধ বুলেটিন
মুক্তিবাহিনী পাকসৈন্যদের হতাহত করতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। রাজাকার ওসহযোগীদেরকেও। সকল ক্ষেত্রে তারা পাকসেনাকে হয়রানির শিকার করছে। পাকবাহিনীর যোগাযোগের ব্যাহত করা ছাড়াও অধিকৃত এলাকায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে তারা ৪ কর্মকর্তাসহ ১৪৬ পাকসেনা হত্যা করেছে এবং ৬১ জন যখন করেছে। তারা ৭০ রাজাকার নিহত ও ১৪ জন বন্দী করেছে। তারা ৩৮ রকমের অস্ত্র জব্দ করে। তারা ৩ টি পাক যান ধ্বংস করে যেগুলো সৈন্য বহন করতে ব্যবহৃত হত। ৫টি সড়ক ও রেল সেতু ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস করা হয়েছে।
মুক্তিবাহিনীর উল্লেখযোগ্য কিছু সাফল্য নীচে বর্ণিত হল :-
১২ আগস্ট তারা কুমিল্লার নবীনগর এলাকা সাফ করে। এবং ১২টি রাইফেল, ৮ টি শট গান, ৩টি বেয়োনেট এবং প্রচুর গোলাবারুদ জব্দ করে।
তারা দিনাজপুর জেলার সাগুনি এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ রেল সেতু ধ্বংস করে। এর দরুন দিনাজপুর-পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও মধ্যে এই রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। সেতু এখনও আউট অব কমিশন। ১২ আগস্ট তারা ফুলবাড়ী ও পার্বতিপুরের মাঝে একটি কাল্ভার্ট ধ্বংস করে।
প্রচুর সংখ্যক রাজাকার আত্মসমর্পণ করছে। তারা সব পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অবিশ্বাসী হচ্ছে বলে অভিযোগ করে। তারা পাকিস্তানী সৈন্যদের ক্যানন ফুডার হিসেবে ব্যাবহ্রিত হচ্ছে বলে মনে করে।
বিস্তারিত কার্যক্রম এর বিবরণ নিচে দেওয়া হল:
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
১৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনীরতনপুরে এক রাজাকার এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে হত্যা করে। একই দিনে তারা ফুলবাড়ী এলাকায় অতর্কিতে আক্রমণ এবং তাদের ৯ জন হত্যা করে।
১৫ অগাস্ট ফুলবাড়ী এলাকায় কুহইহাট ফেরিতে অতর্কিতে আক্রমণ করে রাজাকারদের দুটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। এতে ১২ জন নিহত হয়। একই এলাকায় এছাড়া ১২ জন বন্দি হয়। পাক প্যাট্রোলে ১২ আগস্ট আক্রমণে একজন আহত হয়।
৬ অগাস্ট কাজিপারার এক স্থানে পাক বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময়ে ৩৮ জামাতি এবং এক স্থানে পাকসেনাদের উপর হয়রানি সম্পন্ন হয়। ১১আগস্ট সাত সৈন্য বহনকারী এক পাক জিপ মাইনে বিস্ফোরিত হয় এবং সবাই নিহত হয়। সেসময় পার্শবর্তী একটি যানে ৩৩ জন বেসামরিক নাগরিক আক্রান্ত হয়।
৬ আগস্ট মেগাবাইট ধর্মপুর এলাকায় কাঠের ব্রীজ ধ্বংস করে।
১২ অগাস্ট ফুলবাড়ী-পার্বতিপুর রেল যোগাযোগ ব্যাহত ও রেলওয়ে কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১৩ অগাস্ট হরগোবিন্দপুর পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণ এবং ৩ পাকসৈন্যকে হত্যা করা হয়।
১৪ আগস্ট হিলি ও চরকাইএলাকার মধ্যে প্রায় ৪০ ফুট একটি রেলওয়ে ট্র্যাক ধ্বংস করা হয়। দুজন বিহারি হত্যা এবং তাদের কাছ থেকে দুটি শট গান জব্দ করা হয়।
১৫ অগাস্ট উত্তর খানপুরে ৪ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়।
১৫ অগাস্ট পাথরঘাটা এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় চার পাকসেনা নিহত এবং শীতলডাঙ্গাগ্রামে দুই রাজাকার হত্যা করা হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
১৪ অগাস্ট উজিরপুরে পাকসৈন্যদের সাথে যুদ্ধে একজন অফিসারসহ ১১ পাকসেনা নিহত হয়।
১৫ আগস্ট ভোমরা এলাকায় পাক গাড়ি আক্রমণে এগারো পাকসেনা / রাজাকার হত্যা করা হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১০ অগাস্ট পাক অবস্থান আমান্ডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে ১ অফিসারসহ কয়েকজন হত্যা করা হয়।
১৩ অগাস্ট নরমানে এলাকায় পাক বাহিনীর উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণে ছয় জনকে আহত করা হয়।
১১ অগাস্ট ছয় টেলিফোনের খুঁটি ও কসবা ও মন্দভাগের মধ্যে একটি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করা হয়।
১২ অগাস্ট কসবা এলাকায় ১০০ গজ রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়।
১৩ অগাস্ট কালীগঞ্জ এ মুক্তিবাহিনী রাজাকার ডঃ ফাশীঊদ করিম এবং জনাব গফুর বেপারী উভয়ের বাড়িতে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। ফোলে ডঃ করিম গুরুতর আহত হয় এবং জনাব বেপারী নিহত হয়।
১৩ অগাস্ট মন্দবাগ এলাকায় ১০০ ফুট রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী মন্দভাগে আক্রমন করে এবং সেখানে ৩ পাকসৈন্য নিহত হয়।
১৩ অগাস্ট নেপটার হাট এলাকায় দুটি বৈদ্যুতিক পাইলন উড়িয়ে দেয়া হয়।
১২ অগাস্ট ১২ টি টেলিফোনের খুঁটি ভেঙ্গে এবং মন্দভাগ-নাপ্তের হাট এর মধ্যে টেলিফোন যোগাযোগ ধ্বংস করা হয়।
১৩ অগাস্ট একই এলাকায় মুক্তিবাহিনী চার পাকসেনাকে হত্যা করে।
২০ থেকে ২৫ জুলাই এর মধ্যে ঘোড়াশাল রেলওয়ে স্টেশন ও জিনারদি রেলওয়ে স্টেশনএর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে গ্যাস পাইপ লাইন ধ্বংস করা হয়।
৩১ জুলাই জিনারদি এলাকায় মুক্তিবাহিনী দুই সক্রিয় পাকসহযোগীদের হত্যা করে।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী শ্রীমঙ্গলএর কাছাকাছি হাসনাবাদ এলাকায় সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
১৩ অগাস্ট কালীঘাট এলাকায় মুক্তিবাহিনী বৈদ্যুতিক তোরণ উড়িয়ে দেয়।
১৪ আগস্ট লুভা নদীর পশ্চিম তীরে পাক সৈন্যের উপর অতর্কিত আক্রমণে তিন রাজাকার আহত হয়।
১২ আগস্ট দক্ষিণারঞ্জন রেলস্টেশনে দুই পাকসেনা নিহত এবং রাজাকার আহত হয়।
১২ আগস্ট সোনারুপায় অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী সাত পাকসেনাকে হত্যা করে।
১২ আগস্ট দুই কর্মকর্তা বহনকারী এক পাকবাহিনী জিপ জুড়ী-গোপালবাড়িতে মাইনে বিস্ফোরিত হয় এবং এতে ৩ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়।
৬ আগস্ট মুক্তিবাহিনী দ্বারা পাকসৈন্য ও রাজাকারদের জয়কালাস এলাকায় আক্রমণে এক পাকসেনা নিহত ও এক রাজাকার আহত হয়।
১৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনী আহমেদনগর-সাকুচি এলাকার মধ্যে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে।
১৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনী বাওরামারি-নুন্নি এলাকার মধ্যে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে।
৭ আগস্ট শ্রীমঙ্গলে ১২ রাজাকার ও ছয় সৈন্য গ্রেনেডে আক্রান্ত হয়ে নিহত হয়।
২৬ জুলাই ধলাই এলাকায় ৫ রাজাকার হত্যা করা হয়।
৩০ জুলাই কমলগঞ্জএর কাছাকাছি মকাবিলে অভিযান চালিয়ে ১২ রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৪ আগস্ট পাকিস্তানের সৈন্য নারায়নপুরে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং গুলি বিনিময় হয়। ৬ জন পাকসেনা জখম হয়।
১২ অগাস্ট অভিযান চালিয়ে কানাইঘাট এলাকায় এক আনসার কমান্ডারের বাড়ি ধ্বংস করা হয়।
১৪ আগস্ট ডুপাতিলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ পাকসেনা হত্যা এবং চার জনকে আহত করা হয়।
১৪ আগস্ট রাধানগরে অ্যামবুশে এক মিলিশিয়া ব্যক্তি নিহত হয়।
১২ অগাস্ট লালপুরে দুই রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৪ অগাস্ট ছাতকের কাছাকাছি পাক পোস্টে দুই পাকসেনাকে হত্যা করা হয়।
১২ আগস্ট পাকসৈন্য নবীগঞ্জ এলাকায় আক্রমণে ১২ রাইফেল, ৮ শট গান, তিনটি বেয়োনেট ও গোলাবারুদের একটি বৃহৎ পরিমাণ বন্দী করে।
১৪ আগস্ট বিজয়পুর-বিরিশিরিতে অ্যামবুশে পাক প্যাট্রোলের এক পাকসেনার প্রাণনাশ করা হয়।
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টরে
১৫ আগস্ট ১৯৭১ এর পাওয়া তথ্য মতে
পাকসেনারা বাবরাতে অনিয়মিতভাবে মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমন ও গুলি বিনিময় করে। এতে ১৩ আগস্ট ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। একই দিনে রাত্নি সেতুর কাছে পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ে এক পাকসেনা নিহত হয়।
৯ আগস্ট মুক্তিবাহিনী কাকিনা রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমন করে, এতে ৪ জন পাকসেনা হয়। ১০ আগস্ট দামোদরপুর এলাকায় ৪ পাক সমর্থক নিহত ও নবাবগঞ্জে একজনকে হত্যা ও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৩ অগাস্ট সেগুণই রেল সেতু ধ্বংস করা হয়।কেন্দ্রীয় জেটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ বিস্ফোরিত হয়। এতে দিনাজপুর-পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
৫ আগস্ট শীতলাই রেল সেতু উড়িয়ে দেয়া হয় ও ১৩ আগস্ট সম্মুখ যুদ্ধে ৪ রাজাকার পাকসেনা নিহত হয়। পালানর সময় আর ৪ জন জখম হয়।
১২ অগাস্ট গঙ্গাদাসপুর এলাকায় অতর্কিত আক্রমণে এক রেডিও অপারেটরসহ ১৫ জন আহত হয়।
মুক্তিবাহিনীর প্যাট্রোল এক মুসলিম লীগের সদস্য হত্যা করে। এবং বর্নি এলাকায় ১০ আগস্ট তাঁর কাছ থেকে কিছু গোলাবারুদ সঙ্গে একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়। তারা একই এলাকায় এক শান্তি বাহিনী সদস্যকে হত্যা করে।
আগস্ট ৯ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে মুক্তিবাহিনী নিম্নলিখিত গেরিলা কার্যক্রম সম্পন্ন করে:-
মুক্তিবাহিনী শ্রীগ্রামে শান্তি বাহিনী সম্পাদকের বাসায় আগুন দেয়। তারা দুলিরজুরি এলাকায় এক মুসলিম লীগের সদস্যকে হত্যা করে। তারা একই এলাকায় একটি ব্রিজ উড়িয়ে দেয়, পাহারার তিন রাজাকার হত্যা করে ও রাইফেল জব্দ করে। তারা একটি মুসলিম লীগ নেতার বাড়ি পুড়িয়ে দেয় পান্দিয়ের বানায়। তারা কুচিগ্রামে একটি পাক সমর্থকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি বন্দুক উদ্ধার করে।
১২ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী জদাবপুর পাক অবস্থানের উপর আক্রমণ করে। এতে তিন জনের মৃত্যু এবং ৫ জন আহত হয়। অন্য একটিতে ১ জন পাকসেনা নিহত হয়।
আগস্ট ১০ থেকে ১২ তারিখে জদাবপুর, রাধাপুর মাদার তলা অঞ্চলে ২০ শান্তি বাহিনী সদস্যদের হত্যা করে। ছয়টি বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
১ থেকে ৮ আগস্টে যশোর এলাকায় কয়েকটি গেরিলা অভিযান চলে। তারা মুক্তারপুর পোস্ট অফিস জ্বালিয়ে দেয় এবং স্টেশনারি ও সিল উদ্ধার করা হয়। মুক্তিবাহিনী দুই জামাত সদস্যদের হত্যা ও তাদের কাছ থেকে তিনটি বন্দুক উদ্ধার করে। মুক্তিবাহিনী উজিরপুরগামী ১৯ পাক বাহিনীর একটি নৌকায় আক্রমণ করে; এতে এক সৈনিক নিহত এবং অন্য জন আহত হয়। তারা পাঙ্কা এলাকায় একটি নৌকায় এম্বুশ করে ছয় জন পাকসেনা হত্যা করে।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১১ অগাস্ট পাক অবস্থান কোটেশ্বরে মর্টার দিয়ে তিন পাকসেনাকে হত্যা করে। এছাড়া আর ও ৬ জনকে হত্যা করে।
৮ ও ১০ অগাস্ট রাজাপুরে পাক অবস্থানে মর্টার অভিযান চালিয়ে ১৩ জন জখম করে।
১১ অগাস্ট হরিমঙ্গলে অভিযান চালিয়ে ২০ জন হতাহত হয়।
১২ আগস্ট সেজামুরা এলাকায় পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে ১ জন নিহত হয়।
১২ আগস্ট সুরমা এলাকায় সেনা বহনকারী এক পাক গাড়ি মাইনে উড়িয়ে দেয়া হয়। এতে ৮ জন নিহত, অনেক আহত হয়। গাড়িটি সম্পূর্ন ধ্বংস হয়।
৫ অগাস্ট নারায়ণগঞ্জে একটি পাটের গুদামে প্রায় ১০০০ বান্ডিল পাট জ্বালিয়ে দেয়।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১১ অগাস্ট রাঘুরচাক এলাকায় এক পাকসহযোগীকে হত্যা ও ১২ আগস্ট একই এলাকায় তিন বিন্দুতে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১২ আগস্ট বড়লেখা এলাকার কাছাকাছি পাক প্যাট্রোল অতর্কিতে আক্রমণে ৩ পাকসৈন্য আহত হয়।
১০ অগাস্ট সাগারনাল পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ছয় পাকসৈন্য নিহত করা হয়। ১০ অগাস্ট মুহম্মদপুর এলাকায় একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগে
আগস্ট ১৭
যুদ্ধ বুলেটিন
১৭ আগস্ট প্রাপ্ত রীপোর্ট অনুযায়ী মুক্তিবাহিনী এখানে নিয়মিত কার্যক্রম চালায়। এতে, এক মেজর, ১ ক্যাপ্টেন, ২ অফিসার, ২ জে শি ও এবং এক হাবিলদারসহ ১৭৩ পাকসৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী ৩৮ জন পাকসেনাআহত হয় এবং ৫১ রাজাকার ও ২৫ জনসহযোগীকেও হত্যা করে।
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
১৩ আগস্ট মুক্তিবাহিনী সিঙ্গিমারি এলাকায় পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণ করে ৪ জনকে হত্যা করে। কিছু গোলাবারুদ সঙ্গে একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৪ আগস্ট পাটেশ্বরি এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে এক পাকসেনা নিহত ও দু’জন আহত হয়।
১৩ অগাস্ট নাগেশ্বরী ও গজলায় মুক্তিবাহিনী ২ জন শত্রুসেনা হত্যা এবং ৭ জনকে আহত হয়।
২৯ থেকে ৩১ জুলাই বগুড়া এলাকায় মুক্তিবাহিনী কয়েকটি গেরিলা অভিযান সম্পন্ন করে। তারা সারিকান্দি থানায় অভিযান চালিয়ে অফিসার-ইন-চার্জকে হত্যা করে। বগুড়া-গাবতলী রাস্তায় মাইনে এক পাকবাহিনী জিপ বিস্ফোরণে একজন অফিসারসহ এক জন আহত হয়। তারা ধুনট থানার পাঁচ পুলিশ কনস্টেবল নিহত ও সাত রাইফেল এবং একটি ১২ বোর বন্দুক জব্দ করে তারা শান্তি কমিটি সদস্য ইউনিয়ন কাউন্সিল চেয়ারম্যান জনাব মজাম্মেল হককে হত্যা করে। তারা চেয়ারম্যানের বাসা থেকে ১২ বোর বন্দুক উদ্ধার করে। আরও একটি তহশীল অফিস থেকে পায়।
১২ অগাস্ট গঙ্গা প্রসাদে মাইনে এক পাক জিপ আক্রমণে এক মেজর, এক ক্যাপ্টেন, এক হাবিলদার ও চার সিপাহী নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের দিন জয় মানিরহাট এলাকায় বোমা বিস্ফোরিত হয়। অবিলম্বে পাকসেনারা সেখানে যায় এবং ৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়।
১৩ আগস্ট শিঙ্ঘিচর ও ভুশ্মারি গ্রামে পাকসেনারা ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এই গ্রাম থেকে গ্রামবাসীদের ভারতে বামনহাট শরনার্থী রিসিপ্সন ক্যাম্পে যেতে বাধ্য করে। সেখানে ভারত ফেরতদের ধরার জন্য পাকসেনাদের ক্যাম্প ছিল।
