যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্টঃ লালগোলা সাব সেক্টর

শিরনাম উৎস তারিখ
২০। যুদ্ধ পরিস্থিতি রিপোর্ট লালগোলা সাব সেক্টর ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র ১৯৭১

 

 

ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash

<১১, ২০, ৩৬৭-৩৭১>

 

 

ক্রমিক নং

 

সূত্র নম্বর ও তারিখ

 

তথ্য অন্তর্ভুক্তির তারিখ ঘটনা
১       জি-নাই

২৩১৫a০০

 

২৩-৬-৭১ ১৮ জুন মহেশকুন্দি বি ও পিতে ১০৩০ টায় মুক্তিফৌজ ৪ জন মুসলিম লীগ নেতাকে হত্যা করে। ১৮/১৯ তারিখ রাতে ফিলিপ নগরে সি ইউ সিকে হত্যা করে। ১৯ জন আমাদের বাহিনী ৬ জন পাকসেনা নিহত ও ১৪ জন আহত হয় প্রাগপুরে। ৯ টি বাংলার ধ্বংস করা হয়। ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে বি ও পি বিল্ডিং ধ্বংস করা হয়। প্রাগপুরের ৮০০ মিটার বামে আমাদের বাহিনী নতুন বাঙ্কার খুঁড়তে দেখতে পায়। ২১ জন আমাদের বাহিনী ২২ জন পাকসেনা মহেশকুন্দি বি ও পিতে ১৬২০ টা থেকে ১৭০০ টার সময় হত্যা করে ও ১১ জন আহত হয়। বি ও পি বিল্ডিং আংশিক ধ্বংস হয়। এখন পাকসেনারা সেটি খালি করে দিয়েছে।

 

জি এক্স এক্স

২৩১৫১৫

২৩-০৬-৭১ ১৪ জুন আমাকদের বাহিনী গোদাগাড়ীতে ৩ ইঞ্চি মর্টার শেলিং করে ৫ জন পাকসেনা হত্যা করে। ১৫ জুন এ টিকে মাইন দিয়ে শিতালি রেইলওয়ে স্টেশনের কাছে ২ টি বগিসহ ইঞ্জিন ধ্বংস করা হয়। হতাহত জানা যায়নি। ১৫ জুন রাজশাহী শহরে একটি হোটেলে আক্রমণ করে ৪ জন পাকসেনা নিহত করা হয়।

 

৩      জি ২৫/৩৫/জি

৩-৭-৭১

৪-৭-৭১ ২০ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সংক্ষেপ প্রতিবেদন। আব্দুল মানিক নামে এক পাকি গুপ্তচরকে নিহত করা হয়। পরামানিক গ্রাম প্রেমতালি থানা-গোদাগাড়ী রাজশাহী। রাজশাহী-নবাবগঞ্জ টেলি তার ধ্বংস করা হয়। তারিখ ২১ জুন ৭১। ২২ জুন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ডাঃ নুরুল হককে হত্যা করা হয়। গ্রাম-পানকৌড়ি, থানা-চারঘাট, রাজশাহী। ২৪ জুন মেসার বিশ্বাস নামে এক পাক গুপ্তচরকে আটক ও হত্যা করা হয়। গ্রাম ও থানা-গোদাগাড়ী, রাজশাহী। শান্তি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লুতফর রহমানকে ২৪ তারিখ আটক ও হত্যা করা হয়। গ্রাম-বাসুদেব পুর, গোদাগাড়ী, রাজশাহী। ২৫ তারিখ গ্রেনেড দিয়ে একজন মিলিশিয়া পাহারাদারকে হত্যা করা হয় এবং রাজশাহী টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ধ্বংস করা হয়। স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৫ টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। সারদা স্টেশনে নাটোরে একজন গার্ড ম্যান নিহত ও ১ জন আহত হয়। চারঘাটে শান্তি কমিটির সদস্য নিহত হয়। ২৬ তারিখ কাটাখালি রাস্তার ব্রিজ থানা-পাবা, রাজশাহী, উড়িয়ে দেয়া হয় ও ২ জন সিভিল গার্ড নিহত হয়। সারদার কাছে বৈদ্যুতিক পাইলন উড়িয়ে দেয়া হয় ও তালাইমারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শত্রু ঘাঁটিতে শেলিং করা হয়। শত্রুরা আর আর এবং মর্টার দিয়ে জবাব দেয়। কাটাখালিতে ৪ টি ট্রান্সফরমার ও বৈদ্যুতিক স্টেশন ধ্বংস করা হয়।

