শিরোনাম | উৎস | তারিখ |
৯৭। ৬ নং সেক্টরের তৎপরতা সংক্রান্ত কিছু তথ্য | ৮ নং সেক্টরের দলিলপত্র | মে – ডিসেম্বর ১৯৭১ |
ট্রান্সলেটেড বাইঃ Razibul Bari Palash
<১১, ৯৭, ৬১৯-৬২৮>
জরুরী
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস
জে বি /৬/ বিবিধ
২২ মে ১৯৭১
প্রতি ,
সমস্ত বাহিনী
বিষয়: দলে ধর্মীয় আচার
১. সমস্ত কয় যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন তাদের বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য গায়েব-ই-জানাজা এবং কোরান খানি ২৮ মে ১৯৭১ নিজ নিজ দপ্তরে ব্যাবস্থা করবেন।
২. কয় কমান্ডোদের অস্থায়ী মসজিদ করার নির্দেশ দেয়া হল। এখানে একজন ইমাম নিযুক্ত হবেন। এবং খুব শীঘ্রই তিনি প্রতিটি কয়ের কাছে যাবেন এবং আধ্যাত্মিক বয়ান দেবেন। তার আগ পর্যন্ত ধর্মীয় ফাংশনের জন্য স্থানীয় ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে ।
৩ . এই ব্যবস্থা মনোবল বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন।
স্বাঃ / অস্পষ্ট
কমান্ডার .
যশোর সেক্টর বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস
(এম এ ওসমান চৌধুরী)
জরুরী
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনী
জে এস /২৫/এক্স এক্স / এ
২৮ মে ১৯৭১
প্রতি
সকল কয় / ক্যাম্প/ এস এইচ/ কিউ
বিষয় – বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস কমিশন
১। জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেসে যোগদানের জন্য আবেদন আহবান করা হচ্ছে। প্রার্থিদের নিচের বর্নিত যোগ্যতার ভিত্তিতে বাছাই করা হবে।
ক)
১। বয়স – ২৫ এর নিচে (১ জুন ৭১ )
২। শিক্ষাগত যোগ্যতা – উচ্চ মাধ্যমিক বা হায়ার সেকেন্ডারি সার্টিফিকেট বা তার সমতুল্য।
৩। জাতীয়তা – জন্মসূত্রে বাংলাদেশী
৪। বৈবাহিক অবস্থা – অবশ্যই অবিবাহিত
খ) সার্ভিস পারসোনেল
ক) বয়স – ২৭ এর নিচে ( ১ জুন ৭১ তারিখে)
খ) শিক্ষাগত যোগ্যতা – ম্যাট্রিক বা তার সমতুল্য
গ) জাতীয়টা – জন্মসূত্রে বাংলাদেশী
ঘ) বৈবাহিক অবস্থা – বিবাহিত/ অবিবাহিত
২। সকল প্রার্থীর শারিরক গঠন ভালো হতে হবে। রোগমুক্ত হতে হবে ও নিচের যোগ্যতা থাকতে হবে –
ক) উচ্চতা – ৫ ফুট ২ ইঞ্চি (কমপক্ষে)
খ) ওজন – ১১৫ পাউন্ড ( কমপক্ষে)