১১ আগস্ট পানিমাছে পাক অবস্থানে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে। এতে ৮ জন আহত হয়।
১০ অগাস্ট মারিয়াতে অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ৪ মুজাহিদ হত্যা করে।
১৩ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী দিনাজপুর থানায় গ্রেনেড ছুড়ে ও কাজীপুর এলাকায় তিন রাজাকার হত্যা করে।
১৩ আগস্ট লতলা-ঠাকুরগাঁও সড়কে মাইন বিস্ফোরণে এক পাকিস্তানী জিপ বিস্ফোরিত হয়; এতে, ২ পাকসেনা নিহত হয়।
১০ অগাস্ট আখানগর রেলওয়ে স্টেশনে এক জামাতি নেতা ও ৪ অবাঙ্গালি সহায়তাকারী নিহত হয়। এছাড়া জনাব সাকিকি নামে বিশিষ্ট জামাতি নেতা হারিন্দাতে নিহত হয়।
পার্বতিপুর-ফুলবাড়ী রেল ট্র্যাকে কাইদ্রায় পাক প্যাট্রোল রন্ধনরত থাকা অবস্থায় গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয় এবং পাক প্যাট্রোল একটি রাইফেল এবং তাদের সরঞ্জামাদি রেখে দৌড়ে পালায়।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ঠাকুরগাঁও-পীরগঞ্জ রাস্তায় এক বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করে।
১৫ অগাস্ট ভাটুরিয়ার কাছাকাছি পাকসৈন্যদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয় ও ৪ জন নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট গোপাল নগরে তিন পাক সমর্থকদের হত্যা করা হয়। পরে তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
১৫ আগস্ট নবাবগঞ্জে ব্যাপক গেরিলা হামলা চলে। নয়টি রাজাকার ধরা হয় তাদের ক্যাম্পে আক্রমণ করে। এবং চারটি রাইফেল জব্দ করে। হরিপুরে একটি ৩০x৮ ফুট ব্রীজ উড়িয়ে দেয়া হয়।
জানা যায় যে ১০ থেকে ১৪ আগস্টে যশোরে একটানা গেরিলা কার্যক্রমের জন্য তাদের স্বাধীনতা দিবস পালিত হবেনা। এস এস সি পরীক্ষাও বাতিল ঘোষণা করা হয়। গেরিলা আক্রমনের সময় তারা এক অবাঙালি পাকসহযোগীকে নরঙ্গলি এলাকায় হত্যা করে। তারা ফরিদপুর এলাকায় একটি বৈদ্যুতিক পাইলন উড়িয়ে দেয় এবং যশোর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তারা ফরিদপুরের তিন রাজাকার হত্যা করে।
১৫ অগাস্ট বুরিপন্তা এলাকায় পাক বাহিনীর ওপর হামলা চালায় এবং তিন পাকসৈন্য নিহত ও এক জন আহত হয়।
১১ অগাস্ট ডালটননগর কৃষি খামারে অভিযান চালিয়ে চার রাজাকার হত্যা করে। তারা ১৪ আগস্ট একই এলাকায় কালভার্ট উড়িয়ে দেয়।
১৩ অগাস্ট বুরিপন্তা এবং বারিবাঙ্কা অঞ্চলে পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ে দুই পাকসেনা নিহত হয়।
১৩ অগাস্ট বাগ্বানে মুক্তিবাহিনী দুই পাকসেনাকে হত্যা এবং তিন জনকে আহত হয়।
১৩ অগাস্ট মাছুডাঙ্গা এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে সতেরো পাকসেনা নিহত হয়।
১৩ অগাস্ট বায়রা এলাকায় এক রাজাকার নিহত ও একটি রাইফেল উদ্ধার হয়।
১৪ অগাস্ট কানপুর এলাকায় পাকসৈন্য ও রাজাকারের সাথে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এতে ২ পাকসৈন্য, আট রাজাকার ও ৫ পাক সমর্থক নিহত হয়।
২৯ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট মাদারীপুর এলাকায় নিম্নলিখিত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। মুক্তিবাহিনী মাহান্দ্রাদি এলাকায় টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে। তারা কবিরাজপুর এক মুসলিম লীগের সদস্যের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। নৌকায় গ্রেনেড ছুড়ে তারা তিন রাজাকার হত্যা করে। নাগরদিতে এক মুসলিম লীগের সদস্যকে হত্যা করা হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১৪ আগস্ট রামগড় অভিযানে ছয় পাকসেনা নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী পাক অবস্থান মোহনবাগান বাজারের উপর মর্টার চালিয়ে ৫ পাকসেনা হত্যা এবং কয়েক বাংকার ধ্বংস করে।
১০ আগস্ট পাক অবস্থান আন্ধারমানিকে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ চালালে একজন কর্মকর্তাসহ পাঁচ পাকসৈন্য নিহত হয়।
১২ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী তাকিয়া এলাকায় দুটি বৈদ্যুতই পাইলন ধ্বংস করে।
১৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনী পাক অবস্থান চাদ্গাজিতে অভিযান চালিয়ে ৫ পাকসেনা হত্যা করে।
১৫ অগাস্ট দেবপুরে এক পাক জেসিও এবং চার রাজাকার হত্যা করে।
১৩ আগস্ট মুক্তিবাহিনী জামবাড়ি এলাকায় পাক প্যাট্রোল অতর্কিতে আক্রমণ করে এবং ৩ পাকসেনা হত্যা করে।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী আগাদির ও কুটির মধ্যে এক বৈদ্যুতিক পাইলন উড়িয়ে দেয়া
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী কসবা দক্ষিণে ৯ ফুট রেলপথ ট্র্যাক ধ্বংস করে।
১১ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী পাক অবস্থান মধুপুরে অভিযান চালিয়ে চার পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৫ জুলাই সায়দাবাদে দুই পাকসহযোগীরা নিহত হয়।
১২ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী আলীনগর এলাকায় চার রাজাকার হত্যা করে।
১১ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী কামালপুর এলাকায় পাক প্যাট্রোলের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এতে তিন পাকসেনা নিহত হয়।
১০ অগাস্ট পাক অবস্থান নওগাঁ আক্রমণে ৫ পাকসেনার প্রাণনাশ এবং এক জন আহত।
৩ অগাস্ট নবীগঞ্জ ২ জন সক্রিয়সহযোগীদের হত্যা করা হয়।
১২ অগাস্ট লক্ষ্মীপুর অ্যামবুশে তিন পাকসৈন্য নিহত ও নয়জন আহত হয়।
৩১ জুলাই মুক্তিবাহিনী বাজিতপুর এ পাক ন্যাশনাল ব্যাংক শাখায় অভিযান চালিয়ে কর্তব্যরত কোষাধ্যক্ষ এবং রক্ষিবাহিনীকে হত্যা করে।
৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনী নারায়ণগঞ্জ এলাকায় এক পাট গুদামে আগুন দেয় ও পাট বাজারজাতকরণ এর এজেন্ট হত্যা করে।
১৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনী পাক অবস্থান ছাগলনাইয়ায় আক্রমন চালিয়ে চার পাকসৈন্য হত্যা ও দুই বাংকার ধ্বংস করে।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী আলীনগর দুটি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করে। একই এলাকায় একটি সড়ক সেতুতে পাহারারত ৫ পাকসৈন্যকে হত্যা করা হয়।
১৫ অগাস্ট কোটেশ্বর পাক অবস্থান উপর মর্টার দিয়ে হামলা করে ৫ পাকসেনাকে হত্যা করা হয়।
১৪ আগস্ট জামবাড়ি এলাকায় পাক চৌকি আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী একটি জেসিওসহ তিন পাকসৈন্য হত্যা করে।
১৫ অগাস্ট মন্দভাগ এলাকায় দুটি টেলিফোনের খুঁটি ধ্বংস করে। ১৪ আগস্ট মুকুন্দপুর পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী দুই জন শত্রুসেনাকে হত্যা করে।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী হরিণ খোলা ও চৌরাস্তায় মর্টার দিয়ে চার পাকসৈন্য হত্যা করে। পাক বাহিনী দ্বারা দখল করা বেসামরিক ঘরও ধ্বংস করে দেয়া হয়।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
এই সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ৪২ জন শত্রুসেনাকে হত্যা ও ১৯ জনকে আহত হয়।
১৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালনের খবরে কালীগঞ্জ এলাকায় মিটিং এর উপর তিন মুক্তিযোদ্ধা আক্রমণ করে। সভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এতে ছয় রাজাকার নিহত ও কিছু পাকসেনা গুলিবিদ্ধ হয়।
১৪ আগস্ট পাকিস্তানের সৈন্য এবং রাজাকাররা কারাবালিয়া হামলা করার চেষ্টা করে এবং মুক্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ফলে তাদের দখল চেষ্টা ব্যার্থ হয়। ৩ পাকসৈন্য আহত হয়।
১৩ আগস্ট পাক অবস্থান বড়গ্রামে তিন জনের মৃত্যু হয় এবং ৫ জন আহত হয়।
১৩ অগাস্ট কাংলি ফেরি এলাকায় দুটি নৌকা ধ্বংস করা হয়।
১৪ অগাস্ট রাজাকারদের সাথে একই এলাকায় একটি ব্রিজ পাহারার সময় মুক্তিবাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, এতে, ১ রাজাকার নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী বিয়ানীবাজার অভিযান চালিয়ে দুই রাজাকার হত্যা করে।
৮ আগস্ট মুক্তিবাহিনী গোলাপগঞ্জ থানা ধ্বংস করে।
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী তাঞ্জর এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে দুই রাজাকার হত্যা করে।
১৪ অগাস্ট কামালপুর একটি সম্মুখযুদ্ধে ২৬ জন পাকসেনা নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট সাগরনলে পাক চৌকিতে আক্রমণে ২ পাকসৈন্য আহত হয়।
১৪ অগাস্ট সিলেটে জেলা সংগ্রাহকের অফিস এবং টাউন হলে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে মুক্তিবাহিনী।
১৪ আগস্ট ১২০ পাকসৈন্যরাতে ফারাঙ্গাপারা দখল করে।
১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে মুক্তিবাহিনী ফারাঙ্গাপারায় আক্রমণ করে এবং দুই রাজাকার হত্যা ও দুই জন পাকসেনা আহত হয়।
১৫ আগস্ট শানিবারই মিশন দখল এবং বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
১৫ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী চালপারার দিকে আগুয়ান পাকসৈন্যদের উপর অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ১২ জন শত্রুসেনাকে হত্যা করে।
১৪ অগাস্ট গোবিন্দ-সৈয়দপুর রাস্তায় ৯০ ফুট দীর্ঘ ফলিয়া সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়।
১৫ অগাস্ট পাক অবস্থান কামালপুরে আক্রমন চালিয়ে ৮ পাকসৈন্য হত্যা করা হয়। মুক্তিবাহিনী বাংকার এবং ঘর ধ্বংস করে। একটি বেসামরিক বাস ভাংচুর করা হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগে
যুদ্ধ বুলেটিন–আগস্ট ১৮
মুক্তিবাহিনী পাকসৈন্য, রাজাকার ও তাদের দোসরদের উপর তীব্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল। সকল খাঁতে পাক বাহিনীর উপর হয়রানি ও হতাহতের কার্যক্রম তীব্রতর হয়েছে ।
রিপোর্ট মতে মুক্তিবাহিনী এখানে ১১০ জন পাকসেনাকে হত্যা এবং ৫৫ জন পাকসেনাকে আহত হয়। ৪৭ রাজাকার ও ১১সহযোগীকেও হত্যা করা হয়। অপারেশনের সময় ১০টি অস্ত্র দখল করে মুক্তিবাহিনী। ৩ টি সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়, তাতে অধিকৃত অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যাহত হয়।
মুক্তিবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য নিচে উল্লেখ করা হল:-
মুক্তিবাহিনীর ঢাকা শহরের চারপাশে তাদের কার্যক্রম তীব্রতর করে। তারা সম্পূর্ণভাবে ঢাকা ও নরসিংদী মধ্যে ট্রাফিক ব্যাহত করে ঢাকা-নরসিংদী রাস্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সেতু ধ্বংস করে দেবার ফলে। যে উল্লেখ করা যেতে পারে রেলপথ যোগাযোগ ইতিমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে নানা পয়েন্টে এর ক্ষতি করে।
নরসিংদী পূবালী জুট মিলস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ঢাকার চারপাশে অনেক অন্যান্য কারখানা মুক্তিযোদ্ধারা ধ্বংস করে। সমগ্র পাকিস্তানের জামাত-ই-ইসলামেরসহ-সভাপতিকে তারা ঢাকায় মিটিং চলাকালে হত্যা করে। তারা রূপগঞ্জ, জিনারদি ও ঘোড়াশাল এলাকায় কিছু সক্রিয় পাকসহযোগীদের হত্যা করে।
১৭/১৮ অগাস্ট রাতে যশোর জেলার শার্শার কাছাকাছি ছুটিপুরে একটি পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ১১ জন পাকসেনা হত্যা করে। তারা তাদের কাছ থেকে কিছু অস্ত্র এবং এক পদাতিক ওয়্যারলেস সেট জব্দ করে।
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
১৩ অগাস্ট গুলি বিনিময়ে ৪ পাকসৈন্য নিহত ও সাত জন আহত হয়।
১৫ অগাস্ট ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় সাত রাজাকার নিহত ও ১টি শট গান জব্দ হয়। গনমতি এলাকায় পাক সমর্থক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই পাক সমর্থকদের হত্যা করা হয়।
১৬ অগাস্ট অন্ধ মাছখরিয়া এলাকায় অতর্কিত গুলি বিনিময়ে ছয় পাকসেনা আহত হয়।
১৪ অগাস্ট জগতপুরে রাজাকার ক্যাম্পের উপর আক্রমণ চালিয়ে তিন রাজাকার হত্যা এবং একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৪ অগাস্ট ভাবাল দিঘিতে মুক্তিবাহিনী অতর্কিত আক্রমণ করে; এতে ৩ পাকসৈন্য নিহত ও ৪ জন আহত হয় ।
১৬ আগস্ট কাজিপাড়ায় আক্রমণে তিন পাকসৈন্য নিহত ও চার জন আহত হয়।
১৬ অগাস্ট বাহমানিয়া এলাকায় পাক প্যাট্রোলের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ পাকসেনা নিহত হয়।
১৫ অগাস্ট হিলি ও চরকির মধ্যে রেলওয়ে কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১৪ অগাস্ট রসুল বিল অভিযান চালিয়ে দুই পাকসহযোগী হত্যা করা হয়।
১৩ অগাস্ট ফার্সিপারা-আঁটুরা রাস্তা কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১৩ আগস্ট প্রথম হরিণ মারি এলাকায় মুক্তিবাহিনী এবং পাক বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৯ পাকসেনা নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
১৩ অগাস্ট আমঝুপু এলাকায় দুই রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৪ অগাস্ট চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর রাস্তায় দুটি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করা হয়।
১৪ আগস্ট নওগ্রাম ও চুয়াডাঙ্গার মধ্যে হাটপলিয়াতে অ্যামবুশে তিন রাজাকার হত্যা, চারটি রাইফেল উদ্ধার। একই এলাকায় একটি রাস্তা কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১১ থেকে ১৫ আগস্ট লেবুতলা এলাকায় ২ পাক সমর্থকদের হত্যা করা হয়।
১৩ অগাস্ট পান্তাপারা ও জীবন নগর এলাকায় অ্যামবুশে তিন রাজাকার নিহত হয়।
১৬ আগস্ট ঘনা গ্রামে একটি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের বাড়ি ধ্বংস করা হয় এবং এক পুলিশ দফাদার নিহত হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম সেক্টর
আগস্টের মাঝামাঝি ঢাকার কাছাকাছি কোথাও একটি সভায় সমগ্র পাক জামাত-ই ইসলাম দলের ভাইস প্রেসিডেন্টকে হত্যা করে মুক্তিবাহিনী।