 

৬      জি ০২৫৪

২৯১৮০০

১-৮-৭১ রাজশাহীতে মুক্তিবাহিনী প্রায় ২০০ মাইল এলাকা মুক্ত করে। এখানে বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। মুক্তিবাহিনী কিছু গুরুত্তপুর্ন স্থান দখল করে আছে। এগুলো হল-চিলমারি, দিয়ার মানিক চর, সাহেবনগর, কুদালখালি, বাকেরালি পাঙ্খা, পিরোজপুর, জগন্নাথপুর, ফরিদপুর ও হাকিমপুর।

 

জি ০২৫৩

২৯০২০০৫

১-৮-৭১ ১৭ জুলাই শান্তি কমিটির সদস্য সুধীর, মুক্তার ও সুবহান গ্রেনেডে আক্রান্ত হয়-স্থান-কিশরপুর, থানা-চারঘাট। শত্রুদের চর আব্দুল মান্নাফ ১৯ জুলাই গ্রেনেড আক্রান্ত হয়। ঠিকানা-বেঙ্গারি, থানা-লালপুর। সারদাহ স্কুলে পি টি সি পিলে গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। একজন সেন্ট্রি নিহত। পাক এজেন্ট আজিমউদ্দিন-ঠিকানা-সুলতানপুর, থানা-চারঘাট, ছুরিকাহত হয়ে নিহত। বিনদপুরে শান্তি কমিটির সদস্য খাদেম রাজশাহী শহরের ফুটকিপারায় ২০ জুলাই গ্রেনেডে নিহত হয়। ৪ জন মিলিশিয়া সেখানে নিহত হয়। ২০ জুলাই লালপুর থানায় ৭ টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। সেখানে ৭ জন অবাঙ্গালী পুলিশ নিহত হয়। ২৫ জুলাই লালপুর থানা আক্রমণে ৫ রাজাকার ও পাকসেনা নিহত করা হয়।

 

জি ০০৫৪

১৮০৭০০

১৯-৭-৭১ পাকশির কাছে বাঘাইলে টেলিফোনের লাইন ধ্বংস করা হয়। এর ফলে ৬ জুলাই থেকে পাকশি-ঈশ্বরদী, পাকশি-খুলনা ও পাকশি-কুষ্টিয়া টেলি সংযোগ ধ্বংস হয়। মৌলানা আব্দুল লতিফ নামে একজনকে নিহত করা হয়, ঠিকানা-গ্রাম-রুস্তম পুর, থানা-আটঘরিয়া। সে পাবনার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিল। এটি পাবনার ১২ মাইল উত্তরে। তার বাড়িও গ্রেনেড দিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আব্দুস সালাম নামে শান্তি কমিটির সদস্য-সাথে আরেক জন, ঠিকানা-কালিনগর, থানা-নবাবগঞ্জ এটি হয় ১৬ জুলাই। ১৭/১৮ জুলাই রাতে পিরোজপুর, চারঘাটে ৫ জন শান্তি কমিটির সদস্য নিহত হয়।

 

জি ০২৫৬

০৩১৬০৫

৬-৮-৭১        ৩১ জুলাই-১ আগস্ট নবাবগঞ্জ পার্টি দুবাকাদরের কাছে রাজশাহী-নবাবগঞ্জ রাস্তায় ২ টি টেলিফোন পিলার ধ্বংস করে। ৩১/০১ আগস্ট রাজাকার নেতা সাইদুর রহমান নিহত হয়। নবাবগঞ্জ অপারেশন ব্যার্থ হয় কারণ সেখানে খোলাখুলি যুদ্ধ শুরু করা যায়নি। সকল যুদ্ধ প্ল্যান ভেস্তে যায়।

 