৩। প্রাথিমিকভাবে সেক্টর কমান্ডোরা বাছাই করবেন। তাদের সুপারিশের পরে তাদের চূড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য কিছু অফিসারদের বোর্ডে পাঠানো হবে। এর পরে তাদের মেডিকেল বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তির্ণ হতে হবে – যদি তাতে টিকে যান তাহলে তাদের অফিসারস ট্রেনিং স্কুল মুজিবনগরে পাঠানো হবে।
৪। প্রার্থিদের কোন টি এ ডি এ প্রদান করা হবেনা।
৫। ৭ জুন ১৯৭১ তারিখের আগে আবেদনপত্র ও প্রশংসাপত্র হেড কোয়ার্টারে পৌঁছাতে হবে।
স্বাক্ষর
কমান্ডার
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস
(এম এ অসমান চৌধুরী)
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস
জে এক্স / ১ / এক্স ওয়াই/ ও পি এস
১১ জুন ১৯৭১
প্রতি
সমস্ত কয়
বিষয়: প্রশাসনিক / অপারেশন নির্দেশাবলী
নিম্নলিখিত কাঠামো অপারেশন জন্য গাইডলাইন হিসেবে বিবেচিত হবে এবং কো-অর্ডিনেশন বাহিনীর সঙ্গে বজায় রেখে করতে হবে।
ক) অন্যান্য সব বাংলাদেশ বাহিনীর মত আপনার বাহিনী বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তর ও বাংলাদেশ সেক্টর সদর দপ্তর কমান্ডের অধীনে থাকবে।
খ. কো-অপারেশন ও আমাদের বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের উপর আমাদের সাফল্যের জন্য জরুরী।
(১) অপারেশন পলিসি সি-ইন-সি , বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী (এসপি বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে) দ্বারা প্রণয়ন করা হয় এবং সমস্ত সেক্টর কমান্ডারদের কাছে পৌঁছানো হয় । (বর্তমান নীতি:. কোন প্রচলিত অপারেশন, কোন সম্মুখ যুদ্ধ নয়। তার পরিবর্তে পরিকল্পিত এম্বুশ, আক্রমণ, ঝটিকা অভিযান, (ছোট কিন্তু দরকারি টার্গেট) বৃহৎ পরিসরে (দৈনিক যত সংখ্যক অপারেশন চালাতে পারেন) শত্রু ধ্বংস করতে পারেন, তাদের যোগাযোগ (সম্পূর্ণভাবে গতিহীন করতে) এবং এল-অফ সি, বাহিনী, ক্ষমতা, সম্পদ ইত্যাদিতে বাঁধা দিতে পারেন। আপনার বাহিনী অচ্ছেদ্যভাবে শত্রুর সঙ্গে জড়িত না হয়ে বরং এম্বুশ/ রেইড টাইপের আক্রমণ চালাতে পারে)
২। SHQ এস পি কমান্ডের সাথে কোঅর্ডিনেট করে অপারেশনের প্ল্যান করবে। আমাদের মিত্র আমাদের ফায়ার এস পি ও আর্টিলারি সাপোর্ট দেবে (যেখানে প্রয়োজন) ।
স্বাঃ /
কমান্ড
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী
এনেক্স এ যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী
ফোর্স ltr নং – জে এস / ১- এ/ ৯/ অপারেশন
১১ জুন ৭১
বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত বাংলাদেশ মুক্তি ফৌজের কার্যক্রম