১৪ অগাস্ট চৌদ্দগ্রাম এলাকায় পাক বাহিনীর উপর মর্টার আক্রমণে ছয় পাকসেনা নিহত হয়।
১২ অগাস্ট অ্যামবুশে রিকশা চলন্ত অবস্থায় অতর্কিতে আক্রমণে ১ জন পাকসেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়।
১৩ অগাস্ট একই এলাকায় অ্যামবুশে ছয় পাকসেনা নিহত হয়।
১৪ আগস্ট কোটেশ্বরে গুলী বিনিময়ে তিন পাকসৈন্য নিহত হয়।
১২ আগস্ট এক সক্রিয় পাকসহযোগী রূপগঞ্জ এলাকায় নিহত হয়।
১৪ আগস্ট পাক অবস্থান আনন্দপুর আক্রমণে তিন পাকসেনা নিহত হয়।
১২ আগস্ট রসুলপুর এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প অভিযান চালিয়ে ৫ রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৫ অগাস্ট সালদানদী পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ পাকসেনা হত্যা করা হয়।
১৩ অগাস্ট পাক অবস্থান মন্দভাগে মর্টার আক্রমণে তিন পাকসৈন্য নিহত ও একটি বাঙ্কার ধ্বংস হয়।
১৫ অগাস্ট একই এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় হয় ও দুই শত্রুসেনা হত্যা করা হয়।
১৫ অগাস্ট নালুয়া এলাকায় চলন্ত পাকসৈন্যদের উপর অতর্কিতে আক্রমণ ও ১০ জন আহত।
১৫ অগাস্ট মিরসরাই এলাকায় দুই রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৫ আগস্ট সাল্ধার বাজার পাক বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় ও দুই পাকসেনা নিহত হয়।
১২ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী নরসিংদী পূবালী জুট মিলস আগুন দেয় এবং এতে, প্রচুর ক্ষতি সাধন হয়।
১১ অগাস্ট ঘোড়াশাল এক পাকসহযোগী নিহত হয়।
১১ অগাস্ট সম্পূর্ণ ঢাকা-নরসিংদীর মধ্যে সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনী ওমরগাও গ্রামে পাক বাহিনী ও শান্তি কমিটির সভায় অভিযান চালায়। এতে, দুই পাকসেনা এবং ১০ রাজাকার নিহত হয়। কিছু গোলাবারুদ ও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১১ থেকে ১৬ আগস্টে সদরপুর এলাকায় গেরিলা কার্যক্রম চলে। এতে তিন পাকসৈন্য নিহত ও আট জন আহত হয়। সদরপুর এলাকায় ফেরি ধ্বংস করে মুক্তিবাহিনী তিন রাইফেল ও কিছু গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
১০ অগাস্ট পারামারি ঘাটে পাকসৈন্য ভর্তি তিনটি মোটর লঞ্চ আক্রমণে ২ টি লঞ্চ ডুবে যায় এবং ১৩ জন পাকসেনা আহত হয়।
১৫ আগস্ট তারাপুর ঘাট আক্রমণে সাত পাকসৈন্য ও ১২ রাজাকার নিহত হয়।
১৫ অগাস্ট পত্রখাইয়া পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে ২ জন আহত হয়।
১৫ আগস্ট অন্য একটিতে দুই পাকসেনা আহত হয়।
১২ অগাস্ট পুল তলা পাক অবস্থানে আক্রমণে এক পাকসৈন্য নিহত ও তিন জন আহত হয়।
একটি বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়।
১৫ আগস্ট ডাটির গাও এক পাকসৈন্য নিহত।
১৬ আগস্ট ভারতীয় সীমানার মধ্যে প্রবেশের চেষ্টায় ৫ পাকসৈন্য নিহত।
———————————————————————–
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর। মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন–১৯, আগস্ট
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
১৪ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী রংপুর মডেল হাইস্কুলে পাকসেনাদের ঘাঁটি মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে। এতে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।
১৭ অগাস্ট নাগেশ্বরবারী সেতু ধ্বংস করা হয়।
১৬ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ভামানিয়া এলাকায় পাক মিশ্র প্যাট্রোলে অতর্কিত আক্রমণ করে এবং ছয় সৈন্যকে হত্যা করে। ১ টি ১২ বোর বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
১৬ অগাস্ট কালাহারি এলাকায় রাজাকারের উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে মুক্তিবাহিনী। এতে, তিন রাজাকার নিহত হয়।
১০ অগাস্ট নওগাঁ এলাকায় ১ টি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করা হয়।
১৪ অগাস্ট পাকসৈন্যরা জোরপূর্বক কানসাট এলাকায় সাধারণ লোকদের সরিয়ে নিচ্ছিল। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৯ পাকসৈন্য ও ১৩ রাজাকার নিহত হয়। এতে মর্টার ব্যাবহার হয়।
১৬ অগাস্ট দিনাজপুর-ফুলবাড়ী রাস্তার কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১৭ আগস্ট পাক অবস্থান রামসাগরে অভিযান চালিয়ে ৩ পাকসেনা নিহত, ২ জন আহত। পাক বাহিনীর ২ টি যান ধ্বংস করা হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
১৮ আগস্ট মুক্তিবাহিনী গহনছড়াতে সাতটি পাট গুদাম জ্বালিয়ে দেয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১৫ অগাস্ট রামগড় এলাকায় অ্যামবুশে ৫ পাকসেনা নিহত হয়।
১৫ আগস্ট পাক অবস্থান হরিমঙ্গলে অভিযান চালিয়ে দুই কর্মকর্তাসহ ছয় সেনা নিহত হয়।
১২ আগস্ট বান্দুয়া দৌলতপুর এলাকায় আক্রমণে এক পাক সমর্থক নিহত ও মাইলনে ১ জন আহত হয়।
১২ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ফুলগাজী এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার টেলিফোন তার নষ্ট করে।
১৪ অগাস্ট পাক অবস্থান দলধরে অভিযান চালিয়ে একজন কর্মকর্তাসহ ১৫ জন আহত। একই এলাকায় আরেকটি লড়াইয়ে একই দিনে পাক বাহিনীর ৫ জন আহত।
১৬ আগস্ট নাগাইস এলাকায় পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে আট জন নিহত হয়।
১৫ আগস্ট একই এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে আক্রমণে ৫ জন নিহত হয়।
১৫ অগাস্ট হামাইলে ৩ জন শত্রুসেনা নিহত হয়।
১৩ অগাস্ট কটক এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে অভিযান ৫ পাকসেনা নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট বিবির বাজার পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে ছয় জন আহত। একই এলাকায় ওপর একটি আক্রমণে ২ পাকসেনা নিহত হয়।
১৪ অগাস্ট ফেনী-কুমিল্লা রাস্তায় চলন্ত পাক বাহিনীর উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণে ৫ পাকসৈন্য নিহত এবং একজন আহত। আরেকটি স্থানে দুটি টেলিগ্রাফের খুঁটি ধ্বংস ও এই এলাকায় বিভিন্ন স্থানে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১১ অগাস্ট পাক অবস্থান নয়নপুরে রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ২৩ পাকসেনা নিহত হয়।
১০ ও ১৫ আগস্টের মধ্যে মুক্তিবাহিনী ঢাকা এলাকায় প্রায় ১০ ডাকাত হত্যা করে। পাক বাহিনী লুট ও ধর্ষন করার জন্য এসব ডাকাতদের নিযুক্ত করেছিল।
১৪ অগাস্ট ৪০০০ মণ ধারণকারী নরসিংদীর একটি পাটকল পুড়িয়ে দেয় মুক্তিবাহিনী।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
ফেঞ্চুগঞ্জ গ্রেনেড ছুড়ে মুক্তিবাহিনী দুই রাজাকার হত্যা করে।
১৬ অগাস্ট বয়ারাইনারী এবং নান্নির মধ্যে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে। তারা বদর বাহিনী সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা এবং একই এলাকায় ৩ জন বদর বাহিনীর লোক হত্যা করে।
১৬ আগস্ট একটি পাক জিপে অতর্কিতে আক্রমণ করে ছয় পাকসৈন্য হত্যা করে।
১৭ অগাস্ট পাক অবস্থান আদিছড়া অভিযান চালিয়ে ১০ জন হতাহত হয়।
১০ অগাস্ট ফুলটন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জন নিহত করা হয়।
১৩ আগস্ট পাক বাহিনীর উপর ধামাই এলাকায় মাইন আক্রমণে মেজর কামাল ও দুই পাকসেনাকে হত্যা করা হয়।
১৬ আগস্ট টাঙ্গাটিলা-ছাতক গ্যাস পাইপ লাইন উড়িয়ে দেয়া হয়। এজন্য ১৬ ০ ১৭ আগস্ট ছাতকে কোন আলো ছিল না।
১৩ আগস্ট সাইল এলাকায় পাক প্যারা মিলিটারি গ্রুপ ২৫ টি ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, গ্রামবাসীদের উপর নির্যাতন করে, ধর্ষণ এবং লুটপাট করে।
১৭ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী কারিতলায় পাক অবস্থান আক্রমণ করে। এতে ২ পাকসেনারা, এক কুক এবং এক পাক সমর্থক নিহত হয়। একটি এলএমজি ধ্বংস হয়।
১৫ আগস্ট পাক অবস্থান বকশীগঞ্জএ আক্রমণে ৫ জন নিহত এবং দুটি যানবাহন ধ্বংস করা হয়।
দেরীতে প্রাপ্ত তথ্য মতে ৬ আগস্ট মুক্তিবাহিনী পাক পোস্ট বন্দরকটায় অভিযান চালিয়ে একজন কর্মকর্তাসহ ২০ জনকে আহত হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তরে মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন,
২০ শে আগস্ট
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের সকল সেক্টরে পাকসৈন্যদের উপর তাদের আক্রমণ অব্যহত রাখার কারনে ব্যাপক পাকসেনা হতাহত হয়।
নৌপথও তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়। মুক্তিবাহিনী সফল ভাবে পাকসেনাদের নৌকা ধ্বংস করে দেয়।
১০ই আগস্ট মুক্তিবাহিনী মাটিকারা এলাকায় পাক বাহিনীর চারটি স্টিমারে অতর্কিত আক্রমণ করে। স্টিমারটি পালাতে চেষ্টা করলেও ব্যার্থ হয়। কিন্তু স্টিমারের এক সেনা কর্মকর্তা এবং ২০ জন লোক স্টিমারটি ফেলে রেখেই পালিয়ে যায়। সেখান থেকে মুক্তিবাহিনী ৫০০ বাক্সে গোলাবারুদ উদ্ধার করে ও পরে স্টিমারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
১২ আগস্ট একই এলাকায় মুক্তিবাহিনী পাকসৈন্যদের অ্যামবুশ করে। এতে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৩ আগস্ট আবারো এই এলাকায় এম্বুশ করে এবং ১৬ পাকসেনা নিহত হয়।
প্রতিবেদনে জানা যায় খুলনারতেরখাদায় মুক্তিবাহিনী সশস্ত্র রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধ নিযুক্ত হয়। সেখানে ২৬ জন রাজাকার নিহত এবং ৭ জন গুরুতরভাবে আহত হয়। জানা যায় পাকসেনারা তাদের পাঠায়। তারা কঞ্চফু হাই স্কুলে অবস্থান করছিল। তারা সেখানে লুটপাট ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ঘর পোড়ানোর শুরু করে। তারা এলাকার অন্যান্য মানুষের ঘরও পুড়িয়ে দেয়। এই তথ্য পেয়ে মুক্তিবাহিনী মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসেন এবং রাজাকারদের সাথে যুদ্ধ শুরু করে।
১৭ আগস্ট শ্যাম নগর থানায় অভিযান চালিয়ে ২ রাজাকার হত্যা করে এবং দুই রাইফেল (৩০৩) এবং ২০০ রাউন্ড গোলাবারুদ দখল করে নেয়।
১৫ ই আগস্ট পাকসৈন্যদের একটি লঞ্চে আক্রমণ করে। এতে, ৩০ জন পাকসেনা নিহত হয়। একই দিনে কপিল মুনি অঞ্চলে আরেকটি অ্যামবুশে ২৬ জন রাজাকার নিহত হয়।
বিবরণ নিচে দেওয়া হল:-
১৩ অগাস্ট কামাল পোখারি এলাকায় কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১৯ আগস্ট গোমাথি-খেতির একটি সেতু ধ্বংস করা হয়।
১৮ অগাস্ট দাদুলে ছয় পাকসৈন্য নিহত ও দু’জন আহত করা হয়।
১৮ অগাস্ট রায়গঞ্জ ও নাগেশ্বরী মধ্যে ২০০ গজ টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১৫ অগাস্ট দালমনিহাট কলেজে রাজাকার ও পাকসেনাদের স্বাধীনতা দিবস কার্যক্রমে আঘাত করে ২০ জনকে আহত করা হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
১৫ অগাস্ট বদখানা এলাকায় কালভার্ট ধ্বংস করা হয় ও এক পাক সমর্থক নিহত হয়।
১৫ অগাস্ট সাবদান এলাকায় মর্টার আক্রমণে ছয় জনের মৃত্যু হয় এবং ৯ জন আহত হয়।
১৪ অগাস্ট পাবদা এলাকায় সড়ক কালভার্ট ধ্বংস করা হয়।
১২ আগস্ট মাগুরায় গেরিলা আক্রমণে নাহাটায় ৫ রাজাকার নিহত হয়। ৫ টী রাইফেল জব্দ হয়। পাখুরিয়াতে তিন পাক সমর্থকদের হত্যা এবং একটি বেয়নেট জব্দ হয়।
১৫ অগাস্ট একটি লঞ্চে আক্রমণ করে ৩০ জন পাকসেনা নিহত করা হয়। একই দিনে কাঁপিলমনিতে ২৬ জন রাজাকার হত্যা করে।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলোভীবাজার সেক্টর
১৭ অগাস্ট রাধানগর অভিযান চালিয়ে ১১ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়।
১৯ আগস্ট পাচিম সাল্কনা এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে ১ পাকসেনা নিহত হয়।
১২ অগাস্ট মাটিকাটা অ্যামবুশে ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়।
১০ আগস্ট মাটিকাটা চারটি স্টিমার পাক কনভয় অতর্কিতে আক্রমণ। এক কর্মকর্তা এবং ২০ জন পালিয়ে যায়। ৫০০ বাক্সে গোলাবারুদ সংগৃহীত হয়। এবং স্টিমার আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
১৩ অগাস্ট মাটিকাটা য় আক্রমণে ষোল পাকসেনা নিহত করা হয়।
১৮ আগস্ট কাটিয়ামাড়ায় পাক প্যাট্রোল আক্রমণে দুই রাজাকার আহত হয়।
১৬ আগস্ট আলিনগরে ২০০ গজ তার বিচ্ছিন্ন করা হয়।
সুনামগঞ্জ-সিলেটে হাফ মাইল টেলিফোন তার ধ্বংস করা হয়।
গেরিলারা অসংখ্য বিদেশী জাহাজ ডুবিয়ে দেয়
মুজিবনগর আগস্ট, ২২, এক সপ্তাহে গেরিলারা বাংলাদেশের বিভিন্ন পোর্টে এক ডজনেরও বেশী বড় জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। এগুলো ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের জাহাজ। এগুলো অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহন করত এবং আরো কৌশলগত জিনিশপত্র আনা-নেয়া করত, যার মূল্য পাকসেনাদের কাছে অত্যন্ত বেশী ছিল।
যানা যায় সেখানে লাইটেনিং নামে একটি সোমালিয়ান জাহজ এবং আল আব্বাস নামে পাক বাহিনীর জাহাজ ছিল। এটির ওজন ছিল ১৫,০০০ টন। এটি তৈরি করতে প্রায় ১০ কোটি রুপির প্রয়োজন হয়েছে। ১৯৬৮ সালে সালে আইয়ুব খানের আমলে এটি চালু করা হয়েছিল।
সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও উচ্ছেদের মাধ্যমে যেকোন কার্যক্রম প্রতিরোধ করার জন্য জনগণ প্রস্তুত আছে। তাই ইসলামাবাদের সাথে সহায়তা করে পাঠানো যেকন সরঞ্জাম নিজ ঝুঁকিতে পাঠাতে বলা হয় বিভিন্ন দেশকে।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
২৩ শে আগস্ট
মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে নৌপথে প্রচুর আক্রমণ পরিচালনা করেছে। সেই সব গেরিলা অপারেশনের বর্ননা নিম্নে বর্নিত হল-
১৬ আগস্ট মুক্তিবাহিনী মংলা বন্দরে অপারেশন সম্পন্ন করে। ৬টি কার্গো শিপ ডুবে যায়-যার মধ্যে ২ টি আমেরিকান, ২ টি চীনা, জাপানি এবং এক পাকিস্তানি জাহাজ রয়েছে। এই জাহাজে পাকসেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহন করা হয়। নালিয়নের মুক্তিযোদ্ধারা ২ টি পাক বন দপ্তর দখল করে নিলেন। এছাড়াও ৮ টি রাইফেল (৩০৩), ২ টি রিভলবার ও ২৬ টি শট গান জব্দ করা হয়।