১০ জি ০২৬৩

০৮১৩২০

৮-৮-৭১ গোদাগাড়ীতে ২ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে আক্রমণ করা হয়। ৩ জন রাজাকার ও মিলিশিয়া নিহত হয় ও ৪ জন আহত হয়। আমাদের হতাহত নাই। ৭ আগস্ট ৭১২ জনের দল, ১০ টি মর্টার ও ১ ও ৪০ আক্রমণ করে। কয় কমান্ড অনেক ভেতরে প্রবেশ করেন ও ১৪/১৫ তারিখ রাতে নিম্নলিখিত অপারেশন সম্পন্ন করেন। হরিপুর ব্রাঞ্চে রাজাকারদের পোস্ত ধ্বংস করেন। ৪ টি রাইফেল ও ১৮ রাউন্ড গুলিসহ ৯ জন রাজাকার আটক। হরিপুর সেতু ধ্বংস করে নবাবগঞ্জ-রাজশাহীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ধ্বংসের পরিমাণ তীব্র হওয়ায় সেটা মেরামতের অযোগ্য ছিল। আমাদের বাহিনী শত্রুদের অবস্থানে ২১ রাউন্ড মর্টার গোলা নিক্ষেপ করে।

 

১৪ মূল বইয়ে ১১-১৩ নাই। জি ০৩৬৩

১৫১৮০০

১৭-৮-৭১ ৪ জনের একটি দল গুরদি-সারদাহ রাস্তায় ৩ আগস্ট স্টেন গান দিয়ে ৮ মিলিশিয়াকে নিহত ও ৫ জন আহত হয়। ৫ আগস্ট ৭ জনের একটি দল সারদা পি টি সিতে আক্রমণ করে ৩ ইঞ্চি মর্টার দিয়ে। ৬ জন পাকসেনা নিহত ও ৯ জন আহত হয়। ৪ জনের একটি দল সুলতানপুরে, থানা-লালপুর, রাজাকারদের অবস্থানে আক্রমণ করে। রাইফেল ও স্টেনগান দিয়ে ৭ আগস্ট এই আক্রমণ হয়। ১ জন রাজাকার নিহত ও একটি ৩০৩ রাইফেল উদ্ধার হয়।

 

১৫ জি ০২৬৪

১৬১০০০

১৭-৮-৭১ আমাদের ২২ জনের একটি দল রাজশাহী শহরে পাঠানো হয়। ১০ আগস্ট ০১০০ টায় তারা অপারেশন চালায়। মিলিটারি ভ্যানে ৮ টি গ্রেনেড চার্জ করা হয় ১৩ আগস্ট ০৩০০ টায় এবং এতে ৫ জন মিলিশিয়া নিহত হয়। রাজশাহী পি টি আই স্কুলে এ পি মাইনে ৩ জন রাজাকার নিহত ও ১ জন আহত হয়।

 

১৬ জি ০২৬৮

২০২১০০

২১-৮-৭১ ১৪ আগস্ট নাটোর সাব ডিভিশনে ৮ জন রাজাকার হত্যা করা হয়।
১৭ জি ০২৭৬

২৫১৭০০

২৬-৮-৭১ ২৩০৩০০ টায় রাজশাহী থেকে ৩০ মাইল দূরে রাজশাহী নবাবগঞ্জ সড়কের গুরুত্তপুর্ন অভয় ব্রিজ মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিফৌজ ও এখন কয় কমান্ডের নেতৃত্বে ৪৫ জন মিলে ভেঙ্গে দেয়। ৫০ গজ দূর থেকে ২ টি দল আমাদের দলের উপর আক্রমণ করে। তারা নৌকা ও ব্রিজের পাশে লুকিয়ে ছিল। আমাদের বাহিনী ২ ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ চালায় ও লড়াইয়ের কর্তৃত্ব নিয়ে ফেলে। যাত্রীসহ ২ টি শত্রু নৌকা ডুবিয়ে দেয়া হয়। আমাদের একজন নিহত হয়। তার লাশ ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। আমাদের ২ জন গুলিতে আহত হয়। একটি এস এল আর জব্দ করা হয়।

 

১৮ জী ০২৭৮

০২১০০০

৪-৯-৭১ ২০ আগস্ট আমাদের একটি সেকশন দুর্গাপুর রাজশাহীতে অবস্থাণ নেয়। ২২ আগস্ট ৫০/৬০ জন রাজাকার আমাদের বাহিনীকে ঘিরে ফেলে। অনেক গোলাগুলির পর ৯ জন রাজাকার নিহত ও ১২ জন আহত হয়। ২ জন আটক হয়। একই দল ২৩ আগস্ট আরও ২০ জন স্থানীয় ছাত্রদের নিয়ে দুর্গাপুর থানার কাশীপুর স্কুলে শত্রুদের অবস্থানে আক্রমণ করে। ১১ জন নিহত ও অনেক আহত হয়। স্কুল বিল্ডিং এর ক্ষতি হয়। ২৮ আগস্ট আমাদের বাহিনী প্রায় ১ মাইল লম্বা রেলওয়ে লাইন ধ্বংস করে।

