চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটি
<৬,৬,৫৭৭> অনুবাদ
শিরোনামঃ আফ্রো-এশীয় জনমত
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ নিউজলেটার লন্ডনঃ নং ৭
তারিখঃ ২১ জুন, ১৯৭১
আফ্রো-এশিয় পত্রিকার সংবাদ
জাপান
২৪শে মে পশ্চিম পাকিস্তান সফরের পর জাপানের অন্যতম প্রধান অর্থনীতি বিষয়ক দৈনিক পত্রিকা নিপ্পন কাইজাই শিমবান এর একজন প্রতিনিধি মন্তব্য করেন,
” পাকিস্তানের বর্তমান সামরিক শাসন যেটা পূর্ব বাংলার স্বাধিনতা আন্দোলনকে জোরপূর্বক দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে তা পূর্ব বাংলায় স্থায়ি ভাবে শাসন করার প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বকে ক্রমশ প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।”
পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে পরিদর্শনের সুবাদে পত্রিকাটির প্রতিনিধি সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে তার মনভাব ব্যাক্ত করেছেন নিম্নোক্ত ভাবে:
১) প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতা হিশেবে সর্বজন স্বীকৃত নয়
২) প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত পরিমানে অস্ত্র সজ্জিত।
৩) সাধারন জনগন রাজনীতি বিষয়ে নীরব এবং তারা বিদেশি কারো সাথে এ ব্যাপারে কোন কথা বলে না।
৪) পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিকের সংবাদপত্রগুলো কড়া সেন্সরশীপের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় এবং গড়পড়তা খবর ছাড়া আর কিছু প্রকাশ করে না।
৫) ভোগ্য পন্যের ঘাটতি, মজুদ করার প্রবনতা এবং জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি।
উগান্ডা
উগান্ডায় প্রকাশিত সংবাদপত্র দি পিপল (৫মে) এর একটি প্রবন্ধে লিখক নাথান এপেনু প্রশ্ন করেছেন,” পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা বাংলাদেশে সংগঠিত নির্বিচার গণহত্যা নিয়ে বড় বড় রাষ্ট্রগুলো কেনো চুপ এবং নিরাসক্ত?”
যদিও ইউ এস সিনেটর ফুলব্রাইট এবং ব্রিটিশ এম পি শঅ এর মত কিছু প্রতিবাদি কন্ঠের খবর পাওয়া যায় তথাপি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বাংলাদেশে ঘটা গণহত্যা, নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম বিবাদ নিয়ে সামগ্রিক ভাবে পরিপূর্ণ কোন অবস্থান এবং প্রচারনা এখনো দেখা যায়নি।
পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ নিয়ে বড় শক্তিগুলোর এই সম্মিলিত নিরাসক্তির মূলে রয়েছে হয় পাকিস্তান এবং স্বাধিনতাকামি বাংলাদেশের মানুষ এবং দেশগুলোর নিজ নিজ স্বার্থের মধ্যে অপাত অমিল অথবা বড় বড় শক্তিগুলো এই ইস্যুতে সম্পুর্ণভাবে পরস্পর বিরোধী। তাই একটা ভয় কাজ করে যদি কেউ একজন এই যুদ্ধে কোন একপক্ষকে সমর্থন দেয় তাহলে অন্যরা অপর পক্ষকে সমর্থন করবে এবং এটা বৈশ্বিক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার নিতে পারে। অবশ্যই সারা বিশ্বে যাতে এই বিরোধ ছড়ায় না পরে সেই চেষ্টাটা মহৎ, কিন্তু আমরা যা চাই তা হল বড় বড় শক্তিগুলো এই গৃহযুদ্ধে কোন পক্ষকে সমর্থন করার বদলে সম্মিলিতভাবে শক্তিশালি পক্ষকে (পশ্চিম পাকিস্তান) চাপ প্রয়োগ করে একটা সমাধানের চেষ্টা করুক।