রাতে একই তারিখের ‘ লাইটনিং’ ও ‘ সলায়মান’ জাহাজ ডুবানো হয়। ১৫/১৬ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রচণ্ড কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়। আল-আব্বাস, ১৫০০০ টনের জাহাজ ডুবিয়ে দেয়। এই জাহাজে ১০ কোটি রুপি খরচ পড়েছিল। এটা ১৯৬৮ সালে আইয়ুব খানের সময় চালু হয়। ‘ফরমোছা’ নামে আরেকটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী নিমজ্জিত করে। জেটি ১৩তে তারা একটি কার্গো নিমজ্জিত করে।
১৫/১৬ আগস্ট রাতে ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রাস্তা র দাউদকান্দি ফেরিঘাটে গেরিলা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। মুক্তিবাহিনীর একটি ফেরী ডুবিয়ে দেয়। এতে ৮ টি বড় যানবাহন ঘরত। তারা স্টিমার ঘাট জেটি ও পন্টুন সম্পূর্ণ ধ্বংস করে। জ্বালানীর স্টোরেজ এবং বড় ড্রামস ধ্বংস করে। লঞ্চঘাট পন্টুন ও জেটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং এতে ১২ জন রাজাকার ও পুলিশ নিহত হয়।
১৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ হার্বারে ৩ টিজাহাজ ডুবে যায়। একটি বড় কয়লা স্টিমার কাছে ডুবে গিয়েছিল।
৭ থেকে ১৬ আগস্ট লাখ্য নদীর উপর ৩ টি বড় মোটর লঞ্চ ধ্বংস এবং ১৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়।
১৮ আগস্ট সিলেট জেলার দক্ষিণ দিরাই একটি স্টীমার ডুবে যায়।
১৩ আগস্ট চাতুল ফেরী ধ্বংস হয়।
১৫ আগস্ট সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ মহকুমায় সাঞ্চা থেকে পাক কার্গো লঞ্চ ও বার্জ জব্দ হয়। তারা এছাড়া এক কার্গো লঞ্চ, মোটর ৮ টি, টানেন মটর লঞ্চ ১ টি ও কার্গো লঞ্চ বাসুনারা জব্দ করে। মটর লঞ্চ ব্যবহৃত হচ্ছে টাগ এস্কোর্টের জন্য। দুটিতে সিমেন্ট দিয়ে ও ১ টিতে গম ছিল। ৫ টি খালি বার্জ ছিল। এগুলো গুমঘাঁটের দিকে যাচ্ছিল। এছাড়া দোকান, বৈদ্যুতিক পণ্য, খাদ্য উপাদান ছিল। ৩০০০ এমডি এস গম ভর্তি পাকসেনাদের জাহাজ সাঞ্চানাতে জব্দ হয়।
১৯/২০ আগস্ট রাতে রংপুর বর্ডার আউটপোস্ট আক্রমণ করা হয়। ২০ জন পাকসেনা আহত ও ২ তও বাঙলার ধ্বংস হয়।
১৯ আগস্ট শ্যাম নগরে আক্রমণে ১৬ জন আহত হয়। কিছু যান ধ্বংস হয়।
১৬ থেকে ১৮ আগস্ট মন্দভাগে সালদানদীতে পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০ পাকসেনা নিহত হয়।
১৯ আগস্ট আমালছিতে পাকসৈন্য ‘প্রচেষ্টা বানচাল এতে ১০ পাকসৈন্য, ২সহযোগী, ৮ পাক আধাসামরিক লোক নিহত হয়। আলামছি এখন মুক্তিবাহিনীর দখলে।
১৩ আগস্ট সিলেটের কাছাকাছি আনসার চেইনপ্স গ্রেনেড ছুড়ে; এতে, ১৩ পাকসেনা নিহত হয়।
১৩ আগস্ট নেত্রকোনা মহকুমারকেন্দুয়া থানায় অভিযান চালিয়ে ৬ পাক পুলিশ হত্যা করা হয়। তারা ১৩ রাইফেল (৩০৩), ২ টি চীনা রাইফেল, ১৭ টি বেসামরিক বন্দুক এবং গোলাবারুদ জব্দ করে। তারা থানা এবং ২ টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
৮ আগস্ট পাকিস্তানের সৈন্য বহনকারী একটি বেসামরিক বাস ফেরী এলাকায় মাইনে উড়িয়ে দেয়। ২ জন জেসিওসহ ১৯ পাকসৈন্য নিহত হয় এবং ৩০ জন এই ঘটনায় আহত হয়।
বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের মহকুমার নরসিংদী ও শিবপুর মধ্যে একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
২৪ শে আগস্ট
১। ২১ আগস্ট মুক্তিবাহিনী কুমিল্লা সেক্টরের কানাস্থালায় পাকিস্তানি অবস্থানের উপর অভিযান চালিয়ে একজন কর্মকর্তাসহ ১৫ শত্রুসৈন্য হত্যা করে।
২। ১৬ আগস্ট মুক্তিবাহিনী কুমিল্লা সেক্টরের এলাকা মুরাদনগরে পাকিস্তানি সৈন্য অতর্কিতে আক্রমণ করে এক কর্মকর্তাসহ ৩০ শত্রুসৈন্য ৫ রাজাকার হত্যা করে এবং একটি রাইফেল ও কিছু চীনা গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
৩। সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ সাধারণ জনগণকে তাদের সাথে কাজে যোগদানের জন্য লিফলেট প্রচার করে। লিফলেটে বলায় হয় যে সেনাবাহিনী তাদের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। লিফলেটে আরও বলা হয় অবিলম্বে তাদের সেবা নিশ্চিত করা হবে যদি তারা যোগদান করেন।
৪। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের একজন মুখপাত্র বলেন কোন বাঙ্গালী শ্রমিক তাদের জুট মিলস ও অন্যান্য কারখানায় যোগদান করেনি। এম এল কর্তৃপক্ষ অধিকৃত এলাকার জুট মিলস এবং অন্যান্য কারখানা চালাতে শমিক পেলনা-তাই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে শ্রমিক আমদানি ছাড়া কিছু করার থাকল না। তিনি আরও বলেন বাঙ্গালী শ্রমিক তাদের জন্মভূমি থেকে হানাদার বাহিনীকে দূর করে ছাড়বে।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
২৪ শে আগস্ট
প্রতিবেদনে জানা যায় মুক্তিবাহিনী বিভিন্ন সেক্টরে এক অফিসারসহ ৮৪ জন পাকসেনা নিহত করে এবং ৫৪ জন পাকসৈন্য আহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনী ৪৯ জন রাজাকার হোটয়া এবং ৭ জন রাজাকারকে আহত হয়, ও ৮ প্রকার অস্ত্র দখল করে। তারা পাকসেনাদের একটি খাবারবাহী ও অন্যান্য সামগ্রী বহনকারী লঞ্চ দখল করে।
তাদের বিস্তারিত রিপোর্ট নিচে দেওয়া হল:-
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
২১ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ফুলতলা এলাকায় পাক বাহিনীর উপর অভিযান চালায়। এতে, ৩ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়।
২০ আগস্ট বেলবাড়িতে একজন কর্মকর্তাসহ এবং ৯ জন নিহত হয় ও ৪ জন আহত হয়।
২১ আগস্ট মুক্তিবাহিনী ঠাকুরগাও ও রুহিতে ২০০ ফুট রেললাইন উড়িয়ে দেয়।
১৯ আগস্ট ১০ জন পাকসেনা নিহত হয়। চাক্রামে আরেকটি অভিযানে ছয় জন হতাহত হয় ৯ জন জখম হয়।
২১ অগাস্ট শান্তি বাহিনী সদস্যদের পাঁচটি ঘর অভিযান চালিয়ে এক ডবল বোর বন্দুক, চারটি সিঙ্গেল বোর বন্দুক এবং কিছু গোলাবারুদ জব্দ করে।
১৭ অগাস্ট পার্ভতিপুর ও ফুলবাড়ী রেলওয়ে কালভার্ট ধ্বংস করে।
২০ আগস্ট একই এলাকায় একটি টহল দল অ্যামবুশে পাক বাহিনীর চার জন আহত হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
২২ আগস্ট ৩ পাকসেনা নিহত এবং পাঁচ জন আহত হয়।
২১ অগাস্ট প্রাগপুরে দুটি হত্যা ও তিন জনকে আহত হয়।
১৮ থেকে ১৯ আগস্ট যশোর এলাকায় সফল গেরিলা হামলা চালিয়ে তারা চন্দ্রপাড়ায় ২ জনকে হত্যা করে। ভবতপুরে রেলের দুই বগি লাইনচ্যুত করা হয় এবং মাথুরাপুরে রাজাকারদের আক্রমণ করা হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
১৬ আগস্ট দুটি স্টিমার ও চাঁদপুরে পণ্যসম্ভার বহন করা একটি বড় বজরা ডুবিয়ে দেয়া হয়।
মুক্তিবাহিনী লঞ্চঘাট ও পন্টুন সেতু ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১৮ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী দুটি বৈদ্যুতিক পাইলন এবং সাহাজিবাজার ও সিলেটের মধ্যে বিদ্যুতের লাইন ধ্বংস করে।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১৯ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী কামালপুরের কাছাকাছি বলদ্মুড়া সড়ক সেতু ধ্বংস করে ৩ পাহারারত ৫ রাজাকারকে হত্যা করে।
১৯ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী কুশিয়ারা নদীর উত্তরে বাঁধ ধ্বংস করে।
২০ অগাস্ট বিজয়পুরে পাক পোস্ট ৫ জন পাকসেনা হত্যা এবং ৫ টি বাংকার ধ্বংস হয়।
১৪ থেকে ১৬ আগস্ট ময়মনসিংহ-ফুলবাড়িয়া রাস্তায় দাপুনিরে যুদ্ধে ১০ পাকসৈন্য নিহত ও চার জন আহত হয়। মুক্তিবাহিনী দাপুনির সেতুটি ধ্বংস করে।
২০ আগস্টে কামালপুরে অ্যামবুশে ১ জন পাকসেনা নিহত হয়।
২১ আগস্ট তানটার নামে এক পাক অবস্থানে অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী দশ জন পাকসৈন্য হত্যা করে।
১৪ এবং ১৬ আগস্ট থেকে অ্যাকুয়া ব্রিজে পাক প্রহরীদের দিকে গ্রেনেড ছুড়ে ২ জন শত্রুসেনা হত্যা করে।
১৯ অগাস্ট লাঙলাতে পাকসৈন্যদের উপর অতর্কিত আক্রমণে দুই জন শত্রুসেনা আহত হয়।
১৯ অগাস্ট বড়লেখাতে দুই পাকসেনা নিহত এবং দু’জন আহত হয়। কাছাকাছি পাক অবস্থান ছোটা লাদাখে অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী এক রাজাকার হত্যা করে।
২১ আগস্ট আমালসিদ এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় শুরু হলে চার পাকসৈন্য নিহত হয়।
১৯ অগাস্ট শুটার কান্দির কাছাকাছি ফাইলাপুরে দুই পাকসেনা ও দুই পাক সমর্থকদের হত্যা করা হয়।
২০ আগস্ট রায়গ্রান এলাকায় পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে এক পাকসৈন্য নিহত ও দুই জন আহত হয়েছে।
২১ অগাস্ট ঢাকা থেকে সিলেট গামী খাদ্য ও অন্যন্য মাল বাহী একটি কার্গো চাঁদপুরে জন্দ হয়। এর ধারণ ক্ষমতা ১২৫ টন। ক্রু ছিলেন ৯ জন। আনুমানিক পণ্য মূল্য প্রায় ৮৫০০০ টাকা।
১৯ অগাস্ট জাঁকিব বাড়ি বাজারে অভিযান চালিয়ে ১২ রাজাকার হত্যা করা হয়।
২৫ আগস্ট মালিক বাড়িতে ১৬ রাজাকার নিহত হয়।
২৬ জুলাই ভালুবাতে অভিযান চালিয়ে চার জন পাকসেনা হত্যা করা হয়।
২৭ জুলাই মুক্তিবাহিনী আঙ্গরগারাতে অভিযান চালিয়ে চার রাজাকার হত্যা করে।
১৫ অগাস্ট ময়মনসিংহ এ পুলিশ লাইনে গ্রেনেড ছোড়ায় এক পুলিশ নিহত ও তিন জন আহত হয়।
১৬ আগস্ট লক্ষ্মীপুর রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর এনকাউন্টারে তিন জন শত্রুসেনার মৃত্যু হয় এবং সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়।
১৪ অগাস্ট তারাকান্দা বাজারে সাত রাজাকার নিহত ও চার জন আহত হয়। ৩ টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
২০ অগাস্ট হালুয়াঘাট ও টেলিখালির মধ্যে টেলিফোন লাইন নষ্ট করা হয়।
২১ আগস্ট ও ২২ আগস্ট কামালপুর-বকশীগঞ্জের মধ্যে টেলিফোন লাইন নষ্ট করা হয়।
২২ অগাস্ট চালিপাড়ায় পাক বাহিনীর একটি নৌকার উপর মর্টার দিয়ে আক্রমণ করে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। তানটারে আক্রমণে ১৬ জন পাকসৈন্য নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
২৫ শে আগস্ট
মুক্তিবাহিনী সব খাতে তাদের গেরিলা অপারেশন করে যাচ্ছে এবং পাকসেনা, রাজাকার ও তাদের দোসরদের মারাত্মক ক্ষতি করে যাচ্ছিল। তথ্য থেকে জানা যায় ২ কর্মকর্তাসহ ১০২ পাকসেনা নিহত এবং ১৯ জন পাকসেনা আহত হয়েছে। এছাড়া ৪৯ রাজাকার নিহত এবং ৬সহযোগীকে বন্দী করা হয়েছে। অধিকৃত এলাকার পাঁচটি স্থানে টেলিফোন তার ধ্বংস বা ৫ টি সড়ক সেতু ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য সাফল্য নীচে বিবৃত করা হয়:
১৪, ১৫ ও ১৭ আগস্ট খুলনা জেলার কাবাল বাড়ি, ফেতুয়া, হাজীপুর, তালা ও পাইকগাছা অপারেশন সম্পন্ন হয়। এই লড়াইয়ে কালাবারি ২৫ রাজাকার, ফেতুয়া ১৫ রাজাকার, ও হাজীপুর এলাকায় ৩ রাজাকার ও পাক সমর্থক নিহত হয়। তালা ও পাইকগাছা বিমুক্ত হয়েছে বলে রিপোর্ট করা হয়।
২১ আগস্ট নোয়াখালীর খাঁয়ের বাজারে এবং লক্ষ্মীপুর থেকে শত্রুদের পিছু হটিয়ে দেয়া হয়।
২১ আগস্ট যশোর জেলার নোয়াপাড়ায় আট জন হতাহত হয়। পরে তারা এই এলাকা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
২১ আগস্ট আয়েদপুর এলাকা শত্রুমুক্ত হয়।
৮ আগস্ট রাতে পাঞ্জাবি সৈন্য ও পাঠান সৈন্যদের মাঝে ভূরুঙ্গামারী এলাকায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পাঞ্জাবি বাহিনী একজন পাঠান অধিনায়ককে এরেস্ট করে।
রংপুর–দিনাজপুর–রাজশাহী সেক্টর
১৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনী ফুলবাড়ী-পাহাড়ী ট্র্যাকে রেলওয়ে কালভার্ট ও দুই টি টেলিগ্রাফের খুঁটি ধ্বংস করে।
২১ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ফুলতলা-ঠাকুরগাঁও রাস্তার উপর সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
২০ অগাস্ট কুড়িগ্রাম এলাকায় ওয়াপদা কর্মকর্তা কলোনিতে আক্রমণ করে তিন পাক সমর্থকদের (অফিসার) হত্যা করে।
২২ আগস্ট কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট এলাকায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত করে।
২০ অগাস্ট নাগেশ্বরী-ধানি গাগ্লা এলাকায় দুটি সড়ক সেতু ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়।
২২ আগস্ট রাত্নাই সেতু মহাইঘাটে রেললাইন উড়িয়ে দেয়া হয়।
১৮ আগস্ট রাতে ভূরুঙ্গামারী এলাকায় টহল রত পাঞ্জাবি এবং পাঠান বাহিনীর মধ্যে বিতর্ক হয়। পাঠান ক্যাপ্টেন এরেস্ট হন।
৬ আগস্ট সুখান পুকুরের কাছাকাছি দুটি কালভার্ট ধ্বংস এবং গাবতলীর কাছাকাছি এক পাকবাহিনী জিপে অতর্কিতে আক্রমণ করা হয়। এবং ৭ পাকসেনা হতাহত হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
৭ ও ১৩ আগস্ট এর মধ্যে ঝিঙার গাছা এলাকায় অনেক গেরিলা অভিযান সম্পন্ন করা হয়। তারা আজিরপুরে ১ পাকসেনা হত্যা করে। মুহম্মদপুর এলাকায় অ্যামবুশে দুই জন পাকসেনা নিহত হয়। তারা আম্রিতবাজারে ইউনিয়ন পরিষদ অফিস এবং পোস্ট অফিস জ্বালিয়ে দেয় এবং সিল ও নথি উদ্ধার করে।
২২ আগস্ট কাশিম্পুরে ৫ পাকসেনা নিহত হয়।
স্থানীয় প্রতিরোধ গ্রুপ এবং মুক্তিবাহিনী নিম্নলিখিত কর্ম সম্পন্ন করে-
১৪ আগস্ট তারা ২৫ জন রাজাকার হত্যা করে। ১৫ আগস্টে তারা ফেতুয়াতে ১৫ রাজাকার হত্যা করে। ১৭ আগস্ট তারা হাজিপুরে ১ পাক সমর্থক ও ৩ রাজাকার হত্যা করে। এটা জানা যায় যে তালা ও পাইকগাছা মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
আমবাড়িয়া এলাকায় ১০ আগস্ট ৩ টি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করা হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
২০ অগাস্ট ছাগলনাইয়া-শুভপুরে মাইনের বিস্ফোরণে পাক যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২০ অগাস্ট ছয় ঘরিয়া এলাকায় পাকসৈন্য বাহী দুই পাক বেসামরিক যানবাহন গ্রেনেড আক্রান্ত হয়। এতে ২ পাকসৈন্য আহত এবং যানবাহন ক্ষতি হয়।
১৮ আগস্ট আনন্দ পূর দক্ষিণে তিন পাকসেনা নিহত এবং ২ জন আহত হয়। ১৯ আগস্ট একই স্থানে আক্রমণে ৫ জন আহত হয়।
১৭ আগস্ট কানাস্থালাতা এলাকায় আক্রমণে ২ জন পাকসেনা নিহত হয়।
১৯ অগাস্ট কানস্থ লতা এলাকায় অ্যামবুশে ২ পাকসৈন্য নিহত ও ১ জন আহত হয়।
