৭৯। ২২ নভেম্বর রাজাকারদের জন্য শেষ সুযোগ

সৌ রভ

<৬,৭৯,১২৯>

.

শিরোনামঃ রাজাকারদের জন্য শেষ সুযোগ

সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ ১ম বর্ষঃ ২২শ সংখ্যা

তারিখঃ ২২ নভেম্বর, ১৯৭১

.

রাজাকারদের জন্য শেষ সুযোগ ( নিজস্ব ভাষ্যকার )

বাংলার মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপকতা ও প্রচণ্ডতা সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার পশুদের মনে এক বিভীষিকাময় আতঙ্কের কালো ছায়া রেখাপাত করেছে। স্বাধীনতা মন্ত্রে দীক্ষিত মুক্তিযোদ্ধা ও গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে পাক বাহিনী দিশেহারা, সদা শঙ্কিত। নিতান্ত প্রাণের দায়ে বা মুখ রক্ষার খাতিরে এরা আজ ভগ্নমনে লড়ে যাচ্ছে। এরা এতই শঙ্কিত যে, যে কোন অভিযানে তাবেদার রাজাকার ছাড়া এক পাও এগোতে সাহস পাচ্ছে না। রাজাকার নামক এইসব বকরীগুলো এতদিন খুঁটির জোরে বহু কুদেছে। আজ খুঁটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম দেখে বহু রাজাকার দলে দলে মুক্তিবাহিনীর কাছে অস্ত্রশস্ত্র সমেত আত্মসমর্পণ করে চলছে।

.

পায়ের তলা থেকে যখন মাটি সরে যাচ্ছে, পালে যখন উল্টো হাওয়া বাইতে শুরু করেছে তখন এদিন যারা ধর্মীয় বিভ্রান্তি, প্রলোভন বা সামরিক মোহের বশবর্তী হয়ে অথবা লুটপাটের দরাজ সুযোগ লাভের জন্য সেনাবাহিনীর তল্পীবাহক হয়ে স্বাতি নিধনযজ্ঞে, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনে লিপ্ত ছিল তারা আজ স্বনিত ফিরে পাচ্ছে ক্রম। তাই দলে দলে এরা আত্মসমর্পণ করে চলেছে। রাজাকারদের কাছে শেষ সুযোগ এসেছে। এদের ভেবে দেখা উচিত কার জন্য কিসের জন্য এত আত্মবলিদান করে চলেছে। একবারও কি এরা ভাবছে না যে স্বাধীন বাংলায় এদের কি অবস্থা হবে। বাঙ্গালী হয়ে বাঙ্গালীর প্রতি এই ক্ষমাহীন আচরনের জন্য তাদের শাস্তি পেতেই হবে। আর স্বদেশ দ্রোহিতার বা স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধীদের একমাত্র শাস্তিই হলে মৃত্যুদণ্ড।

.

এখনও কিছু সময় বাকী আছে। আজও যদি এরা মুক্তাঞ্চলে চলে আসে, কৃতকর্মের অনুশোচনা করে, তবে আমরা তাদেরকে পথভোলা মানুষ বলে পরিপূর্ণ নাগরিকের মর্যাদা দেব। যার যা অস্ত্রশস্ত্র আছে তাই সমেত আত্মসমর্পণ করে আত্মপক্ষ সমর্থনের শেষ সুযোগ এসেছে রাজাকারদের কাছে।

Scroll to Top