 

এটি ছিল খেতুর রোড রেলওয়ে স্টেশনের কাছে রাজশাহী-নবাবগঞ্জ রোডে। ২৩ আগস্ট একটি চাইনিজ রাইফেল উদ্ধার হয়। ২২ আগস্ট শত্রুদের হাতে একজন ছাত্র নিহত ও ২ জন আটক হয়।

 

১৯ জী ০২৭৭

০৩১৪০০

৫-৯-৭২ ২৪/২৫ তারিখ রাতে রাজশাহী-ভেড়ামারা লাইনের ৬৬০০০কে ভি ক্ষমতার ৩ টি পাইলন ধ্বংস করা হয়। তাছাড়া রাজশাহীর মেইন পাওয়ার লাইন ধ্বংস করা হয়। ২ দিন রেডিও স্টেশন বন্ধ থাকে।

 

২০ জি ০২৮১

০৬১৮০০

জি ০২৮২

০৭১৬০০

জি ০২৮৩

১৩১৬০০

১৪-৯-৭১ ২৫ আগস্ট দামকুরা থানা-পাবনায় ২ জন ডাকাত নিহত করা হয়। আফিপারা, থানা-পাবনায় আমাদের বাহিনী ৬ রাজাকার, ১ পাকসেনা নিহত ও ১ পাকসেনা আহত হয়। বেল্বারিয়া রাজাকার/ মুজাহিদ ক্যাম্পে আক্রমণ করে ২২ জন নিহত করা হয় ও ৩০৩ রাইফেল জব্দ করা হয় ৭ টি। শত্রুদের ১৫ জন রাজাকার নিহত ও ৪ জন আহত হয়। রাজাকারদের ক্যাম্প সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর শত্রুরা আমাদের অবস্থানে আক্রমণ করে। সেটি ছিল ইসলামপুরে এস কিউ ০৮২৪ এম/এস ৭৮ ডি/এল। প্রচুর গুলি বিনিময় হয়। শত্রুদের হতাহত ২০ জন। আমাদের ১ জন আহত। ১০ সেপ্টেম্বর ৩ ইঞ্চি মর্টার আর ৭৫ মি মি আর আর দিয়ে আমাদের বাহিনী জন্দিপুরে এস কিউ ৯৮৩০ এম/এস ৭৮ ডি/২ দরাশিয়া এস কিউ ৯৮৩৩ এম/এস ৭৯ ডি/২ ও ইসলাম পুর এস কিউ ০৮২৪ এম/এস ৭৮ ডি/১ এলাকায় আক্রমণ করে। শত্রুরা এগিয়ে যায় ও মহানন্দা নদী পাড় হয়ে দরাশিয়া ও জন্দিপুরে আসে। শত্রুদের কমপক্ষে ৩০ জন হতাহত হয়। ১১ সেপ্টেম্বর শত্রুরা ফরিদপুরের দিকে আগায় এস কিউ ৩১১৬ এম/এস ৭৮ ডি/৩ এবং সেখানে ২ জন আহত হয়। তাদের হেভি আর্টিলারি সাপোর্ট ছিল। শত্রুদের ৫০ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়। আমাদের ১ জন নিহত ও ৫ জন আহত। গণবাহিনীর ৪ টি দলে মত ৩১ জন ১৩১৮০০ সেপ্টেম্বর কাজিপারায় আক্রমণ করে। তাদের ১২ জনকে স্পেশাল মিশনে পাঠানো হয়।

 

২১ নাই।

১৯০৮০০

১৯-৬-৭১ ক্যাপ্টেন রশিদসহ ২ জন নাসিরপারায় বিপারাকপুর ও মহেশকুন্ডির মাঝখানে আক্রমণ করে ২ জন মুসলিম লিগারকে হত্যা করে। চেয়ারম্যানের ঘর পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়।
Scroll to Top