২০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১১ পাকসেনা হত্যা করে। ২১ আগস্ট আবার একই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫ পাকসেনাদল হত্যা করে একজন অফিসারসহ। ফলে পাকসেনারা খেইস বাজার এবং লক্ষ্মীপুর থেকে দূরে বিতাড়িত হয়।
২১ আগস্ট নোয়াপাড়া এলাকায় পাক বাহিনীর ৮ জন হতাহত হয় ও পরে তারা অবস্থান থেকে সরে যায়।
১৭ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী ইলিয়টগঞ্জের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানকে হত্যা করে।
১৬ অগাস্ট মুরাদ নগরে একটি দেশী নৌকায় আক্রমণে একজন কর্মকর্তা এবং ৫ রাজাকারসহ ত্রিশ পাকসৈন্য নিহত হয়। তারা একটি রাইফেল ও কিছু চীনা গোলাবারুদ দখল করে।
২১ আগস্ট রঘুরাম্পুরে ২০০ গজ টেলিফোন তার নষ্ট করা হয়।
২০ আগস্ট উশাম্পুরে মাইনে এক পাকসেনা নিহত ও ১ জন আহত হয়।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
কালীঘাট এলাকায় ২০ আগস্ট ২ পাকসেনা হত্যা ও তিন জন আহত হয়।
২১ অগাস্ট অ্যামবুশে ৩ জন আনসার আহত হয়।
২১ অগাস্ট ব্রহ্ম বাজার ২০০ গজ টেলিফোন লাইন ধ্বংস কর হয়।
আয়েদপুরে ৮ বর্গ মাইল এলাকায় থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হয়।
২২ অগাস্ট রহিম পুরে দুই পাকসেনা নিহত এবং এক জন আহত হয়
২২ অগাস্ট চরবাঙ্গালীতে মাইন বিস্ফোরণে এক রাজাকার নিহত হয়।
২৩ আগস্ট জামালপুর-বকশীগঞ্জ ও হালুয়াঘাঁট-টেলিখালির মধ্যে টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়।
২২ আগস্ট তানটার এলাকায় পাক চৌকি সমেত এলাকা আক্রমণে ২ পাকসৈন্য আহত হয়।
২০ আগস্ট ও ২১ আগস্ট টাঙাইলে আক্রমণে দুই পাকসেনা নিহত এবং চার জন আহত হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
২৬ শে আগস্ট
মুক্তিবাহিনীরা সব খাতে তাদের গেরিলা কার্যক্রম বজায় রেখেছে। তারা পাক বাহিনী, রাজাকার ওসহযোগীদের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি করছে।
তাদের কিছু প্রশংসনীয় এবং বীরত্বপূর্ণ কার্যক্রম নিম্নে দেওয়া হল:-
১। ২২ আগস্ট অনিয়মিতসহ দুই পাক প্লাটুন ভামানিয়াতে মুক্তিবাহিনীর উপর হামলা করার চেষ্টা করে। এতে এক মেজর ও আনসারসহ ২৫ জন হতাহত হয়। পরবর্তীতে ২৬ আগস্ট তারা সৈন্য প্রত্যাহার করে। একই এলাকায় মাইনে একটি জিপ বিস্ফোরিত হয়। ৩ জন পাকসেনা নিহত এবং ২ জন আহত হয়েছে।
২। ২২ আগস্ট পাখুরিয়া স্কুল-যেখানে ২ প্লাটুন পাকসেনা ছিল-সেখানে আক্রমণ করা হয়। ৪৫ জন পাকসেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। স্কুল ভবনের ক্ষতি হয়।
৩। ২৪ আগস্ট মৃধার বাজারে অ্যামবুশে ৬ জন জখম হয়। প্রতিশোধমূলকভাবে তারা বেসামরিক ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। ২১ আগস্ট অ্যামবুশে ৭ জন পাকসেনা নিহত ও ৪ জন আহত হয়। অবশিষ্ট সৈন্য পার্শবর্তী ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
৪। বৈদ্যুতিক পাইলন না থাকায় সিলেট শহরে একটি অংশ বিদ্যুৎহীন আছে। ১৫ আগস্ট ছাতক ও সিলেটে আরও ২ টি পাইলন ধ্বংস করা হয়।
৫। একটি নিশ্চিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায় সিলেটে নাগরিক হাসপাতালে প্রায় ১৫০ জন আহত রাজাকার চিকিত্সা নিচ্ছে। এই হাসপাতালে প্রচন্ডভাবে পাকসৈন্য দ্বারা সুরক্ষিত।
৬। পাক কর্তৃপক্ষ ‘ঈগল ফোর্স ‘ নামে যশোরে একটি নতুন সংগঠন করেছে বলে জানা গেছে
৭। ২২ আগস্ট অভয় এলাকায় এম্বুশে ৩ টি পাক পেট্রোল পোস্ট আক্রান্ত হয়। দুটি পাক নৌকা ডুবে যায়। ১৫ জন পাকসৈন্য নিহত হয়।
মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম নিচে দেওয়া হল:-
২২ অগাস্ট রাত্নাই ও মোঘলাহাটে রেললাইন মেরামতের সময় দুই রাজাকার ও দুই শ্রমিক নিহত হয়। ২২ অগাস্ট মোঘলাহাটে মুক্তিবাহিনী পাক সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৫ সমর্থক হত্যা করে।
১৭ আগস্ট ওয়েস্ট ভুরুঙ্গামারী পাক প্যাট্রোল আক্রমণে এক পাকসৈন্য নিহত এবং ৫ জন আহত হয়।
১৮ আগস্ট আন্ধারিঝার খামার এ চার জন পাকসেনা নিহত হয়।
১৮ অগাস্ট আন্ধারিঝার খামার এবং লালমনিরহাটের মধ্যে প্রায় ২০০ গজ টেলিফোন তার ছিন্ন করে।
২২ আগস্ট বড়বাড়ি তীর্ণাই সেতু ধ্বংস করা হয়।
২১ অগাস্ট বাদ্মিসএলাকায় ছয় পাকসেনা নিহত এবং চার জন আহত করা হয়।
২২ অগাস্ট যাবার হাট পাকসৈন্য ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা এবং ১০ জন আহত করা হয়।
১৯ অগাস্ট বারাতে এক শান্তি কমিটি সদস্য এবং বাগধানিতে আরেক সদস্য নিহত হয়।
২২ অগাস্ট বসুয়া এলাকায় মুক্তিবাহিনী গেরিলা আক্রমণ চালায়; এতে চার রাজাকার নিহত এবং দুই পিস কমিটির সদস্য বন্দী হয়। তিনটি রাইফেল ও দুটি বন্দুক জব্দ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ অফিস জ্বালিয়ে দেয়া হয় এবং ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তার দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।
২৩ অগাস্ট বিদ্যাধরপুরে ৫ পাকসেনা নিহত এবং সাত জন আহত হয়। এক পাক সমর্থকও নিহত হয়।
১ থেকে ১৩ আগস্টে ফরিদপুরে গেরিলা কার্যক্রম সম্পন্ন। তারা কামালপুরে মুসলিম লীগের সমাবেশে ২০ পাকসেনা হত্যা করে। কাওলিকান্দার কাছাকাছি দিগনগরে পুলিশ স্টেশন ও রাজাকার কোর্ট পুড়িয়ে দেয়। তারা চার রাজাকার নিহত এবং ১৩ রাইফেল ও একটি বৃহৎ পরিমাণ গোলাবারুদের জব্দ করে।
২১ অগাস্ট তারা কিছু গোলাবারুদের সঙ্গে দুটি রাইফেল জব্দ করে। ১৭ অগাস্ট শ্যামনগর থানা অভিযান চালিয়ে দুই রাজাকার হত্যা করে। পাক পোস্ট সিক্রির অভিযান চালিয়ে ৫ জন হতাহত হয়।
১৮ আগস্ট কায়েমকলায় ১ রাজাকার ও দিয়ারাতে শান্তি বাহিনী চেয়ারম্যানকে হত্যা করে।
২৩ অগাস্ট মীরগঞ্জ অভিযান চালিয়ে ৫ পাকসৈন্য হত্যা করা হয়।
২২ অগাস্ট বিদ্যাধরপুরে ফেরী ধ্বংস করা হয়।
১২ আগস্ট বোয়ালিয়াতে মুসলিম লীগ নেতা হত্যা করা হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায় যে, ঈগল বাহিনী নামে একটি নতুন দল গঠন করা হয়েছে এবং যশোর এর কাজ চলবে।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
২০ আগস্ট সোনাগাজিতে সেনা বহনকারী তিনটি পাক যানবাহন আক্রমণে ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২১ আগস্ট মধুগ্রামে ২ রাজাকার নিহত হয়।
২১ অগাস্ট সোনাগাজী এলাকায় রাজাকারসহ ২০ পাকসেনা নিহত করা হয়।
২১ অগাস্ট মীরধরবাজারে সাত পাকসেনা নিহত এবং চার জন আহত হয়
২৪ অগাস্ট প্রতিশোধমূলক হিসেবে পাকসৈন্যরা বেসামরিক ঘর পুড়িয়ে দেয়। ৬ জনকে হত্যা করে।
১৮ অগাস্ট চানগাজি বাজারে চার পাকসেনা নিহত হয়।
২১ অগাস্ট দেবীপুরে অ্যামবুশে চার পাকসেনা নিহত করা হয়।
১৯ আগস্ট রাজুরিয়াতে সাত পাকসৈন্য নিহত হয়।
২০ অগাস্ট মুক্তিবাহিনী এলাকায় তিন রাজাকার হত্যা করে।
২১ আগস্ট নোয়াপারা পাক অবস্থানে ছয় জন পাকসেনা নিহত হয়।
২১ অগাস্ট শ্রীপুরে এক রাজাকার হত্যা ও ১ জন আহত ও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৮ অগাস্ট রামশিরাবরি এলাকায় মুক্তিবাহিনী পাক বাহিনীর উপর মর্টার নিক্ষেপ করলে ৮ জন পাকসেনা নিহত এবং ২৪ জন আহত হয়।
১৫ আগস্ট চার্নাল এলাকায় পাক প্যাট্রোলে অতর্কিতে আক্রমণে ৩ জন আহত হয়।
১৬ আগস্ট একই এলাকায় মুক্তিবাহিনী অতর্কিত হামল করলে আট পাকসৈন্য নিহত হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় চট্টগ্রামে ১৬ আগস্ট আল আব্বাস নামক ১৫০০০ টন ধারণ ক্ষমতার একটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী ডুবিয়ে দেয়। আরেকটি প্রায় ১২৫০০ টন ধারণক্ষমতা পাক আর্মীদের জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ বহনকারী জাহাজ ডুবিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও ৩ টি বৃহৎ পণ্যসম্ভার বার্জ ডুবিয়ে দেয়া হয়।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলভীবাজার সেক্টর
১৮ অগাস্ট চানু-শমসেরনগর রাস্তার সেতু ধ্বংস করা হয়। একই এলাকায় পাকসৈন্য বহনকারী এক জিপে অতর্কিত আক্রমণ করে দুই জন পাকসেনাকে আহত করা হয়।
২৩ অগাস্ট বর্নিতে পাক বাহিনীর আটটি দেশী নৌকা জব্দ করা হয়।
১৫ অগাস্ট ছাতক ও সিলেটের মধ্যে দুটি পাইলন ধ্বংস করে মুক্তিবাহিনী। পাইলন মেরামতের অধীনে ছিল; তাই সিলেটের একটি অংশ বিদ্যুৎ ছাড়া ছিল।
নিশ্চিত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় ১৫০ জন আহত রাজাকার সিলেটে নাগরিক হাসপাতালে চিকিত্সা পাচ্ছেন। সিলেটে অবস্থিত এই হাসপাতাল প্রচন্ডভাবে পাকসৈন্য দ্বারা সুরক্ষিত হয়।
২৩ অগাস্ট লরবাং আরসিসি সেতুর ৪০ ফুট দীর্ঘ দুটি স্তম্ভ উড়িয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ করলে আট রাজাকার পালিয়ে যায়।
২৪ আগস্ট মুক্তিবাহিনী নাকুচইতাল-আহমেদনগর এবং হালুয়াঘাট-চিখালির মধ্যাকার টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
২৩ অগাস্ট আটগ্রাম এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে অভিজান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ৩ জন আনসার হত্যা করে।
২১ অগাস্ট সুলতানপুর অ্যামবুশে দুই আনসার নিহত ও এক পাকসৈন্য আহত হয়।
১৮ অগাস্ট পূর্বধলায় শান্তি কমিটির দুই সদস্য নিহত হয়।
১৯ আগস্ট আতাপাড়া থানায় মুক্তিবাহিনী ৩ ঘন্টা ধরে অভিযান চালানোর পর সেটি দখল করে, ৯ রাজাকার হত্যা করে। পুলিশ স্টেশনের কমান্ডিং অফিসারের আত্তসমর্পন করে এবং মুক্তিবাহিনী ২২ টি রাইফেল জব্দ করে। একই দিনে আতাপারা পোস্ট অফিস ধ্বংস এবং ডাকঘর থেকে চার টেলিফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
২০ অগাস্ট আতাপারায় শান্তি কমিটির এক পাক আহ্বায়ক ও শান্তি কমিটির এক সচিব নিহত হয়।
২১ অগাস্ট বকশীগঞ্জ চারুয়া বাজারে চার বদর বাহিনী সদস্য, আট পাক সমর্থক এবং এক পাক পুলিশ ইন্সপেক্টর নিহত হয়।
বাংলাদেশ ওয়ার নিউজ
মুজিবনগর
২৮ শে আগস্ট
কুমিল্লা সেক্টর: দখলদার বাহিনীর জন্য মৃত্যু ফাঁদ
প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী গেরিলা ও কমান্ডো আক্রমণ প্রতিনিয়ত বাড়ছিল। এখন সরাসরি আঘাতের সময়। গত কয়েক দিনের মধ্যে প্রায় ৪ কর্মকর্তা এবং ২০০ ও আর এস মারা যায়। এছাড়া প্রচুর আহত হয়েছে। সংবাদদাতা থেকে পৌঁছনো প্রতিবেদনে জানা যায় দাউদকান্দিতে ৮ টি ভারী যানবাহন বহন সক্ষম একটি ফেরি ধ্বংস করা হয়। ফেরিঘাটে, স্টিমার ঘাট, জেটি ও পন্টুন, জ্বালানি ২৩/২৪ আগস্ট রাতে ধ্বংস করা হয়। ১২ রাজাকারদ নিহত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশও নিহত হয়।
গত ২ মাস মুক্তিবাহিনী সালদানদী এলাকায় প্রায় ২০০ বর্গমাইল এলাকা দখলে রাখে। এখানে পাক হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে চরম শাস্তি পায়। এখানে শত্রু সর্বোচ্চ হতাহতের রেকর্ড গড়ে। কয়েকজন অফিসারসহ প্রায় ১৫০০ জন হতাহত হয় এই এলাকায়। মুক্তিবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে কম। শেষ মানুষের শেষ বুলেট পর্যন্ত এই অবস্থান ধরে রাখা হবে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মতে গেরিলাদের কাজ বাংলাদেশের অনেক ভিতরেও চলতে থাকে। টাঙ্গাইলে সম্প্রতি এক দুর্ঘটনায় ২ পাকসৈন্য নিহত ও চার জন আহত হয়েছে। পরশুরাম থানা ফেনী মহকুমার সালদার ও সুবের বাজারে অপর একটি ঘটনায় মুক্তিবাহিনী শত্রুর উপর সাহসী আক্রমণ করে। ১ জন অফিসার ও ১৫ জন ও আর এস নিহত হয়। হানাদার বাহিনী ফিরে গেলে মুক্তিবাহিনী “জয় বাংলা” স্লোগান দিতে থাকে বাংলাদেশের পতাকা তুলে।
এতে প্রমাণিত হয় পশ্চিম পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর লড়াইয়ের যোগ্যতা এখন পাকা পোক্ত।
—সৌজন্য-বাংলাদেশ আর্কাইভস, নিউজ ও ফিচার সার্ভিস।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর
মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
৩০ শে আগস্ট
বিলম্বিত খবরে প্রকাশ-১৫ ও ১৬ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম বন্দরের সাত বড় জাহাজ এবং দুটি বার্জ মুক্তিবাহিনী গেরিলা আক্রমণে পানিতে ডুবে যায়।
১। এতে পাকসেনাদের মনোবল এতোটাই ভারাক্রান্ত হয় যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ১৮ আগস্ট, সেটি দেখতে পোর্ট পরিদর্শণে যান। তিনি সে সময়ে বন্দর এলাকায় ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ন্যাভাল অফিসার ও ধ্বংসের সময় দায়িত্বরত সব সেন্ট্রিকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। ১৩ নং জেটির বিপরীতে একটি বজরা ডুবিয়ে পোর্ট অবরুদ্ধ করা হয়। পুরো এলাকায় কার্ফু জারি করে রাখা হয়।
২। ঢাকা থেকে প্রাপ্তি বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১১ ও ১৪ ই আগস্টের মধ্যে ঢাকা সঙ্গীত কলেজ, সেগুনবাগিচায় অভিযানে ২ পাকসেনা নিহত ও ৫ জন আহত হয়।
৩। ১৩ আগস্ট রাতে পাকবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসে অভিযান চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবের সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিভাগের ১১ জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে আটক করা হয়।
৪। একটি প্রামাণিক উৎস থেকে জানা যায় ৮ হাজার ছাত্রের মাত্র ৩০ জন পরে ক্লাসে অংশ নেয়।
৫। জানা যায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৪৫০ জনের মাত্র ১ জন ক্লাসে আসে-যে ছিল পাকবাহিনীর মেজর ফরমান আলীর কন্যা।
৬। ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল লাইনে রেল কালভার্টের পাশ দিয়ে পাকসেনারা অনেক বাংকার গড়ে তুলেছে।
৭। ৭ আগস্ট রাতে পাকসৈন্য মতিঝিল কলোনি ও ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা আক্রমণ করে এবং প্রায় ৮০ ব্যক্তিকে বন্দি করে। তাদের হদিস আর জানা যায় নি।
—–সিল, পাবলিক রিলেশন অফিসার, বাংলাদেশ বাহিনী।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ দপ্তর
যুদ্ধ বুলেটিন
৩০ আগস্ট
মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকায় তাদের গেরিলা কার্যক্রম তীব্রতর করছে। তারা পাকসৈন্যদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। জলপথও গেরিলা কার্যক্রম সমান তীব্রতর হয়েছে।
আজকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক অফিসারসহ ১৪৬ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ৩ অফিসারসহ ৭৩ জন আহত হয়-অধিকৃত এলাকায়। ১ পাক সৈনিক বন্দীও আছে।
৪৬ রাজাকার নিহত হয়েছে এবং ২১ পাক পুলিশসহ ২৬ জন ধরা হয়েছে। তারা তাদের অপারেশনের সময় বিভিন্ন ধরনের ৩৪ প্রকার অস্ত্র জব্দ করে। তারা ৪ স্থানে সড়ক সেতু, ২ স্থানে রেল সেতু, ২ স্থানে টেলিফোনের খুঁটি ধ্বংস এবং রেললাইন সরিয়েছে। ৪ জায়গায় টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে।
পাঞ্জাবি মেজর ও ক্যাপ্টেন বেলুচীর বিবাদ ও তথ্যে আসে। লুঠ বণ্টন নিয়ে এক পাঞ্জাবি মেজর ও একজন বেলুচী ক্যাপ্টেন মধ্যে লড়াইয়ের পরে তা সৈন্যদের মধ্যে ছড়ায়। এটি ঘটেছে ৮ আগস্ট। এই সংঘর্ষে পাঞ্জাবি দিকে ৬৫ জন নিহত এবং ৪৫ জন আহত এবং বেলুচী দিকে ১০ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়।
অন্য রিপোর্টে জানা যায়, ৯ আগস্ট মনহরদি থানার আক্রমণে ১ অফিসারসহ ২১ পুলিশ সদস্যদের বন্দী করা হয়। ১৫ টি রাইফেল জব্দ করা হয়। ১০ আগস্ট একটি পাকবাহিনী প্যাট্রোল অতর্কিতে আক্রমণ করে ২ জন আহত হয়।
চরগ্রানে রেল ব্রিজ ধ্বংসের জন্য লাটু এবং সরলেখার মধ্যে রেল যোগাযোগ নষ্ট হয়। ঢাকায় পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের মুক্তিবাহিনীর কারণে ব্যাবসা চালিয়ে যেতে অসুবিধা হয়। তাই তারা তাদের দোকান ও স্থাপনা বন্ধ করে পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যেতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
অবাঙালি পাক সমর্থকরা মুক্তিবাহিনীর ভয়ে সন্ধ্যায় তাদের ঘর থেকে বের হয়না। ফলে তাদের মৃত্যু হার কমে গেছে।
রংপুর–দিনাজপুর রাজশাহী সেক্টর
১৬ আগস্ট মুঘলহাটে দুই পাকসেনা নিহত এবং প্রচুর আহত হয়েছে।
১৬ অগাস্ট চারার হাটে দুই রাজাকার হত্যা ও ৭ জন আহত কর হয়।
১৭ আগস্ট রামপুরে চার পাক বাহিনী হত্যা করা হয়।
১৭ আগস্ট রানিসন্ধাইলে ৫ জন পাক বাহিনীর সৈন্য হতাহত হয়।
১৭ আগস্ট চারাডাঙ্গিতে অভিযান চালিয়ে দুই জন পাকসেনা হত্যা করা হয়।
১৭ অগাস্ট গৌরীপুরের কাছাকাছি তিন পাকসৈন্য নিহত ও দু’জন আহত করা হয়।
১০ আগস্ট আদমদীঘি-ভরতপুর মধ্যে রেললাইন উড়িয়ে দেয়া হয়।
৯ আগস্ট আদমদীঘি পোস্ট অফিস আক্রমণে দুটি রাইফেল, দুটি ১২ বোর বন্দুক ও চার টি টেলিফোন সেট উদ্ধার করা হয়। এবং
৫ রাজাকার হত্যা করা হয়।
কুষ্টিয়া–যশোর–খুলনা সেক্টর
৫ আগস্ট সারদা রোড জংশনে চার পাকসেনা নিহত এবং তিন জন আহত হয়েছে।
১৫ অগাস্ট লালপুর থানায় অভিযান চালিয়ে এক রাজাকার হত্যা ও একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।
১৬ আগস্ট রাম নগরে ছয় পাকসেনা নিহত এবং তিন জন আহত।
১৫ অগাস্ট ৫ রাজাকার বন্দী ও একটি সিঙ্গেল বোর বন্দুক উদ্ধার করা হয়।
১৫ আগস্ট জাগতির কাছে যশোর-ঘিগাছার সড়ক সেতু ধ্বংস করা হয়।
১৫ আগস্ট চৌগাছাতে টেলিফোনের খুঁটি উড়িয়ে দেয়া হয়।
৪ আগস্ট তারাই ছড়া ২৬ জন রাজাকার হত্যা করা হয়।
ঢাকা–কুমিল্লা–চট্টগ্রাম সেক্টর
সোনাগাজিতে ১৫ আগস্ট চার পাকসেনা কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি জিপ মাইনে আক্রান্ত হয়ে এক অফিসার নিহত হন। বাকি ৩ জন গুরুতর জখম হন।
১৫ আগস্ট বসন্তপুরে পাঁচ পাকসেনা নিহত এবং এক জন বন্দী হয় যখন রাজাকারদের উপর আক্রমণ করা হয়।
১৬ অগাস্ট অভিযান চালিয়ে বাঘের এলাকায় দুই রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৭ ই আগস্ট, সশিদল এলাকায় অ্যামবুশে বারো পাকসেনা নিহত হয়। ১৬ আগস্ট একই এলাকায় আরেকটি অ্যামবুশে চার পাকসেনা নিহত হয়।
১৬ অগাস্ট কোটনা এলাকায় ১০০ ফুট রেললাইন ধ্বংস করা হয়।
১৬ অগাস্ট চান্দলাতে ২ জন পাকসহযোগীরা হত্যা করে।
১৬ অগাস্ট নায়ানপুরে রেশন বহনকারী তিন পাক নৌকা অতর্কিতে আক্রমণ করা হয় এবং ১০ পাকসেনা নিহত হয়। নৌকা টি খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জুলাই ৮ থেকে ২৫ কাপাসিয়া থানার এলাকায় ১২ সক্রিয় পাকসহযোগীরা হত্যা করে।
২৮ জুলাই লক্ষ্য নদীতে পাক সৈন্যের জন্য রেশন বহনকারী দুটি লঞ্চ মুক্তিবাহিনী অতর্কিতে আক্রমণ করে ও ধ্বংস করে দেয়। রেশন নদীতে ডুবে ছিল। ৩১ জুলাই অন্য এক অভিযানে পাকসৈন্যদের জন্য রেশন বহনকারী একটি মটরলঞ্চ লাখ্যা নদীতে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে ধ্বংস করে।
৯ আগস্ট মনোহরদী থানায় অভিযান চলে। এতে কমান্ডিং অফিসারসহ ২১ পুলিশ সদস্য আটক ও ১৫ টি রাইফেল এবং গোলাবারুদ জব্দ হয়। দুই জন হতাহত হয়। ২ টি টেলিফোন খুঁটি ধ্বংস করা হয়।
২৮ মেগাবাইট নবীগঞ্জ থানায় মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে ১০০ কিমির উপর যোগাযোগ করতে সক্ষম ১ টি রেডিও সেট উদ্ধার করে।
ময়মনসিংহ–সিলেট–মৌলোভীবাজার সেক্টর
১১ আগস্ট সমশের নগর-কুর্মাছাড়া রাস্তায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে একটি সেতু ধ্বংস করা হয়।
১৮ অগাস্ট ছাড়্গ্রাম এলাকায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে রেলসেতু ধ্বংস হয়। এতে লাটু-বড়লেখার মধ্যে রেল যোগাযোগ ধ্বংস হয়।
১৭ অগাস্ট ছোটলেখায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে দুই পাকসেনা নিহত এবং তিন জন আহত হয়।
১৭ আগস্ট ছিলুয়া এলাকায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে একটি সড়ক সেতু ধ্বংস হয়।
১৩ অগাস্ট আলীনগর মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে এক সুবেদার এবং দুই সৈন্যকে হত্যা করে।
১১ আগস্ট কুলাউড়ার কাছাকাছি সড়ক সেতু মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ধ্বংস করা হয়।
১২ আগস্ট শমসেরনগর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১৩ অগাস্ট সুনামগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে তিনটি মোটরের ছয় বার্জ টাগ জব্দ ও চৌদ্দ কর্মী বন্দী করা হয়।
১৮ আগস্ট আহমেদনগর-কুন্নির মধ্যে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করা হয়।
১৭ আগস্ট ধলাপাড়া নদীতে পারাপারের সময় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে এক পাকসেনাদল হত্যা ও দু’জন আহত হয়।
১৭ আগস্ট একই এলাকায় পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানে ৫ জন আহত হয়।
১৭ অগাস্ট কামালপুর এলাকায় পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে হত্যা করা হয়।
১৫ অগাস্ট নাওকুচিতে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে সাত পাকসৈন্য নিহত ও চার জন আহত হয়। একটি ব্যারাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
১৮ অগাস্ট কানাইরঘাট এলাকায় আনসার অভিযান চালিয়ে দুই জনকে হত্যা করা হয়।
১৮ আগস্ট দিল্কুশাতে পাক চৌকি আক্রমনে এক জনের প্রাণনাশ ও দু’জন আহত হয়।
১৮ অগাস্ট বারামারিতে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে তিন রাজাকার নিহত ও তিন জন আহত হয়।
১৫ অগাস্ট ফুলপুর-ময়মনসিংহ রাস্তার উপর কুদাল ধরে ৩০ ফুট দীর্ঘ আরসিসি ব্রীজ ধ্বংস করা হয়।
১৬ অগাস্ট তারাকান্দার মধ্যে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৫ রাজাকার হত্যা করা হয় এবং সাত জন আহত হয়। তিনটি রাইফেল জব্দ করা হয়।
১৯ অগাস্ট তানটারে পাক অবস্থানে অভিযান চালালে কিছু পাকসৈন্য আহত হয়।
—-সিল, পিআরও
বাংলাদেশ ফোর্স।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৩১ আগস্ট
সারা দেশেই সব সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম তীব্র ভাবে এগিয়ে চলছিল। পাকবাহিনী, রাজাকার ও তাদেরসহযোগীরা প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তথ্য মতে ১৬ থেকে ২৯ আগস্টে তিন দিনের মধ্যে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ১০২ জন নিহত হয়েছে। নামকরা পাকসহযোগী জনাব ফখরুদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাজস্ব মন্ত্রী ও সচিব বাংলাদেশ প্রাদেশিক মুসলিম লীগ-তিনিও নিহত হন। ১০২ জনের মধ্যে ৬১ জন পাকসৈন্য, ১৫ রাজাকার ও ২৬সহযোগী ছিল। এই সময়কালে ৪০ টির বেশী ট্রুপ্সে পাকসেনাদের উপর মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ চলে। জনাব ফখরুদ্দিনকে ময়মনসিংহ জেলায় নিয়ে আসা হয়।
২৮ আগস্ট সিলেট জেলায় লামুকাটায় রাজাকার চৌকি সমেত অবস্থানে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৩ জন রাজাকার নিহত হয়। ২৭ আগস্ট সিলেটে মনুর কাছাকাছি পাকসৈন্যদের উপরে অ্যামবুশে ৫ জন হতাহত হয়। একই দিনে ৩ মাইল উত্তরে তামার্জুনিতে রাজাকারদের টহল দলে অভিযানে ৬ জন হতাহত হয়। তাদের কাছ থেকে ২ টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়। ২৭ আগস্ট কানাইরঘাটে পাক প্যাট্রোল অতর্কিতে আক্রমণে ৩ পাকসেনা আহত হয়। একই এলাকায় নৌকায় চলন্ত পাকবাহিনীর উপরে অতর্কিতে আক্রমণে ২ জন নিহত হয়। ১ জন আহত হয়। একই দিনে একটি পাক জিপ মাইনে আক্রমণে করা হয় জকিগঞ্জ-আতাগ্রাম রাস্তায়। এতে ২ পাকসৈন্য নিহত হয় এবং 3 জন আহত হয়। তাদের গাড়ির প্রচুর ক্ষতি হয়। একই দিনে শমসেরনগরের কাছাকাছি টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে এই এলাকায় টেলি যোগাযোগ ব্যাহত করা হয়।
২৭ আগস্ট নোয়াখালীতে ফেনী-বিলোনিয়া এলাকায় পাক বাহিনীর জন্য সরবরাহ বহনকারী ১৫ টি পাক বেসামরিক যানবাহন অতর্কিতে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে এবং প্রায় সব যানবাহন ভাংচুর করে। একই এলাকায় হাসানপুরের কাছাকাছি একটি সড়ক সেতু ধ্বংস এবং ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেনী-বিলোনিয়ার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে।
২৬ আগস্ট নোয়াখালীর সোনাইছড়ি এলাকায় একটি ব্রিজে মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে এক পাকসেনা ও ২ রাজাকার হত্যা করে।
কুমিল্লা জেলার মন্দভাগে পাক বাহিনীর উপর অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ৫ জন হতাহত হয়। একই দিনে তারা বিবির বাজার অভিযান চালিয়ে ২ পাকসৈন্য হত্যা করে।
২৬ আগস্ট শিরনহাটে ৪ টি পাকসৈন্যবাহী দেশী নৌকায় মুক্তিবাহিনী অতর্কিতে আক্রমণ করে এবং ২ টি নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে ১০ জন আহত হয়।
২৭ আগস্টে দিনাজপুর জেলার হালিবান্দায় মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে ২ জনকে আহত হয়। ২৫ আগস্ট একই এলাকায় রাজাকার অবস্থানে আক্রমণে ১৪ জন আহত হয়। ১৫ টি রাইফেল ও 8 জন রাজাকার বন্দী করা হয়। ২৮ আগস্ট রংপুর ভুরুংমারি পাক অবস্থানে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে ২ জনকে আহত হয়।
২৭ আগস্ট উত্তরবঙ্গের নকুরগাছিতে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে রেলওয়ে ট্র্যাক ধ্বংস করে। একই দিনে দারপুলে ৩ জন পাকসৈন্যকে আহত করা হয়। ২৬ আগস্ট ফুলতলা-ভবানীপুর রাস্তা আক্রমণে ধ্বংস হয় এবং এর ফলে উত্তরবঙ্গের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হয়। একই দিনে দঙ্গরহাট এলাকায় পাক অবস্থানে মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে ২ পাকসেনা হত্যা এবং ৪ জনকে আহত হয়।
২৭ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলায় পটল্ডাঙ্গায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পিস কমিটির চেয়ারম্যান নিহত হয়।
বারিনগর যশোরে ২৫ আগস্টে এক মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৬ জন রাজাকার নিহত হয় ও ২ টি রাইফেল উদ্ধার হয়। আর ৩ জন আহত হয়।
——————সিল, জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স, ৩১ আগস্ট, ১৯৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
১ সেপ্টেম্বর
মুক্তিবাহিনী সারা বাংলাদেশ জুড়ে ব্যাপক গেরিলা কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা পাক বাহিনী, রাজাকার ওসহযোগীদের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি করছিল।
প্রশংসনীয় কয়েকটি কার্যক্রমের কিছু নিচে উল্লেখ করা হল:
(১)মুক্তিবাহিনী কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরের লেবুতলা, হাশিম্পুর ও রায়পুর স্বাধীন করে। এবং ১৪ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে।
(২) ২৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনী চুয়াডাঙ্গা থানায় আক্রমণ করে। ২৮ আগস্ট আরেকটি অ্যামবুশে ২ জন আহত হয়।
(৩) মুক্তিবাহিনী ২৬ আগস্ট জগন্নাথ দীঘিতে তিনটি টেলিফোনের খুঁটি ধ্বংস করে কুমিল্লা ও ফেনীর মধ্যে টেলিযোগাযোগ বিঘ্নিত করে।
(৪) ২৭ আগস্ট কুমিল্লা জেলার কসবায় পাক অবস্থানে মুক্তিবাহিনী অভিযান চালালে ২০ জন আহত হয়। দুটি বাংকার ধ্বংস করা হয়।
(৫) ৩০ আগস্ট ময়মনসিংহ জেলার বেরিগাও এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর গুলি বিনিময়ে ৪ পাকসেনা নিহত হয়।
(৬) ২৮ আগস্ট ময়মনসিংহের ইসলামপুরে বদর বাহিনীর ক্যাম্পে মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৪০০ মণ পাট জব্দ করে। ৪ জন নিহত হয়।
(৭) রংপুর লালমনিরহাট বিমানঘাঁটিতে রাজাকারদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে মুক্তিবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৭ রাজাকার হত্যা করে। রেলসেতুর পাহারায় থাকা পাকপোস্টেও আক্রমণ করে। ফলে পাকসেনারা পোস্ট ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ব্রিজটি উড়িয়ে দেয়া হয়। ২৬ আগস্ট নাগেশ্বরী-রায়গঞ্জ রাস্তায় ১০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ৪ জন আহত হয়।
(৮) ২৭ আগস্ট ভবানীপুর, ঝারবাড়ি এবং বিরাইতের মধ্যে মুক্তিবাহিনী ৭০ ফুট রেলওয়ে ট্র্যাক ধ্বংস করে।
——————সিল, জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স, ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
