অনুবাদঃ সুমিতা দাশ
<৬, ২৯৯, ৫১৬>
শিরোনামঃ জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ ভলিউম ১ নং ২৪
তারিখঃ ৮ ডিসেম্বর, ১৯৭১
.
জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বাংলাদেশের দিকে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক নিয়োগের মত কে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা নিন্দা ও ঘৃণার সাথে অপমান করা হয়েছে।একই মতকে সরকার দ্বারা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করা হয় যত দ্রুত সম্ভব ২২শে জুলাই,১৯৭১।
প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ একে পরিকল্পিত চক্রান্ত ও পিছনের দরজা থেকে ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসন রক্ষা করার পূর্ণ চেষ্টা রুপে আখ্যায়িত করেছেন।
জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ বলেছেন যে প্রস্তাবের ধর্মপিতারা যে কারো ভাগ্যের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবেন যারা “আমাদের বিজয়ের শীর্ষ কাল” এ বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক হিসেবে আসার চেষ্টা করবে।
জনাব আহমেদ বলেন যে ইয়াহিয়া’র সেনা আক্রমণ দ্বারা বাংলাদেশে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ডের সময় যারা নীরব দর্শক ছিল, তারা এখন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক পাঠানোর নামে সেনা জান্তা বাঁচাতে বাইরে এসেছে।তিনি আরও বলেন যে আমরা ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই চূড়ান্ত পর্যায়ে কোনো অজুহাতে কোনো হস্তক্ষেপ সহ্য করব না।
খন্দকার মুশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক নিয়োগ কে সর্বশেষ উদ্যোগে নিন্দা জ্ঞাপন করেন।তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে কোনো প্রকারের জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক বার্তাবাহক এবং সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক স্বার্থের অভিভাবক হিসেবে গণ্য করা হবে।
২রা ডিসেম্বর মুজিবনগরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মানুষের সংগ্রামের উপর দৃঢ় বিশ্বাস ব্যাক্ত করেন এবং বলেন, যদি পৃথিবীর কোথাও কখনো মানুষের সংগ্রাম জয়ী হয়ে থাকে, এটা আবার ও বাংলাদেশে জিতবে।বাংলাদেশের মানুষের সুবিশাল জনসাধারনের অন্তর্নিহিত শক্তি অধীনে করার প্রয়াসের বদলে বাংলাদেশের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ও সার্বভৌম মেনে নেয়ার জন্যে পাকিস্তানের বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানান।
শুধুমাত্র ৭৫ মিলিয়ন বাংলাদেশের মানুষকে বশীভূত করার তথাকতিত আবদ্ধ নিষ্ফল “শান্তি তৈরির প্রচেষ্টা”র জন্য ঘৃণা প্রকাশ করছি না বরং আমরা যে কোন অনাকাংখিত অতিথিদের সতর্ক করে দিতে চাই। ইয়াহিয়া খানের পক্ষে ও জন্যে যেই আসুক না কেন, সে বাংলাদেশে একই উত্তর পাবে যেমন ইয়াহিয়ার হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর আমাদের বীর সদস্যদের দ্বারা পাচ্ছে…..