<৪,২০৫,৪৪৬-৪৪৯>
অনুবাদকঃ মাহীন বারী, মুশররাত আলম মৌ
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২০৫। বিশ্বের আন্তর্জাতিক যুব ও ছাত্র সংগঠনের প্রতি স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থন চেয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের আবেদন | বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন | ২০ মে, ১৯৭১ |
টেলিগ্রামঃ ইয়ং ইন্ডিয়া টেলিফোনঃ ৫৬৭৩৫২২
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
৯২৩, ফায়েজ রোড, কারল বাগ, নিউ দিল্লি-৫
ভারত
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি নিবেদন
(সাবেক পুর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন)
সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব ও ছাত্র সংগঠনের প্রতি
প্রিয় বন্ধু ও বিপ্লবীগণ,
আমরা নিশ্চিত যে আপনারা জেনে থাকবেন, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র ও জনগন (সাবেক পুর্ব পাকিস্তান) বর্তমানে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার জন্য একটি কঠিন কিন্তু দৃঢ় প্রতিজ্ঞ লড়াই করছি। দেশের মাটি শহীদদের লাল রক্তে রঞ্জিত হয়ে আছে। ইয়াহিয়া খানের পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী আমাদের দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং নিরস্ত্র ও নির্দোষ মানুষদের হত্যা করছে।যে গনহত্যা তারা ঘটিয়েছে এবং যে পরিমাণ বোমাবর্ষন, গোলাবর্ষন, গুলি বর্ষন, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষন ও অন্যান্য অপরাধমূলক কাজ তারা করেছে, মানব ইতিহাসে তার দৃষ্টান্ত বিরল। আমাদের দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে তারা প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে যাদের মধ্যে নারী, বৃদ্ধ ও শিশু ও আছে।বিশ লক্ষের অধিক মানুষের উপর নির্মম ও অমানবিক নিপীড়ন ও হয়রানি চালিয়ে তাদেরকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। শহর, গ্রাম প্রভৃতির অবাধ ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে আমাদের কয়েক লক্ষ মানুষকে সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। অনাহারে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে। এবং মহামারীর প্রকোপ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং এটি ছড়িয়ে পড়লে আরও লক্ষ মানুষ এর শিকার হবে।
প্রথম দিন থেকে যখন ভাড়াটে সৈন্যবাহিনী তাদের “অপারেশন জেনোসাইড” শুরু করেছে ২০ হাজারের অধিক মানুষ শুধুমাত্র আমাদের রাজধানী শহর ঢাকাতেই নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে অনেক শিক্ষক ও ছাত্র আছেন। গুলিবর্ষণ ও গোলাবর্ষণ এর মাধ্যমে রাজধানী শহরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল। হাজার হাজার গ্রাম, বাজার, আমাদের অধিকাংশ শহর যার মধ্যে আছে প্রধান বন্দর নগরী চট্টগ্রাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এইভাবেই ইয়াহিয়া খানের সামরিক একনায়কতন্ত্র আমাদের জনগনের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে যাদের একমাত্র দোষ ছিল যে তারা গণতন্ত্র, জাতীয় স্বায়ত্তশাসন এবং সামাজিক উন্নয়নের মহৎ উদ্দেশ্যেকে সমুন্নত রাখতে চেয়েছিল।
জনগনের উপর এই নির্মমতা সত্ত্বেও তারা আরও একতাবদ্ধ হয়ে এবং আরও দৃঢ় সংকল্প, উচ্চ মনোবল ও এই আত্মবিশ্বাসের সাথে লড়াই করছে যে তারা তাদের নায্য অধিকার আদায় করে জিতবে।
পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে আমাদের লোকেরা আমাদের জনগনের প্রাথমিক গণতান্ত্রিক অধিকার ও আমাদের দেশের একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের জন্য লড়াই করছে।আমরা আমাদের অঞ্চলের জন্য জাতীয় স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলাম পাকিস্তানের একটি অখণ্ড অংশ হিসেবে থাকাকালীন অবস্থায়। আমরা পাকিস্তানের অন্যান্য জাতীয়তাবাদী অঞ্চলগুলোর জন্যও জাতীয় স্বায়ত্তশাসন ও সুষম অর্থনৈতিক বৃদ্ধি দাবি করেছিলাম। আমাদের দাবি ছিল যে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোন আঞ্চলিক অসমতা থাকবে না এবং আমরা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং ভাষার পুর্ণ উন্নয়নের পক্ষে ছিলাম।এই দাবিগুলোর উত্থাপনের ক্ষেত্রে আমরা লড়াই করেছিলাম; এবং এই ক্ষেত্রে ছাত্ররা ছিল অগ্রণী ভুমিকায়।
এর ফলশ্রুতিতে শাসক শ্রেণি, সামরিক গোষ্ঠী এবং পাকিস্তানের কায়েমি স্বার্থ সর্বদাই ছিল ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে।
এই লড়াইয়ে অনেক সময়ে জনগনের রায় ছিল আমাদের দাবির পক্ষে। ১৯৫২ সালে ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে পুর্ব পাকিস্তানে ১৯৫৪ সালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং জনগন গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে রায় দেয়। একচেটিয়া পুঁজিবাদী, ভুস্বামিদের সমন্বয়ে গঠিত এবং সাম্রাজ্যবাদী সমর্থনপ্রাপ্ত শাসক শ্রেণি জনগনের ইচ্ছাকে অতি নির্লজ্জভাবে অস্বীকার করেছিল। পুনরায় কিছু সময়কাল সংগ্রামের পর ১৯৫৯ সালে একটি নির্বাচন শক্তিশালী জন আন্দোলনের দ্বারা শাসক গোষ্ঠীর উপর জোরপুর্বক ধার্য করা হয়েছিল।যখন পুরো জাতি প্রস্তুত হচ্ছিল, তখন শাসক চক্র তাদের উন্মত্ত ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সামরিক কৌশল অনুসরণ করল এবং এভাবে আইয়ুব একনায়ক্তন্ত্রের অন্ধকার সময় শুরু হল। দেশকে সাম্রাজ্যবাদী সামরিক দল এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের গভীর নিবেশে টেনে নিয়ে যাওয়া হল এবং এবং এভাবে আমাদের দুর্ভাগা দেশ বিশ্বের এই অংশে শান্তির প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াল।
এক দশকব্যাপী দীর্ঘ সংগ্রাম সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে অব্যাহত ছিল এবং অবশেষে আমাদের একতাবদ্ধ ও শক্তিশালী সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে এর পতন ঘটেছিল। এই পতনের পর শুরু হয় ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসন। জনগনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সামরিক একনায়ক্তন্ত্রকে বাধ্য করেছিল নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য। এভাবে পাকিস্তানে ১৯৭০ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও এটি সামরিক শাসনের আজব শর্ত আরোপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, জনগন এই নির্বাচনে দ্ব্যর্থহীনভাবে তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল।
তারা গনতন্ত্রের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেবং জাতীয় পরিষদে তাদের জন্য পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছিল যারা জনগনের স্বার্থের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। জাতীয় পরিষদে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬৭ আসন জিতেছিল।পুর্ব পাকিস্তানের ৯০% এর অধিক মানুষ জাতীয় স্বায়ত্তশাসনের জন্য ভোট দিয়েছিল। জনগনের রায় এত পরিষ্কার ও ব্যাপক ছিল যে সেটি ইয়াহিয়া খানকেও মেনে নিতে হয়েছিল। যখন তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু যেহেতু এটি ছিল পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য, এই বারও, গনতন্ত্রের সকল নীতিকে লঙ্ঘন করে তারা জনগনের ইচ্ছাকে, চরম নির্লজ্জভাবে ধুলিস্যাত করে দিয়েছিল।