২ সেপ্টেম্বর
মুক্তিবাহিনীর গেরিলা কার্যক্রম বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ভাবে বলবত আছে।
গত কয়েক দিনের অপারেশনে মুক্তিবাহিনী ১০৪ জন পাকসেনা হত্যা এবং ৫৭ জন আহত হয়। একই সময় ৬০ জন রাজাকার, ১২ জন পুলিশ ও ৫ জনসহযোগীকে হত্যা করা হয়।
প্রধান কিছু অপারেশন-
২৮ আগস্ট ঢাকায় সবচেয়ে সাহসী কিছু মাইন অপারেশন করা হয়। মুক্তিবাহিনী ২ টি সেনা ট্রাক ও ১ টি জিপ উড়িয়ে দেয়। অন্তত ২৪ জন পাকসৈন্য এবং রাজাকার নিহত হয় এবং ৪১ জন আহত হয়।
২৪ আগস্ট এবং ২৭ আগস্টের মধ্যে মুক্তিবাহিনী ৯ জন পাকসৈন্য, ১২ জন রাজাকার ও কুমিল্লা জেলার লাকসাম এলাকায় ৯ পুলিশ হত্যা করে।
২৮ আগস্ট ব্রহ্মপাড়া ও সালদানদী এলাকায় মুক্তিবাহিনী ৫ টি দেশী নৌকায় আক্রমণ করে ১ অফিসারসহ ২৩ জন পাকসৈন্য ও রাজাকারদের হত্যা করে।
২৬ আগস্ট সিলেট জেলায় ফুল্টন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনী আক্রমণে ৩ জনকে হত্যা করে এবং বেশ কিছু শত্রু বাংকার ধ্বংস করে।
২৮ আগস্ট সিলেটের লাটু এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও পাক বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৫ জন পাকসৈন্য আহত হয়।
২৫ আগস্ট মুক্তিবাহিনীর সেট করা মাইনে ৪ টি ট্রেনবগি সিলেট জেলার জুড়ী এলাকায় লাইনচ্যুত হয়।
২২ আগস্ট আরেকটি মাইন অপারেশনে মৌলভী বাজার এলাকায় একটি আর্মি ট্রাকে আক্রমণে কমপক্ষে ৬ পাকসৈন্য নিহত হয় এবং বেশ কিছু আহত হয়।
২৯ আগস্ট মুক্তিবাহিনী কামারশাল পাকসৈন্য অবস্থানে অভিযান চালায়। এতে ৫ জন পাকসেনা আহত হয়।
২৯ আগস্ট রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহীতে পাক প্যাট্রোলে মুক্তিবাহিনীর অতর্কিতে আক্রমণে তাদের মধ্যে ৬ জন নিহত হয়।
৩০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী ভতেমারিতে পাকসৈন্যদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৫ জন হত্যা করে। একই দিনে দানুর এলাকায় ৩ জন পাকসেনা নিহত এবং ৪ জন আহত হয়।
এই সময়ে মুক্তিবাহিনী ৫০ টি শত্রু যানবাহন ধ্বংস করে এবং প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে। তারা কয়েকটি সেতু ধ্বংস করে।
এ সময়কালে ৪২ জন রাজাকার সিলেট জেলার মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
——————সিল, জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স, ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৩ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা কার্যক্রম আরও গতিবান হয়েছে। রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা ভতেমারিতে পাকসৈন্য অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আহত হয়। মুক্তিবাহিনী অমরখানা এবং জগদালহাটে পাকসৈন্য অবস্থানের উপর মর্টার হামলা করে। এই আক্রমণে ৫১ জন পাকসেনা নিহত ও ১৩ জন আহত হয়।
যশোর-খুলনা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পানিঘাট, কারামার, পশ্চিম বাগ ও শ্যামপুর এ সিরিজ আক্রমণ সম্পন্ন করে এবং এক কর্মকর্তা এবং ২০ জন পাকসেনা নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর এক জন জখম হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুমিল্লা সেক্টরে মুক্তিবাহিনী দুর্গাপুর, ছাগলনাইয়া, লোডাগাও এবং সোহাগপুর এ তাদের আক্রমণ চালিয়ে শত্রু অবস্থানের ১৫ জন পাকসেনা হত্যা, ৩ শত্রু বাংকার ধ্বংস করে।
মনোহরদীতে আক্রমণে ১২ জন শত্রুসৈন্য হত্যা করা হয়। ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুট এ একটি রেল ট্রলিবাস মুক্তিবাহিনী সফলভাবে অ্যামবুশ করে। এতে এক আর্মি অফিসার এবং ৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
সিলেট-ময়মনসিংহ সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পুটিছেরা, জাগাদা এবং বান্দরকাটাতে সংঘর্ষে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয়। বিরিশিরিতে মুক্তিবাহিনীর মাইনে একটি শত্রু গাড়ি বিস্ফোরিত হয়ে দুই জন শত্রুসৈন্য নিহত হয় এবং গাড়িটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
——-এসডি / নজরুল ইসলাম, গণসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বাহিনী ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৪ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখযোগ্যভাবে সকল ফ্রন্টে সফলতার সাথে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এবং গত দুই দিন সময়ে ২ কর্মকর্তাসহ আরো ২৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু অবস্থান শত্রুমুক্ত হয়েছে। শত্রুরা স্থানচ্যুত, তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রেল লাইন এবং সেতু ধ্বংস করা হয়েছে।
পূর্ব ফ্রন্টে ধারাবাহিক আক্রমণে মুক্তিবাহিনী দারিয়াপুর, বল্লভপুর, কুশাডাঙ্গা, মিয়াবাজার, কালিকাপুর, কোটেশ্বর, মিরপুর, গুথুমা এবং মাইঝখার এ মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীকে আক্রমণে করে ৬০ জন শত্রুসৈন্য নিহত এবং অনেক আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা এছাড়াও নয়নপুর এবং সাশিদালে মর্টার হামলা চালায়। সেখানে ৩৬ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে। ২ টি সফল আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা শনিরহাট এবং নাগাইসে ৫০ জন পাকসেনা হত্যা করে, ১২ টি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। আসাম পাড়ায় মুক্তিবাহিনীর মাইনে একটি শত্রু ট্রাক ও ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়।
উত্তর সেক্টরে সাগ্নি এবং বচবা গায়ের মধ্যে রেলওয়ে ট্র্যাকে মাইন সেট করে উড়িয়ে দেয়া হয়। একটি পাকবাহী জিপ আক্রমণে এক কর্মকর্তা ও চার সৈন্য নিহত হয়। পিলাকান্দিতে মুক্তিবাহিনীর মাইনে ১ টি ট্রাকসহ ৭ জন নিহত হয়। তীব্র যুদ্ধে বেরিগাও ও ট্যাংরাটিলাতে ৩৩ জন পাকসৈন্য এবং আখাছরিতে ২২ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে। উলিপুর এ পাক ক্যাম্পে সাহসী আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা ২০ জনকে আহত হয় এবং ভারী যন্ত্রপাতি ধ্বংস করে।
পশ্চিম সেক্টরের মুক্তিবাহিনী গেরিলারা প্রহরারত ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরের উপর একটি সাহসী আক্রমণ করে ও নিয়ন্ত্রণ রুমে গ্রেনেড ছুঁড়ে ২ পাকসেনা হত্যা করে। বর্দিতে মুক্তিবাহিনীর মাইনে ১ টি পাকিস্তানের জিপ, ১ জন অফিসার এবং ৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
পার্বতীপুর ও সৈয়দপুরে মুক্তিবাহিনী গেরিলারা রেলওয়ে স্থানচ্যুত করে যোগাযোগ নষ্ট করে। বারাছাড়াতে ৭ জন পাকসেনাকে হত্যা করে।
নির্ভরযগ্য তথ্য মতে পাঠান ও পাঞ্জাবি সৈন্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। সিলেটে কাদিম নগরে মালামাল বিতরণের উপরকেন্দ্র করে পাঠান ও পাঞ্জাবি সৈন্যদের মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা দেয়।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স, ৪ সেপ্টেম্বর, ৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৫ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম চালু রেখেছে। এখানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তারা ১১৩ জন পাকসেনা, ৩২ জন রাজাকার ও ১৪ জন পাকপুলিশ হত্যা করে এবং প্রচুর হতাহত হয়। বিভিন্ন সেক্টর থেকে প্রতিদিন ব্যাপক ক্ষতি সাধনের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি মুক্তিবাহিনীর অভিযানে পাকসেনা বহনকারী ৩ টি নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়।
রংপুরে, দিনাজপুর ও রাজশাহী সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধারা খাজানপুর, বালদিয়া, শাইনপুকুর, ভাড়াটের ছড়া, জামালগঞ্জ ও বাহানপুরে পাকসৈন্যদের উপর অতর্কিতে আক্রমণে ২৮ জন পাকসেনা ও ১৫ জন রাজাকার হত্যা করে। পূর্ব শ্যামপুড় এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাইনে একটি শত্রু ট্রাক উড়ে যায় এবং ৬ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। মুক্তিবাহিনী পার্বতিপুর গ্রাম ও ফুলবাড়ীর মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে।
রিপোর্ট করা হয়েছে যে সম্প্রতি পাকসৈন্যরা কুদানবাজার ঘিরে বেসামরিক নাগরিকদের উপর গুলি ও অগ্নিসংযোগ করছে। তারা ২১ জন বেসামরিক লোক হত্যা এবং ৩৫কেজন আহত হয়। এই বাজারে তারা দোকান লুট করে।
কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধারা শিতালাইয়ের কাছাকাছি দারশায় অভিযান চালিয়ে ২ জন পাকসৈন্য হত্যা করে। তারা এই এলাকায় টেলিগ্রাফ অফিস পুড়িয়ে দেয় ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরে দুইটি সফল আক্রমণে ঢাকা ও চন্দ্রপুর রূপগঞ্জের ওসিসহ ৩০ জন পাকসেনা ও ৪ জন পাকিস্তানি পুলিশের প্রাণনাশ হয়। কাছাকাছি রূপগঞ্জে পাকবাহিনী এবং পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ বহনকারী ৩ নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়। মুক্তিবাহিনী শীতলক্ষ্যা নদী ও চন্দ্রপুরে দুটি নৌকা ডুবিয়ে দেয়। ঢাকার কাছাকাছি মিরপুর ও চন্দ্রপুরে দুটি সফল অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ১০ জন পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ ও ১০ জন পাকসেনা হত্যা করে।
ময়মনসিংহ-সিলেট-মৌলভী বাজার সেক্টরে শ্রীমঙ্গল, ভোগা, করিমপুর, কুরসাইলও নালিতাবাড়ী এলাকায় মুক্তিবাহিনীর একটি সিরিজ আক্রমণে ২১ জন পাকসেনা এবং ১৮ রাজাকার হত্যা করা হয়।
করিমনগর ও জুড়ী বড়লেখায় মুক্তিবাহিনীর মাইনে একটি শত্রু ট্রাক ও একটি পাকবাহিনী বহনকারী জিপ আক্রান্ত হয়ে ১০ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। ভিগাতে মাইন বিস্ফোরণে ৩ জন পাকসেনা নিহত হয়। নালিতাবাড়ীতে পাকসৈন্যদের উপর মুক্তিবাহিনীর অ্যামবুশে ১২ জন পাকসেনা নিহত হয়। দেওয়ানগঞ্জ থানা ধ্বংস করে ১ টি স্টেনগান ও একটি রাইফেল জব্দ করা হয়।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স, ৫ সেপ্টেম্বর, ৭১
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৯ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম জোরদার রেখেছে। বিভিন্ন সেক্টর থেকে পৌঁছনো খবর মতে মুক্তিবাহিনী ৩১ আগস্ট এবং ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১১৪ জন নিয়মিত পাকসেনাসহ ২৪২ জনকে হত্যা করেছে।
মুক্তিবাহিনী ঢাকা ও এর আশপাশে তাদের গেরিলা কার্যক্রম তীব্রতর করেছে। তারা সূত্রাপুর, আজিমপুর গেরিলা অপারেশনে ৪ পিএএফ প্রভোস্ট ও সূত্রাপুর সার্কেল ইন্সপেক্টরসহ ৫০ জনকে হতাহত হয়। ধোলাইখালে তারা ৩ টি রাইফেল উদ্ধার এবং আজিমপুর এলাকা থেকে কিছু গোলাবারুদ উদ্ধার করে।
শহরের পাক-সামরিক কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তীব্র গেরিলা কার্যক্রমের কারণে সারা শহরের রাস্তায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যক্তিগত অনুসন্ধান শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সফলভাবে বিবির বাজার, কোটেশ্বর, চারনাল এবং পাঞ্চরাতে ১৮ জন পাকসৈন্য হত্যা করে। চন্দ এলাকায় ২ টি নৌকা ধ্বংস করে ২৫ জন পাকসৈন্য হত্যা করে এবং ২০ জন আহত হয়।
একই সেক্টরে মিয়ানবাজার, রাঙামাটিয়া, নয়নপুর এবং চান্দলাতে শত্রু অবস্থানের উপর অভিযান চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ২৮ জন পাকসেনা হত্যা করে।
চট্টগ্রাম থেকে একটি বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম বহির্নোঙ্গরে এক মেরিন কমান্ডো অপারেশন চালিয়ে বিদেশী জাহাজ ও ট্যাঙ্কার ডুবিয়ে দেয়।
মুন্সিরহাট এলাকায় একটি শত্রু ট্রাক মাইন বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়। তিন জন পাকসৈন্য গুরুতর জখম হয়।
ময়মনসিংহ-সিলেট সেক্টরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা গোয়ালবাড়ি, কোদাইলকাঠি, কামালপুর শত্রু অবস্থানের ওপর অতর্কিত হামলা করে। নারায়ণ শশ্মান, শ্রীবর্ণী, আতগ্রানা এবং জয়ন্তিপুরে ৩০ জন পাকসৈন্য ও কয়েকজন রাজাকার হত্যা করে। তারা ছারগাই, পাচগাও এবং জুগিলে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সেতু ধ্বংস করে যোগাযোগ ব্যাহত করে।
বিলম্বিত তথ্য অনুযায়ী ময়মনসিংহ জেলার একটি এলাকায় মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর বিমান আক্রমণ করে পাকসেনারা। পাক বিমান ২ বার বোমা ফেলে। মুক্তিবাহিনী সরে যাবার আগে ৩২ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে। এতে ২৩ জন আহত হয়। এক মেজরসহ এবং কয়েক রাজাকার নিহত হয়।
সিলেট অঞ্চলে বিশ্বনাথ রাস্তায় পাকসৈন্য বহনকারী একটি পাক আর্মি ট্রাক মুক্তিবাহিনীর মাইনে ধ্বংস হয়।
মুক্তিবাহিনী ২ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার ভুরুঙ্গামারী এলাকায় শত্রু অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ জন হত্যা এবং ১৫ জন পাকসেনাকে আহত হয়। তারা রংপুর-দিনাজপুরের মধ্যে লাহিড়ী, খঞ্জনপুর, চিলহাটি, হাতি বান্ডা, জগদলহাট,পারুলিয়া, সাকাতি এবং আমারখানা শত্রু অবস্থানে আক্রমণ করে যার ফলে ১৫ জন পাকসৈন্য ও ২০ জন রাজাকার নিহত হয়। রাজশাহী সেক্টরে মুকুন্দপুর ও চিলাহাটিতে ৬ জন নিহত ও ৬ জন পাকসৈন্য আহত হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা কুষ্টিয়ায় যশোর-খুলনা সেক্টরে দুলানিঘাটে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধে ৫ জন হতাহত হয়। পরে এই এলাকা থেকে শত্রুসৈন্য সরে যায়। হানাদার বাহিনী এই এলাকায় অভিযান চালিয়ে লুটপাট চালায় খবর পেয়ে মুক্তিবাহিনী সেখানে ছুটে আসে এবং গ্রাম বাসিদের মুক্ত করে।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স,
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৮ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম জোরদার রেখেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টর থেকে মুক্তিবাহিনী ১১৯ জন পাকসেনা হত্যা করে।