১. ৩০১৮০০ টায় মুক্তি ফৌজ পাক পুলিশ ও আর্মড বিহারি মুসলমান ছুটিপুর ঘাট QT-9259 আক্রমণের সময় বাঁধা দেয়। তিন পাক পুলিশ ও এক জন সাধারণ জনটা নিহত হয়। মুক্তি ফৌজ এসআই এর মৃতদেহ, দুই টি শট গান, এক পাই ৩০৩ রাইফেল এবং এক টি জীপ জব্দ করে।
২. মুক্তি ফৌজ আরএম ৫২৮৪ , মাধবপুর আর এম ৪৬, সায়েস্তাগঞ্জ আর এম ৫৯ ২৯০৫০০ টায় এম্বুশ করে একটি জিপ জব্দ করে। জিপ টি ধ্বংস করা হয়। ২ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়।
৩. বিএসএফ ইনফো হরিপুর পেট ইনস্টলেশনে আর এইচ ২৭ একটি কয় রিইনফোর্সড করা হয় এবং হরিহর ব্রিজে আরএইচ ৩৪৯২ এ ২ টি কয় রিইনফোর্স করা হয়।
৪।. এন / সাব আলতাফ হোসেন মাঙ্কাচর QE ৮৪৪৪ ১৫০ জন সাবেক মুক্তিফৌজ নিয়ে পাকসেনাদের সাথে এক হয়েছে বলে শোনা যায়। সমগ্র পার্টি ২৯ মে (Fn) থেকে নিখোঁজ আছে এবং মাঙ্কাচর এবং ব্রহ্মমাপুত্র এর মাঝখানে আস্তানা গড়েছে।
৫. মুক্তি ফৌজের একটি ইউনিট (কল সাইন ২৪) এস কিউ ৩৬০৫ এলাকায় দুই টি গানবোট, এক টি রেল সেতু এবং এক টি গাড়ি ধ্বংস করে। তারিখ ৩০ মে ।
৬. মুক্তি ফৌজ সুবেদার নুরুল হককে সিভিল পোশাকে আটক করে।
৭. মুক্তি ফৌজের আড়াল থেকে রক্ষা পেতে পাক সেনারা এখন পর্দা যুক্ত গরুর ট্রলি ব্যবহার করছেনযা সাধারণত মহিলারা ব্যাবহার করে।
৮. মুক্তি ফৌজ সোনাইমুড়ি আরআর ৩৪ ২৮০৮০০ টায় আক্রমণ করে একটি পাক জীপ ধ্বংস করে। এক জেসিও সহ ছয় পাক সেনা নিহত হয়।
৯। মুক্তি ফৌজ ২৮/২৯ মে রাতে জগন্নাথ আরআর ৫৪ এর পাক বিওপি এক্রমন করে ১৯ পাক সেনা নিহত করে।
১০. মুক্তি ফৌজ ২৭/২৮ মে লাকসাম আরআর ২৬ তিনটি পাক ৩ টোনার বাহনে অতর্কিত আক্রমণ করে। একজন জেসিও গুরুতর আহত হয়।
১১। মুক্তি ফৌজ ২৯/৩০ তারিখে সালদানদী আরএম ২১ এ পাক অবস্থানে আক্রমণ করে ২৫ জনকে হতাহত করে। মুক্তি ফৌজ আরআর ৬৪ মান্ধা এলাকায় রেলসেতু ধ্বংস করে।
১২. মুক্তি ফৌজ ২০ মে শ্রীনগর আরআর ৭৩ এলাকায় পাক টহল এ অতর্কিত আক্রমণ করে। এতে ১১ জন পাক সেনা নিহত ও তিন জন আহত হয়েছে।
১৩. ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে গুরুতপূর্ন শিল্প যন্ত্রপাতি করাচি তে প্রেরণ করা হচ্ছে।
১৪ . মুক্তি ফৌজ ২৯/৩০ মে রাতে জৈন্তাপুর পাক অবস্থানে হানা দেয়। পাক সেনারা ৩১ মে জৈন্তাপুর বি ও পি ছেড়ে চলে যায়। মুক্তি ফৌজ পোস্টে আক্রমণ করে। পরে পাক সেনারা জৈন্তাপুর এর দক্ষিণ দিক থেকে মর্টার দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। মুক্তি ফৌজ পরে প্রত্যাহার করে।