শাসক দল-সামরিক একনায়কতন্ত্র যারা অভ্যন্তরীণভাবে জনগনের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল এবং প্রতিক্রিয়াশীল পুঁজিবাদী এবং সামন্তবাদি স্বার্থের মদদপ্রাপ্ত ছিল এবং বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সমর্থনপ্রাপ্ত ছিল, তারা যথাযথভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছিল এবং আমাদের দেশে রাজনৈতিক সংকট জারি করেছিল।
আমরা সমস্যা সমাধানের জন্য শাসক দলের সাথে আলোচনার শান্তিপুর্ন পদ্ধতি বেছে নিয়েছিলাম। জনগণ একত্রিত হয়ে শান্তিপুর্ন জন কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিল নির্বাচিত সংসদের প্রতি তাদের পুর্ন সমর্থন প্রকাশ করার জন্য।
কিন্তু শাসক দল নিকৃষ্ট ও কাপুরোষিত উপায় বেছে নিয়েছিল। ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর রাতে পুর্ব পাকিস্তানের উপর তারা সৈন্যবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছিল এবং তাদের ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছিল।
এটি ছিল পটভূমি যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ একটি ভিন্ন পন্থা ও কৌশল অবলম্বনে বাধ্য হয়েছিল। আমাদের এমন পরিস্থিতে দাড় করানো হয়েছিল যেখানে আমাদের বিকল্প ছিল শুধুমাত্র আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার এবং মর্যাদার জন্য লড়াই করা অথবা ধ্বংস হয়ে যাওয়া।
প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের পুর্বোক্ত পথ বেছে নিতে হয়েছিল এবং এভাবে আমাদের ইতিহাসের নতুন অধ্যায় শুরু হল।
বর্তমানে বাংলাদেশকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান এবং জনাব তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার গঠন করা হয়েছে যেটি একমাত্র বৈধ সরকার, যথাযথভাবে নির্বাচিত এবং জনগনের বিশ্বাসপ্রাপ্ত।
আমাদের জনগণকে নির্মুল এবং ধ্বংস করার এবং কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দেশকে দখল করার একটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টায় সামরিক শাসক গোষ্ঠী আমাদের আন্দোলনকে একটি ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে এবং এই যুদ্ধকে ইসলামের স্বার্থের বিরুদ্ধে একটি প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ননা করে একটি আন্তর্জাতিক বিষয় হিসেবে চরিতার্থ করছে। আমরা এখানে কিছু বিষয় স্পষ্ট করতে চাই।
১। গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যাদের অধিকার ছিল পাকিস্তান শাসন করার তারা সামরিক একনায়কতন্ত্রের দ্বারা প্রত্যাখাত হয়েছেন । সামরিক একনায়ক্তন্ত্রের উদ্দশ্য ছিল শাসন এবং সেটি সম্পাদনে সেনাবাহিনীর নির্মম শক্তির প্রয়োগ। আমরা গনতন্ত্রের জন্য লড়ছি। এটিকে ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধ হিসেবে বর্ননা করা যায় না।
২। এখানে ইসলামের নামকে বিশ্ব জনমতকে ভ্রান্তিতে ফেলার জন্য টেনে আনা হচ্ছে।পাকিস্তানের সামরিক একনায়কতান্ত্রিক শাসন বাংলাদেশে গনহত্যা চালাচ্ছে যেখানে লাখো মুসলিম এর শিকার। এটি গণতন্ত্র এবং জাতীয় মর্যাদার লড়াই এবং এর সাথে ধর্মের কোন যোগসূত্র নেই।
৩। যখন নির্মম সামরিক শক্তি জনহত্যায় মত্ত তখন কেউ এর প্রতি নির্লিপ্ত আচরন দেখিয়ে বলতে পারেনা এটি একটি নির্দিষ্ট দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। গনতন্ত্রের নীতিকে ভঙ্গ করে এবং জনগনের ইচ্ছাকে অস্বীকার করে এবং দেশকে দখল করার জন্য সৈন্য পাঠিয়ে সামরিক শাসনকাল আসলে আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতি শেষ তীর নিক্ষেপ করেছে এবং পুর্বেরমত এখন আর কোন পাকিস্তানের অস্তিত্ত থাকবে না। যা এখন হচ্ছে টা হল ভাড়াটে সৈন্যবাহিনী শান্তিপ্রিয় জনগণকে আক্রমণ করছে এবং লাখো মানুষকে হত্যা করছে। এটি কোন দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে না।