উল্লেখযোগ্য অপারেশনের মধ্যে কয়েকটি হল:
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরে মুক্তিবাহিনী কুমিল্লা জেলা, নাগালকোট এবং মহরিগঞ্জ, বিবির বাজারে মাইন দিয়ে অপারেশন চালিয়েছে। ফেনীতে একটি পাক আর্মি জিপ বিস্ফোরণে বিবির বাজার এলাকায় একজন ক্যাপ্টেনসহ ৩ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। তারা বড়াইতে পাকসৈন্য বহনকারী দেশী নৌকায় অতর্কিতে আক্রমণ করে ৪ জনকে হতাহত হয় এবং নৌকা ডুবিয়ে দেয়। তারা বীথি দাউদপুর, রূপা, যাদিশার, নাওপুর বাজার ও মতুয়ায় ২৪ জন পাকসৈন্য হত্যা করে। তারা ঢাকা এলাকায় অ্যামবুশে একটি পাক গাড়ির ক্ষতি করে ৭ জন পাকসেনাকে হত্যা করে।
ময়মনসিংহ-সিলেটে-মৌলভী বাজার সেক্টরে মুক্তিবাহিনী নওগ্রাম, কুদাইল, চাল্পারা, শেরপুর ও নতুন বাজার এলাকায় ৫৮ জন পাকসৈন্য হত্যা করে ও অনেকে আহত হয়। মুক্তিবাহিনী সফলভাবে নওগ্রাম এলাকায় ১৩ জন পাকসেনা হত্যা ও ৬ পাকসৈন্যকে আহত হয়। কুদাইল ও চাল্পারা এলাকায় ১৭ জন হতাহত হয়। মুক্তিবাহিনী ময়মনসিংহ শহরের ভিতরে পাকসৈন্যদের অবস্থানে অভিযান চালিয়ে ১০ পাকসেনাকে হত্যা করে। তারা নতুন বাজারে গ্রেনেড ছুড়ে ৯ জন শত্রুসৈন্য হত্যা করে।
মুক্তিবাহিনী নাওকুচি-আহমেদনগর এলাকার মধ্যে দুইটি জায়গায় টেলিযোগাযোগ ও রেলওয়ে ট্র্যাক ধ্বংস করে। এতে বড়লেখা ও লাটুর মধ্যে ট্রেন যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।
যশোর-কুষ্টিয়া-খুলনা সেক্টরে আমাদের গেরিলা কমান্ডোরা কোটালিপুর এলাকায় ২ জন বেলুচ সৈন্যকে বন্দী করে। তারা বীরগোবিন্দপুর ও নিশ্চিন্তপুর অভিযান চালিয়ে ৪ পাকসেনাকে হত্যা করে। সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা ভোমরাতে ৪ জন শত্রুসৈন্য হত্যা ও ৬ জনকে আহত হয়। এজন্য তারা মর্টার ব্যাবহার করে।
রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরে বরখাতা এলাকায় পাক বাহিনীর উপর মুক্তিবাহিনীর প্রবল গোলাবর্ষণের কারণে ২০ জন শত্রুসৈন্য নিহত হয়। আরেকটি অভিযানে ৩ শত্রুসৈন্য হতাহত হয়।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স,
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
৯ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম জোরদার রেখেছে।
বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৮৭ জন শত্রুসৈন্য নিহত এবং অনেক সৈন্যকে আহত হয়।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরের সাসিয়ালি, গাজীপুর, পান ছড়া, বাগবার, জামবাড়ি এবং কোটেশ্বর এলাকায় মুক্তিবাহিনী ৪৫ জন পাকসৈন্য হত্যা ও ১৫ জনকে আহত হয়।
বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মুক্তিবাহিনী ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরের শাসাইল এলাকায় পাক নিয়মিত এবং সামরিক পুলিশ কর্মীদের নিয়ে গঠিত একটি শত্রুসৈন্য কলাম এ অভিযান চালিয়ে ২৫ পাকসেনা হত্যা করে। গাজীপুর এলাকায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৩ সেপ্টেম্বর ২ জন পাকসেনা হত্যা করে এবং পাঁচ পারায় ৩ জনকে আহত হয়। একই দিনে পানছড়া এলাকায় ৪ জন পাকসেনাকে হত্যা করে ও ১২ জনকে আহত হয়। কুমিল্লার বাগবারে ২ পাকসৈন্য নিহত ও ৪ জন আহত হয়। কোটেশ্বরএ ৩ জন আহত হয়। তারিখ ছিল ৩ সেপ্টেম্বর। শোলিয়াতে ৬ জন নিহত হয় একই দিনে। ৪ সেপ্টেম্বর পাক বাহিনীর ওপর হামলায় চার জন হতাহত হয়।
ময়মনসিংহ-সিলেট-মৌলভী বাজার সেক্টরএ মুক্তিবাহিনী ৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ অঞ্চলে গেরিলা কার্যক্রম চালু করে ৩০ টি চীনা রাইফেল জব্দ করে।
রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরের সাহসী মুক্তিবাহিনী বাসন্তিপুরে ৩ সেপ্টেম্বর ৬ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। একটি বিলম্বিত প্রতিবেদন মতে ২৯ আগস্ট একই এলাকায় পাক সৈন্যের উপর অতর্কিতে আক্রমণে এক ক্যাপ্টেনসহ ৫ পাকসেনা নিহত ও দুই জন আহত হয়। ৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী জেলার রানি শংকইল হরিপুর রোডে পাকসৈন্য বহনকারী এক পাক গাড়ির বিস্ফোরণে ৫ জন নিহত হয়। একই এলাকায় ভিন্ন অপারেশনে আরও ৬ জন শত্রুসৈন্যকে হত্যা করে।
তারা রাত্নাই এলাকায় ট্রেন যোগাযোগ ব্যাহত করে।
৫ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর জেলার পূর্ব গোদামারি-বড়খাঁটা এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও পাক বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৩৪ পাকসৈন্য নিহত হয়।
কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ৫ সেপ্টেম্বের গোয়ালহাটি এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময়ে ৫ জন শত্রুসেনা নিহত ও ৬ জন পাকসেনা আহত হয়। একই দিনে তারা আফ্রাতে আক্রমণে ১ পাকসৈন্য হত্যা করে।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স,
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
১০ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম জোরদার রেখেছে।
অসম্পূর্ণ প্রতিবেদন অনুযায়ী মুক্তিবাহিনী বর্তমান মাসের প্রথম সপ্তাহে ২৯০ জন নিয়মিত পাকসৈন্যসহ ৪৫৬ জনকে হত্যা করে। তারা বিভিন্ন সেক্টরে তাদের অপারেশনের সময় আরো ১৩০ জন পাকসৈন্যকে আহত হয়। মুক্তিবাহিনী এই সময়কালে শত্রুদের থেকে ৫০ টিরও বেশি রাইফেল জব্দ করে।
সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা গত বুধবার ময়মনসিংহ জেলার কামালপুরে আক্রমণ করে। এতে প্রচুর হতাহত হয়। একই দিনে মুক্তিবাহিনী নাওকুচি-আহমেদনগরের মধ্যে এবং ময়মনসিংহে টেলিখালি-হলদিয়া ঘাটের মধ্যে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে ঐ জায়গার টেলিযোগাযোগ ব্যাহত করে। রায়গ্রাম এবং আটগ্রামে তারা একই দিনে পাকবাহিনীকে হতাহত হয়।
৬ সেপ্টেম্বর, মুক্তিবাহিনী ময়মনসিংহ জেলার নালিতাবাড়ী থানায় অভিযান চালিয়ে পাক-সামরিক পুলিশ ক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ এলাকায় অপারেটিং মুক্তিযোদ্ধা শত্রুদের থেকে ২০ টি চিনা রাইফেল জব্দ করে।
৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী ঐ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত করে। ইল্লুঘাট-আলিয়ালটি সেতু ধ্বংস করে। ৪ সেপ্টেম্বর নওগ্রামে ৬ জন পাকসেনাকে হত্যা ও ১৩ জনকে আহত হয়।
৪ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ছাতক ও সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে রেলওয়ে ট্র্যাক উড়িয়ে রেল যোগাযোগ নষ্ট করে। ৬ সেপ্টেম্বের দিল্কুশা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জন পাকসেনা হত্যা করে।
ময়মনসিংহ-সিলেট সেক্টরের নওগ্রাম এলাকায় ৪ সেপ্টেম্বর ১৩ জন পাকসৈন্য হত্যা করে। একই দিনে তারা আট গ্রাম এলাকায় পাক বাহিনীর অবস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের হতাহত হয়।
কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরের মুক্তিবাহিনী ৭ সেপ্টেম্বের গোয়ালগ্রাম এলাকায় ৬ জনকে আহত হয়। ৫ সেপ্টেম্বর তারা যুদ্ধ করে ৫ জন শত্রুসৈন্য হত্যা করে। আসরা এলাকায় একই দিনে এক পাকসেনাদল হত্যা করা হয়।
৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী ভোমরায় মর্টার দিয়ে ৪ জন পাকসেনা হত্যা করে। কাকদানিয়াতে তারা ৬ জন পাকসেনা আহত হয়।
৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরে শীতলার কাছাকাছি দারসাতে ৬ জন পাকসেনা হত্যা করে।
রংপুর-দিনাজপুর সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ঠাকুরগাঁও ও পীরগঞ্জের মধ্যে ৫ সেপ্টেম্বর ২ টি বৈদ্যুতিক পাইলন ধ্বংস করে।
৬ সেপ্টেম্বর দিম্পারা এলাকায় ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। আগে তারা ৫ সেপ্টেম্বর একই এলাকায় আরো ২ টি পাওয়ার পাইলন ধ্বংস করে।
৪ সেপ্টেম্বের শিরির বন্দর এবং পার্বতীপুরে ট্রেন লাইন ধ্বংস করে। তারা একই দিনে ফুলতলা-ঠাকুরগাঁও এর মধ্যে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত করে।
মুক্তিবাহিনী পূর্ব গোদাগাড়ী-বড়খাঁটা এলাকায় চলন্ত যানে আক্রমণে ৮ জন পাকসেনা হত্যা করে।
৬ সেপ্টেম্বর রানি শংকইল-হরিপুর রোডে মুক্তিবাহিনীর মাইনে একটি গাড়ির বিস্ফোরণে গাড়ীসহ ৫ জন নিহত হয়। আরেকটি অ্যামবুশে ৬ জনের মৃত্যু এবং ৪ জন আহত হয়।
৪ সেপ্টেম্বর দিনাজপুর জেলার পারলিয়া এবং আমারকিয়ানা অভিযান চালিয়ে ৬ জন পাকসেনা নিহত করা হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম সেক্টরের মুক্তিবাহিনী ৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা জেলার হারাস পুরে এক পাকসেনাদল হত্যা করে। ৩ সেপ্টেম্বর তারা লতিফ পুর, গাজীপুর, বাঙ্গারা, বাগের, কোটেশ্বর, জাম বাড়ি, নয়াপুর, সোলাবাজারে অভিযানে ৫১ জন পাকসেনা হত্যা ও অনেককে আহত হয়।
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
১১ সেপ্টেম্বর
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে তাদের গেরিলা কার্যক্রম জোরদার রেখেছে।
গত কয়েক দিন (৩ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর) গেরিলা অপারেশনের অতিরিক্ত রিপোর্ট আজ এখানে পৌঁছেছে। এই অপারেশনে ১০২ জন শত্রু আক্রান্ত হয় যার মধ্যে ৫৯ জন পাক বাহিনীর নিয়মিত সদস্য।
সিলেট-ময়মনসিংহ সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সোনারূপা, দিলকুশে অভিযান চালায়। এছাড়া মাধবপুর ও সিলেট জেলার লাটুবেনিয়া এলাকার পাকসৈন্যদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে।
৮ সেপ্টেম্বর আট গ্রামে মর্টার দিয়ে আক্রমণে ৮ জন হত্যা করে।
৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী ভোগড়া ও করিমপুর এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ৩ পাকসেনা ও ৪ রাজাকার হত্যা করে। বুলিয়াতে অন্য একটি আক্রমণে ২০ জন আহত হয়।
৬ সেপ্টেম্বর দুলকুশে ৪ জন নিহত হয়। সিলেটের আভাবগিতে এক পাকসেনা ও দুই রাজাকার মাইনে নিহত হয়।
ময়মনসিংহ জেলার মুক্তিবাহিনী জাস্লান্দিতে সড়ক সেতু ধ্বংস করে এবং ৫ সেপ্টেম্বর হাতীগাওয়ে টেলিফোন লাইন ধ্বংস করে।
বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মুক্তিবাহিনী গত মাসে কিশোরগঞ্জের একটি পুলিশস্টেশনে অভিযান চালায় ও ৫ জন পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ হত্যা করে। তারা ৪ টি রাইফেল জব্দ করে। আরও ২ টি রাইফেল গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনে জব্দ করা হয়।
রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরের মুক্তিবাহিনী ৮ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার ভুরুংগমারি-পাটেশ্বর এ পাক অবস্থানে অভিযান চালায় এবং ৩ জন পাকসেনা হত্যা করে। একই দিনে তারা পশ্চিম কুড়িগ্রাম এলাকায় ২ জন পাকসেনা হত্যা করে।
৫ সেপ্টেম্বর তারা চাতাইল স্কুলভবনে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে ও ১৪ জন আহত হয়।
৭ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার লালমনিরহাটের উত্তরে মুক্তিবাহিনী একটি সড়ক সেতু ধ্বংস করে।
বিলম্বিত প্রতিবেদন অনুযায়ী আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকায জেলার হরিরামপুর এলাকায় পাকসৈন্য বহনকারী একটি লঞ্চ অ্যামবুশে ১১ জন নিহত হয়। তারা লঞ্চটি ধ্বংস করে। সাহসী যোদ্ধারা গত মাসে লোহাগঞ্জ, শ্রীনগর, নবাবগঞ্জ, হরিরামপুর, ঘিওর পুলিশ স্টেশন দখল করে। প্রচুর পুলিশ নিহত ও আহত হয়। এতে তারা ১৯ টি রাইফেল জব্দ করে। বিলম্বিত রিপর্টে যানা যায়, চট্টগ্রাম পূর্ব মিরসরাইয়ে মুক্তিবাহিনী পাকসৈন্যদের অতর্কিতে আক্রমণে ২০ জন হতাহত হয়।
৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী ঢাকা-কুমিল্লা সেক্টরে মাতুয়া এলাকায় ৪ পাকসেনা হত্যা করে।
কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরএ খুলনা জেলায় ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী ২ জন পাকসৈন্য ও ২ জন রাজাকার হত্যা করে।
———-স্বাঃ /-জনসংযোগ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফোর্স,
বাংলাদেশ বাহিনীর দপ্তর, মুজিবনগর
জনসংযোগ বিভাগ
যুদ্ধ বুলেটিন
১৫ সেপ্টেম্বর
বাংলাদেশ অধিকৃত এলাকার সব ফ্রন্টে গেরিলা কার্যক্রমের রীপোর্ট আরও আসতে থাকে। কয়েকটি বড় অপারেশনের বিবরণ নিম্নে দেয়া হল-
রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরের মুক্তিবাহিনী ১০ সেপ্টেম্বর গহুডাঙ্গায় ৪ জনকে হত্যা করে। একই দিনে কুড়িগ্রামে ১০ জনকে হত্যা করে।
১১ ই সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী দরারকোটে আক্রমণ করে। বুরতাপ ও পাটেশ্বরে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ৬ জন পাকসেনা ও ২ জন রাজাকার নিহত হয়।
১২ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী মোঘলহাটে আক্রমণ করে। ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। এই সময়কালে তারা লালমনিরহাটে পার্বতিপুর-পিলুবারী রেল যোগাযোগ ধ্বংস করে।
ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সেক্টরে মুক্তিবাহিনী ১০ সেপ্টেম্বর কুদালিয়ায় ১৫ জন পাকসেনা হত্যা করে। একই দিনে তারা চারনাইলে ৭ জন নিয়মিত পাকসৈন্যসহ ১০ জনের প্রাণনাশ করে।
১১ সেপ্টেম্বর মুক্তিবাহিনী মানিক্ষাইলে রেল সেতু ধ্বংস করে রেল যোগাযোগ ব্যাহত করে।
কুষ্টিয়া-যশোর-খুলনা সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সিক্রিতে ৫ জন পাকসেনা হত্যা করে।
দেরীতে পৌঁছনো প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তিবাহিনী ৬ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার-যশোর-খুলনা সেক্টরের ঝাউডাঙ্গায় ২ জন পাকসেনা হত্যা করে ও ৪ জন আহত হয়। তারা ৬ টি রাইফেল জব্দ করে। ৮ সেপ্টেম্বর ব্রিত্তিয়াছারায় ৮ জন পাকসৈন্য নিহত হয় ও ৩ জন আহত হয়।
&nbs