১৫. মুক্তি ফৌজ ২৯ মে বালিগাদায় পাক বিওপি আর বি ৩০০৪ ধ্বংস করে।
১৬. মুক্তি ফৌজ বালিয়ামারিতে আরএইচ ৩২৯৯ আরসিসি ইস্পাত সেতু উড়িয়ে দেয়।
১৭. আমাদের বাহিনী ২৭ মে সেভেন্থলি হোটেল লগে নিচের আইটেম এর চাহিদা দেয় বারসোরা নামক স্থানে আর বি ২৩০৫। বুল্ডোজার একটি, লোডার ২ টি , ট্রাক্টর ৩ টি।
গোপনীয়
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্স
জে এস /১-ডি/জি
১১ জুলাই ৭১
প্রতি
ক্যাপ্টেন শফিকুল্লাহ
কয় কমান্ড – ই কয়
হাকিমপুর
কপি – ব্রিগেডিয়ার এন আ সালিক
কমান্ডার সি সেক্টর
ব্যারাকপুর
বিষয়: কার্য
নিচের কাজগুলো ১০ জুলাই ৭১ সম্পন্ন করা হবে।
ক) মাইনিং
– কলারোয়া-সোনাবারিয়া রাস্তা
– কলারোয়া-বাকশা রাস্তা
– কাকডাঙা-মান্দ্রা রাস্তা
– সোনাবারি রাস্তা মোড়
খ) আক্রমণ (সামর্থ্য অনুযায়ী যেকোন দুইটি)
– হিজালদি বিওপি
– মান্দ্রা নি ও পি
– হাঠাতগঞ্জ অবস্থান
– কেশবপুর পি এস
গ) এম্বুশ
সোনাবারিয়া
– বালাডাঙ্গা
– ত্যালাইগাছা
– ভালদি
– কেন্দ্রাগাছি
ঘ) যেসব ব্রিজ উড়াতে হবে – ব্রজ বক্স ব্রিজ ( কলারোয়া – নাভারন রোড)
ঙ) ফেরী – কাবোডাক নদীর ফেরী পুড়িয়ে দিতে হবে। এটি কেশবপুর কলারোয়ার মাঝে অবস্থিত।
২। এগুলোর বাইরে জিটার ফাইটিং পেট্রোল নিয়মিত পরিচালিত হবে আপনার নির্দেশনা মোট। যোগাযোগের সকল লাইন বন্ধ করে দিতে হবে। এবং আপনার এলাকায় একটিভ এজেন্টদের ধ্বংস করতে হবে।
৩। একদিন সম্পূর্ন বিশ্রাম না দিয়ে দুই ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। অর্ধেক একদিন বিশাম নেবে বাকি অর্ধেক পরের দিন।
৪। দয়া করে চেক করুন।
স্বাক্ষর
কমান্ডার
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্স
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্সেস
নং – জে এস / ২৩/৫/৮
১৯ জুন ৭১
প্রতি:
সমস্ত কয়
বিষয়: আর্মস ও এম্যুনিশনের তদারকি বিষয়ে
১। এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সঠিকভাবে দেখভাল করা হচ্ছেনা। যার ফলে অধিকাংশই অমেরামতযোগ্য হয়ে পড়ছে। কমান্ডার এটি গুরুত্বের সাথে দেখেন এবং নিম্নলিখিত পদ্ধতি প্রস্তাব করেন যা অবিলম্বে গৃহীত হবে:
ক) সকল অস্ত্র যা কয় পাবে যেগুলো নির্দিস্ট নামের জন্য ইস্যু করা হবে। সেই ব্যাক্তি নিজে এর জন্য দায়ী থাকবেন।
খ. সপ্তাহে ১ দিন কয় কমান্ডো অস্ত্র / গোলাবারুদ পরীক্ষা করবেন।
গ. ব্যাবহারের পরেই অস্ত্র পরিষ্কার করতে হবেকর্ম পর পরিষ্কার করা হবে.
