ব্যাংক ও সরকারী অফিসের প্রতি শেখ মুজিবের নির্দেশাবলী

<2.170.685>

 

ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি মুজিবের অভিনন্দন।

বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও সরকারী অফিসের প্রতি নির্দেশাবলী।

৪ঠা মার্চ, ১৯৭১ ঢাকাতে দেওয়া বিবৃতি।

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান, যে সকল অফিসের বেতন বাকী আছে তা  আগামী দুই দিনের আহুত হরতালে ২-৩০ হতে ৪-৩০ পর্যন্ত বেতন প্রদানের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সরকারী ও বেসরকারী অফিসগুলোর প্রতি আহ্বান করেন।

আজ রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২-৩০ হতে ৪-৩০ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে শুধুমাত্র বাংলাদেশের মধ্যে বেতন প্রদানের জন্য নগদ ও চেক লেনদেন করা যাবে।

শোষণের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশী জনগণের সমর্থনের জন্য শেখ মুজিব অভিনন্দন জানান। তিনি আরো বলেন কোন জাতিই ত্যাগ ব্যাতিত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে নাই এজন্য তিনি সকলকে এই বন্ধন হতে মুক্তির জন্য সর্বোচ্চ বিসর্জনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন।

তিনি বলেন “শোষনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের সকল সকল পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের বীরত্বপূর্ন সাড়া দেওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাই। বিশ্ববাসী জানুক অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশরে নিরস্ত্র জনগণ, শ্রমিক, কৃষক ও ছাত্ররা বুলেটের মুখেও আন্দোলন করতে প্রস্তুত।

অব্যহত হরতালের কারণে সকল কষ্ট উপেক্ষা করে পাশে থাকার কারণে তাদের অভিনন্দন জানাই। তাদের মনে রাখতে হবে আত্মাহুতি ছাড়া কোন জাতিই স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি। মুক্তির সংগ্রামের জন্য প্রত্যেক্যেই প্রস্তুত থাকতে হবে।”

 

হরতালের আওতামুক্ত

৫ ও ৬ই মার্চ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত আহুত হরতালে নিম্নলিখিত বিষয় সমুহ হরালের আওতামুক্ত থাকবে।

 

 

(১) সরকারী ও বেসরকারী যে সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন বাকী আছে সে সকল প্রতিষ্ঠান দুপুর ২-৩০ হতে ৪-৩০ পর্যন্ত শুধুমাত্র বেতন প্রদানের জন্য কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।

দুপুর ২-৩০ হতে ৪-৩০ পর্যন্ত শুধুমাত্র বাংলাদেশের মধ্যে সবোচ্চ ১৫০০ টাকা বেতনের জন্য চেক অথবা নগদ প্রদানের জন্য ব্যাংকগুলো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।

 

<2.170.686>

 

বাংলাদেশের বাইরে রেমিটেন্সের উপর যাতে কোন প্রভাব না পরে স্টেট ব্যাংক এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

 

রেশন দোকান ও খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এ সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে।

 

(২) নিম্ন লিখিত সেবাসমুহ হরতালের আওতামুক্ত:

 

(ক) হাসপাতাল ও ঔষধের দোকান, (খ) এম্বুলেন্সের গাড়ী, (গ) চিকিৎসকের গাড়ী, (গ) সাংবাদিক, (ঘ) সংবাদপত্রের গাড়ী, (ঙ) পানি সরবরাহ, (চ) গ্যাস সরবরাহ, (ছ) বিদ্যুত সরবরাহ, (জ) স্থানীয় টেলিফোন এবং বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার সঙ্গে ট্রাঙ্ক টেলিফোন,(ঝ) ফায়ার সার্ভিস (ঞ) ঝাড়ুদার এবং আবর্জনার ট্রাক।