এটি পুরো মানবজাতির বিবেকের প্রতি একটি আহবান। এই যুদ্ধে এটি খুবই স্বাভাবিক যে, ছাত্র এবং যুবারা গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করছে। তারা যুদ্ধক্ষেত্রে যোদ্ধা হিসেবে আছে, কারখানা এবং খেতে উপকরন উৎপাদন করছে তাদের দেশকে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমর্থ করার জন্য। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলন দেশভক্তির পতাকা সমুন্নত রাখছে এবং গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বায়ত্বশাসন এর জন্য লড়ছে।
এই সংগ্রামে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন তাদের ৫ লক্ষ কর্মী সমর্থকদের এবং আরও শত সহস্র ছাত্রবন্ধুদের সহযোগিতায় যুদ্ধে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতেছেন। ইতোমধ্যে এই মহান সংগ্রামে আমাদের শতাধিক ছাত্র কমান্ডার জীবনদান করেছেন।
আমরা এমন এক শত্রুর মোকাবিলা করছি যাদের পিছনে রয়েছে একচেটিয়া ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, সামন্ত নেতৃবৃন্দ যারা বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন পেয়ে চলেছে বিশেষ করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের। পাকিস্তান সরকার সেন্টো এবং সিয়াটো এর মতন সাম্রাজ্যবাদী সেনাদলের সদস্য।
কিন্তু আমরা জিতব এই পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে লড়ে চলেছি। এই লক্ষ্যে আমাদের সমগ্র বিশ্বের ছাত্রবৃন্দ এবং যুবক ভাইবোনদের আকুণ্ঠ সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রয়োজন। এটি আমাদের কমান্ডারদের সম্মুখ সমরে উদ্দীপ্ত করবে।
আমরা সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব সংগঠনকে এগিয়ে আসবার আহ্বান জানাচ্ছি।
-যাতে করে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃতি লাভ করে এবং আজকে আমরা যে মহৎ উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করছি তার প্রতি প্রাপ্ত সকল রাজনৈতিক, আদর্শিক ও দৈহিক সমর্থনের ঋণশোধ করতে পারি।
-যাতে করে আমাদের যোদ্ধাদের নিকট অস্ত্রশস্ত্র, অর্থ, ঔষধ সামগ্রী, খাদ্যদ্রব্য, কাপড়চোপড় এবং অন্যান্য বস্তুসামগ্রী প্রেরণ করা সম্ভবপর হয়।
-যাতে করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আপনাদের দেশবাসীর সমর্থন প্রাপ্তি ত্বরান্বিত করণ সম্ভবপর হয়।
আমরা আরও একটিবার যুদ্ধক্ষেত্রে সংগ্রামরত আমাদের ছাত্রজনতার নিকট আপনাদের ত্বরিত শুভেচ্ছা ও বার্তা প্রেরণের আবেদন করছি। আমরা নিশ্চিত আপনাদের প্রেরিত বার্তাসমূহ তাদেরকে অনেক বেশি করে উৎসাহিত করবে।
আমরা আপনাদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে প্রেরিত উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। বিপ্লবী শুভেচ্ছা সহকারে,
নয়া দিল্লী
১০ই মে, ১৯৭১
এসডি-/
নুরুল ইসলাম
সভাপতি
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
বিদ্রঃ অনিবার্য কারণবশত আমরা দিল্লীতে একটি অফিস খুলেছি যেখানে সকল ধরণের যোগাযোগ রক্ষা এবং সাহচর্য প্রভৃতি প্রেরণের অনুরোধ করা হল
সভাপতি,
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন,
(পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন)
প্রযত্নে অল ইন্ডিয়া ছাত্র ফেডারেশন
৯২৩, ফায়েজ রোড, ক্যারল বাগ
নয়া দিল্লি-৫, ভারত