ঘ. অস্ত্র / গোলাবারুদ যেগুলো ব্যাবহার হচ্ছে না সেগুলো পদ্ধতি অনুযায়ী একটি সঠিক জায়গায় রাখা হবে।
ঙ) কয় আর্মার সপ্তাহে একবার অস্ত্র / গোলাবারুদ পরিদর্শন করবেন। কোন ব্যক্তির অবহেলার কারণে সমস্যা হলে তা হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট করা হবে।
চ. অস্ত্র / গোলাবারুদ অব্যবহার্য ঘোষিত হলে সেগুলো নামে ইস্যু করা হয়েছিল তার নাম সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হবে। যদি প্রমাণিত হয় যে এটি ইস্যুকৃত ব্যাক্তির অবহেলার কারণে অচল হয়েছে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২. এই আইন কঠোরভাবে মেনে চলা দয়া করে নিশ্চিত করুন।
স্বাক্ষর
কমান্ডার
যশোর সেক্টর
বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস
গোপনীয়
দশটি অনুলিপির কপি নং ৫
সদর দপ্তর ৮ সেক্টর
বাংলাদেশ বাহিনীর
জে এস / ৩০-সি / এক্সএক্স / জি-এসডি
০৭ আগস্ট ৭১
প্রতি
সমস্ত কয়
বিষয়: লঞ্চ করার আগে প্রশিক্ষিত গেরিলাদের অবস্থান সম্পর্কে
যতক্ষন না তাদেরকে ভেতরে পাঠান হয়, ততক্ষন পর্যন্ত তারা লঞ্চিং এরিয়াতে অবস্থান করবে। নিন্মবর্নিত কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য এই সময়সীমা যতটা সম্ভব কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে, এবং এটা কোনভাবেই ১৫ দিনের বেশী হওয়া যাবে না।
এসময়ে তারা নিম্ন বর্ণিত কাজ সম্পন্ন করবে।
১। প্রেস্ক্রাইবড নিয়মের ২ থেকে ৬ ধারা অনুযায়ী এবং পরিশিষ্ট ‘এ’ অনুযায়ী তারা নির্ধারিত অস্ত্র / সরঞ্জাম দিয়ে নিজেদের সজ্জিত করবে।
খ. তাদের নিম্নের অপারেশন গুলোর যেকোন একটির উপড়ে প্রাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা দেয়া হবে:
(১) চোরাগুপ্তা হামলা
(২) ধ্বংস
(৩) রেইড / আক্রমণ
২। দয়া করে এই অনুযায়ী চলুন।
স্বাঃ /
কামাণ্ডার
৮ নং সেক্টর
বাংলাদেশ বাহিনী
হেডকোয়ার্টার
৮ নং সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্সেস
নং – জে এস / ৩০- সি/ এক্স ওয়াই/ জি
১৭ অগাস্ট ৭১
প্রতি
সকল নিয়মিত বাহিনী
সকল গণ বাহিনী
সকল রাজনৈতিক উপদেষ্টা
বিষয়: রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যাপারে
১। এই সেক্টরের প্রশাসনিক উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ পূর্বক নিম্নলিখিত রাজনৈতিক উপদেষ্টা দের নিম্নরূপে পোস্টিং দেয়া হল –
ক. জি -৭- কয় ATT এফ কয় দ্রষ্টব্য-মি. আজিজুর রহমান আক্কাস, এমএনএ. (শিকারপুর)
খ. জি -৬ কয় ATT সি ‘কয় দ্রষ্টব্য-মি. শহিদুদ্দিন , এমএনএ.
গ. জি -৫ কয় ATT 4 বি কয় দ্রষ্টব্য-মি. মোহাম্মদ ইউনুছ আলী এমপি উ (বেনপুর)
ঘ. জি -৪ কয় ATT 4D ‘কয় দ্রষ্টব্য-মি. এখলাস উদ্দিন আহমেদ. সাংগঠনিক সচিব. জেলা
আওয়ামী লীগ, যশোর.
