৫৪। ১৪ জুলাই আমেরিকা তোমার পতাকার তারা গুলো যেন বুলেটের গর্ত

কম্পাইলারঃ সৌ রভ

<৬,৫৪,১০১>

শিরোনাম: আমেরিকা তোমার পতাকার তারাগুলো যেন বুলেটের গর্ত

সংবাদপত্র:  স্বদেশ ১ম বর্ষ: ৩য় সংখ্যা

তারিখ: ১৪ই জুলাই, ১৯৭১

.

আমেরিকা তোমার পতাকার তারাগুলো  যেন বুলেটের গর্ত 

আমেরিকা বার বার বলেছিল, পাকিস্তানকে আর নতুন করে অস্ত্রশস্ত্র দেয়া হচ্ছে না এবং পুরানো শর্তানুযায়ীও অস্ত্রশস্ত্র যাচ্ছেনা। এই কথা দেয়া হয়েছিল ২৫শে মার্চ থেকে ২১শে জুন পর্যন্ত। কিন্তু দেখা গেল সবই নির্ভেজাল মিথ্যা। তারপর যখন নিউইয়র্ক টাইমস অস্ত্র পাঠাবার কথা ফাঁস করে দিল তখন মার্কিন সরকার নাকে কেঁদে বললেন ওটা আমলাতান্ত্রিক ‘মারপ্যাঁচ’। কিন্তু সম্প্রতি ‘থলের বিড়াল’ বেড়িয়ে পড়েছে। আমলাতন্ত্র নন প্রেসিডেন্ট নিক্সন নিজের দায়িত্বে অস্ত্র যোগাচ্ছেন পাকিস্তানকে তিনি নিজেই আমলাতন্ত্রের পরামর্শ খারিজ করেছেন। সেই অতি পুরাতন যুক্তি পাকিস্তানকে অস্ত্র না দিলে দেশটা চলে যাবে চীনের খপ্পরে ইত্যাদি।

.

সমগ্র পৃথিবী বাংলাদেশের ইয়াহিয়ার সামরিক আমলাতন্ত্রের মধ্যযুগীয় বর্বরতা নিন্দায় মুখর ঠিক তখনই পেন্টাগনের কর্তৃপক্ষ ইয়াহিয়ার রক্তাত্ত হাতকে সবল করার জন্য অস্ত্র পাঠাচ্ছে। আমরা জানি মার্কিন সরকার তার শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করে। সম্প্রতি মার্কিন পত্রিকা ‘ বিজনেস উইক’ বলেছে যদি ভিয়েতনামের যুদ্ধ বাবদ সরকারী খরচ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমেরিকার বৃহত্তম কোম্পানির মধ্যে একশ পঁচাত্তরটাই ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে অর্থাৎ এতেই বুঝা যায় যে, পেন্টাগন কর্তৃপক্ষ তাদের অস্ত্রের বাজার সৃষ্টির জন্য উদ্বিগ্ন। আমেরিকার সমরনায়কেরা ও সমরশিল্পের সম্রাটেরা নতুন নতুন যুদ্ধের এলাকা খুঁজে বেড়াচ্ছে কারণ তাদের তৈরী সমর সম্ভার বিক্রির ব্যবস্থা করতে হলে যুদ্ধ বাধানো চাই।

.

পাকিস্তানকে আমেরিকা যতই অস্ত্র পাঠাক না কেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বানচাল করার ক্ষমতা পৃথিবীর কারোর নেই। ভিয়েতনামের মানুষ যেমন মার্কিন ঔদ্ধত্যের জবাব দিয়েছে, বীর প্রসবিনী বাংলার মানুষ আজ সেইভাবে জবাব দিতে প্রস্তুত।