সাক্ষাৎকারঃ ক্যাপ্টেন আবদুল গনি

<১০, ১৬.৭, ৩৮১>

সাক্ষাৎকারঃ ক্যাপ্টেন আবদুল গনি*

৮-১০-৭৯

একটি রেইডঃ ৪ঠা ডিসেম্বর হরিণাকুণ্ড থানার উপর তারা যখন রেইড করে তখন তাদের সাথে আমি ছিলাম। রেইড করার পর তারা যখন সেখানে বসে যায় তখন আমাকে তারা বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসে।

প্রশ্নঃ সেখানে কি নিয়মিত বাহিনী ছিল, না রাজাকার ছিল?কি জন্য রেইড করেছিল?

উত্তরঃ সেখানে কোন নিয়মিত বাহিনী ছিল না। সেখানে ২০/৩০ জন রাজাকার এবং কিছু পুলিশ ছিল। এদের মধ্যে কয়েকজন রাজাকার ধরা পড়েছিল। পুলিশদের ধরা যায়নি, তারা পালিয়ে গিয়েছিল এবং যে কজন রাজাকার ধরা পড়েছে তাদের ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে মেরে ফেলা হল।

প্রশ্নঃ কতক্ষণ গুলি বিনিময় হয়?

উত্তরঃ সেদিন হাটবার ছিল। সন্ধ্যার পর যখন ভেঙ্গে গেছে তখন সাধারণ লোকের মাঝে মিশে গিয়ে পুরো থানাকে ঘিরে ফেলি। কমান্ডার প্রাক্তন হাবিলদার আবদুর রহমানের নির্দেশ ছিল তিনি প্রথমে গুলি করলে তারপর চারদিক থেকে গুলি করা শুরু হবে। রাত ৯টার সময় সাধারণ লোকজনও বাইরে ছিল না। তখন আমরা পজিশন নিয়ে ফেলেছিলাম। আমরা সেখানে ৭০জন ছিলাম। রাত ৯টার সময় কমান্ডার প্রথম ফায়ার করেন, তারপর আমরা চারদিক থেকে ফায়ার শুরু করি। প্রায় আধা ঘণ্টা ফায়ার চলতে থাকে। তারপর আমাদের পক্ষ থেকে যখন অটোমেটিক গান চালানো শুরু হয় তখন তারা আর না পেরে ফায়ার বন্ধ করে যে যেদিকে পেরেছে পালিয়ে গেছে। কিন্ত চারজন রাজাকার পালাতে না পেরে আমাদের কাছে ধরা দিয়েছে।

প্রশ্নঃ অটোমেটিক আর্মসের মধ্যে কি কি ছিল আপনাদের কাছে?

উত্তরঃ অটোমেটিক আর্মসের মধ্যে একটি লাইট মেশিনগান এবং কয়েকটা ইন্ডিয়ান এলএমজি ছিল, সেমি অটোমেটিক ছিল, এসএলআর ছিল। রাজাকারদের কাছে শুধু রাইফেল ছিল, অটোমেটিক কিছু পাওয়া যায় নাই।

প্রশ্নঃ থানা কি ক্যাপচার করে ফেলেন?

উত্তরঃ জী হ্যাঁ, পুরো থানাটা ক্যাপচার করে ফেলি। ওদের অস্ত্রাগারে যাই। ভেঙ্গে সব আর্মস এমুনিশন আমাদের ওখানে নিয়ে আসা হয়।

প্রশ্নঃ গ্রামের লোকজন আপনাদের খুব সহযোগিতা করেছে?

উত্তরঃ আমাদেরকে পুরো থানার লোকজন খুব সহযোগিতা করেছে। তারা নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে- যেমন আর্মিরা কোথায় আছে, রাজাকাররা আর্মিদের সাথে কোথায় যাচ্ছে এই খবর সংগ্রহ করে আমাদের কমান্ডার আবদুর রহমানের কাছে জানাতো। কমান্ডার সেই মত কাজ করতেন- কবে,কিভাবে, কোথায় রেইড করতে হবে।

*প্রকল্প গৃহীত সাক্ষাৎকার থেকে সংকলিত।

Scroll to Top