ই. জি -৩ কয় ATT 4H ‘কয়য় দ্রষ্টব্য-মি. তাবিবুর রহমান সরদার, এমপিএ. (পেট্রাপোল)
চ. জি-২ কয় ATT ‘ই’ কয় দ্রষ্টব্য-ড. আবুল ইসলাম, এমপিএ. (হাকিমপুর)
ছ. জি -১ কয় att4A ‘কয় দ্রষ্টব্য-মি. মমতাজ আহমেদ, এমপিএ. (গোজাডাঙ্গা)
২। রাজনৈতিক উপদেষ্টা রা ২৫ আগস্ট ৭১ থেকে তাদের নিজ নিজ কয়ে তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করবেন।
৩। সংশ্লিষ্ট দল প্রতিটি রাজনৈতিক উপদেষ্টার জন্য এক টি ১৮০ পাউন্ড তাঁবুর ব্যবস্থা করবে। আর একটি পাতলা বেডশিট বরাদ্দ রাখবেন।
৪। যোগদানের রিপোর্ট কয় তাদের হেড কোয়ার্টারে জানাবে।
স্বাঃ /
কমান্ডার
৮নং সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্সেস
গ্রামের মণ্ডল / মোড়ল/ মাতব্বর এবং অন্যান্য
সকলের প্রতি নির্দেশাবলি –
১। স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের আদেশ ও নির্দেশাবলি মেনে চলুন এবং গ্রাম বাসী সকলকে মানতে অনুরোধ করুন।
২। জঙ্গি ইয়াহিয়া সরকারের প্রশাসনিক ব্যাবস্থা পুড়ন প্রতিষ্ঠার সকল প্রচেষ্টাকে বানচাল করুন।
৩। মুক্তিফৌজ কে সর্ব প্রকার সাহায্য করুন। কারণ তারা আপনার স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তারা আপনার সংগ্রামী ভাই, এটা আপনার নৈতিক কর্তব্য।
৪। পাক বাহিনীকে সকল প্রকার সাহায্য থেকে বঞ্চিত করুন। আপনারা নিজ নিজ বুদ্ধি দ্বারা তাদের ক্ষতি করুন।
৫। স্বাধীনতা সংগ্রামের কোন আপোষ নাই, কষ্ট আমাদের করতে হবে। ‘রক্ত যখন দিতে শিখেছি তখন আরও দেব, দেশকে স্বাধীন করব ইনশাল্লাহ।
৬। পাক সেনাবাহিনীর তাবেদার রা হুশিয়ার – তাদেরকে এঁকে এঁকে মুক্তিফৌজ সমূলে বিনাশ করবে। আপনারা এগিয়ে আসুন ও বিশ্বাস ঘাতকদের চরম শিক্ষা দিন।
৭। বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে হুশিয়ার থাকুন। তারা আপনাদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে। মুক্তিফৌজের গোপনীয়তা রক্ষা করুন। আপনার ক্ষুদ্র একটা ভুল অনেক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
৮। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শুনুন, এটাই বাঙ্গালীর মুখপাত্র। শত্রুর মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত হবেন না। সত্য, ন্যায় ও স্বাধীনতার সংগ্রাম সর্বদা জয়যুক্ত হয়।
জয় বাংলা
জয় মুক্তিফৌজ
আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ
সেক্টর কমান্ডারদের আদেশ
১। যেকোন মূল্যে শান্তি বজায় রাখা হবে। মুক্তিবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সিভিল প্রশাসনেকে সাহায্য করবে।
২। রাজাকার বা অ- বাঙালি হওয়ার অজুহাতে কাউকে হত্যা করা যাবে না। রাজাকারদের অস্ত্র সমর্পণ করতে বলা হবে। কুখ্যাত রাজাকার নেতাদের ছাড়া (এবং যাদের বিরুদ্ধে জনগণের তেমন কোন অভিযোগ নাই) বাকি দের ক্ষমা এবং মুক্ত করা হবে। কুখ্যাত গুলোকে পরে বিচারের জন্য কারাগারে রাখা হবে। পাবলিক বা গণ বাহিনী কেউ তাদের হাতে আইন তুলে নিতে পারবেনা।
৩। গণ বাহিনীকে খোঁজ কর নিকটতম মুক্তিবাহিনী অফিসারের কাছে রিপোর্ট করার জন্য। অস্ত্র সহ তাদের বিবরণ সংরক্ষণ এবং জনজীবন ও সম্পত্তি রক্ষার কাজগুলো তাদের উপর অর্পণ করা হবে । শহরে নিয়মিত বাহিনী / গণ বাহিনী একত্রে টহল ডিউটিতে থাকবে। সকল ভান্ডার. ব্যাংক. কারাগারে. কমিউনিকেশন সেন্টার ইত্যাদিতে পাহারা থাকবে।
৪। সরকারী সম্পত্তির সুরক্ষার উপর বিশেষ মনোযোগ দেয়া হবে। যেমন – টেলি এক্সচেঞ্জ, অফিস, কলেজ এবং স্কুল ও খাদ্য গুদাম। যেখানেই প্রয়োজন সেখানে সেন্ট্রির ব্যাবস্থা করতে হবে। খাদ্য গুদাম স্থানীয় সিভিল প্রশাসক অথবা মুক্তিবাহিনী অফিসার এর অনুমতি ছাড়া খোলা যাবেনা।
৫। নিয়মিত বাহিনীর অফিসার / JCO গন মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম চেক করবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের উপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবেন।
৬। যে কোন মুক্তি বাহিনীর লোক – হোক সে নিয়মিত বাহিনী বা গণ বাহিনীর – যদি কোন অবাঞ্ছিত কার্যকলাপে লিপ্ত হয় তবে তাকে নিরস্ত্র করা হবে ও বিচারের জন্য ট্রায়ালে পাঠানো হবে। কোন প্রকার করুণা দেখানো হবেনা।
৭। এলাকায় সব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে এবং তাদের মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে সংগ্রহ করতে হবে। এই ব্যবহার করা হবে না কিন্তু এলাকার সিভিল প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। কোন গাড়ি স্থানীয় সিভিল প্রশাসক বা মুক্তিবাহিনীর অফিসার থেকে পাওয়া অনুমতিপত্র ছাড়া চলতে পারবেনা। ব্যক্তিগত গাড়ী / ট্রাক / বাস মালিকদের সিভিল প্রশাসক থেকে পারমিট পাওয়ার আগে তাদের সত্যতা যাচাই করা হবে। সরকারী যানবাহন প্রশাসক এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
৮। সিভিল/ পুলিশ কর্মকর্তা ও কলেজ / স্কুল শিক্ষক অবিলম্বে তাদের কর্তব্যে যোগদান করতে বলা হবে। তাদের সেবা অব্যাহত থাকবে, কিন্তু তাদের সেবা ব্যবহার রীতি উপযুক্ত সরকারি সংস্থা দ্বারা স্থির করা হবে। তাই তারা যে এলাকায় (জেলা / মহকুমা বা থানা) যোগদান করবেন সেখানকার প্রশাসক এর কাছে যোগদান পত্র দাখিল করবেন । তাদের আস্থা পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করুন।
৯। সকল অস্ত্র ও রাজাকারদের গোলাবারুদ, পুলিশ থেকে নেয়া অপসৃত পাকবাহিনীর অস্ত্র নিকটতম থানা / মহকুমা সদর বাহিনী ইউনিট এর কাছে জমা করা হবে ও নিরাপদ হেফাজতে রাখা হবে এবং তারপর কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ করা হবে। তবে ইতোমধ্যে পুলিশ জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শক্রমে উদ্ধার করা অস্ত্র নিয়ে নিতে পারে। অস্ত্র / গোলাবারুদ সংগ্রহ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
১০। লোকালয় থেকে ডুরে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করুন। এবং কোন বেসরকারী ভবন দখল করবেন না।
১১। পরিচয়পত্র কর্তব্যরত নিয়মিত বাহিনী ও গণ বাহিনীর সবাইকে দেয়া হবে রিপোর্টের পরে। ইস্যুকৃত অস্ত্রের তথ্য এই কার্ডে উল্লেখ থাকবে।
১২। সকল বাজার ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে হবে। যাতে মানুষকে তার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে অসুবিধা না হয়।
১৩। সাব-সেক্টর নিশ্চিত করবে যে এই আদেশ যেন সবার কাছে প্রেরণ করা হয়।
স্বাঃ /
কমান্ডার
৮ নং সেক্টর
বাংলাদেশ ফোর্সেস।
তারিখ – ১০/১২/৭১