<৪,২০৮,৪৫২-৪৫৫>
অনুবাদকঃ আইনুল ইসলাম বিশাল
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২০৮। উদ্ভুত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা ভাসানীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি | ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি | ২২ মে, ১৯৭১ |
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি,সভাপতি,ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি,বাংলাদেশ,২২শে এপ্রিল।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের থেকে দেশকে মুক্ত করার চেষ্টা করার জন্য লক্ষ্য লক্ষ্য বাঙ্গালী কারাগারে এবং বন্দী অবস্থায় নির্যাতন ভোগ করে এবং তাদের মধ্যে অনেককে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। এটা একটা দুর্ভাগ্যে যে যদিও তারা ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছে,পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক ও শোষকরা পাকিস্তানের ৭.৫ কোটি সংখ্যা গরিষ্ঠ বাঙ্গালীকে রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক এবং সামাজিকভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।পাকিস্তান সৃষ্টির ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে পূর্ব এবং পশ্চিমে দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের কথা বলে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পূর্ব বাংলায় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলন চলছে। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগণ নির্যাতনের মাধ্যেমে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সামন্তবাদী ও পুঁজিবাদী অধিস্বামীগণের স্বার্থে তাদের নিয়োগকৃত কিছু এজেন্ট দ্বারা এই আন্দোলন নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে।কিন্তু স্বাধীনতার জন্য পূর্ব বাংলার জনগণ গত ২৩ বছর ধরে একটানা সংগ্রাম করছে এবং নিজেদের অনেক রক্ত দিয়েছে। ১৯৭১ সালের সশস্ত্র সংগ্রামই এই সংগ্রামের চূড়ান্ত রূপ।
১৯৪৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান একটি হাস্যকর সংবিধান প্রনয়নের চেষ্টা করে যা পূর্ব বাংলার জনগণ দ্বারা অঙ্কুরেই প্রত্যাখিত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানের নেতারা পাকিস্তানের সংখ্যা গরিষ্ঠের মাতৃভাষা বাংলাকে ধ্বংস করার অপপ্রয়াস চালায়। ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের শোষক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যালট বক্সে আরেকটি ঐতিহাসিক জয় অর্জন করে। তারপর ইস্কান্দার মির্জার শাসন জারি করে এবং তারা পূর্ব বাংলার জনগণের উপর অমানুষিক নৃশংসতা চালায়, পরে গভর্ণর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ জনাব এ.কে.ফজলুল হকের মন্ত্রণালয় বরখাস্ত করে। তারপর, সামরিক একনায়ক আইয়ুব সংবিধান বাতিল এবং পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে এবং সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে।তিনি সব রাজনৈতিক দলের উপর সন্ত্রাসের রাজত্ব চালায়,কিন্তু বাঙালি ভীতু হয়নি, তারা দমে যায়নি। ১৯৬২ সালে ছাত্ররা আইয়ুবের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। কিছু এজেন্টের সাহায্যে আইয়ুব বিশ্বকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে এবং পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে।বিল্পবী বাঙালিরা আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে এবং আইয়ুব সরকারের তথাকথিত আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে।১৯৬৯-৭০ সালে ছাত্র,কৃষক,শ্রমিক ও রাজনৈতিক দল গণ আন্দোলন শুরু করলে আইয়ুব আরেক সামরিক একনায়ক ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবসর নিতে বাধ্য হয়।জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য করা হয়,কিন্তু পর্দার আড়ালে সে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে।পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসক, পুঁজিপতি ও সামন্তবাদীরা ইসলাম ও অখন্ডতার নামে বিপুল পরিমান টাকা খরচ করে।তারা কিছু বিশ্বাসঘাতক যারা তাদের স্থায়ী শোষণের জন্য এজেন্ট হিসেবে কাজ করবে এবং তাদের মন জয় করতে সক্ষম হবে। ১৯৭০ সালে পূর্ব বাংলার জনগণ সার্বজনীনভাবে আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়েছে এবং প্রকাশ করে লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ১৯৭০ সালে ৯৯ ভাগের বেশি প্রতিনিধি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়। এই ঐতিহাসিক বিজয়ের কারন বাঙালির স্বপ্নে আছে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগণ পূর্ব থেকে বুঝে উঠতে পারেনি যে পুর্ব বাংলার জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানী কায়েমী স্বার্থ,শোষণ এবং নিপীরনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে এমন একটি সম্মিলিত রায় দিবে।এই নির্বাচনের রায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে তাদের একই সংগে চিন্তিত ও ক্রুদ্ধ করে তোলে।
তাই, জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৭.৫ কোটি বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার,সমঝোতার দীর্ঘ বন্ধন অস্বীকার করে ২৫ শে মার্চ তার আর্মি জনগণের উপর লেলিয়ে দিয়ে সে মধ্যরাতে ঢাকা থেকে পালিয়ে যায়।টিক্কা খানের নেতৃত্বে ২৫ শে মার্চ রাত ১০.৩০ মিনিটে ঢাকায় সহিংসতা ও হত্যার একটি তান্ডব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আর্মি ট্যাংক,কামান,মর্টার,মেশিনগান ও অন্যান্য মরণাস্ত্র নিয়ে ছাত্র,যুবক,শিক্ষক,অধ্যাপক,বুদ্ধিজীবি,ব্যবসায়ী ও অন্যদের হত্যা শুরু করে।তারা স্কুল,কলেজ,মসজিদ,মন্দির,হোটেল,শিল্প এলাকা ধ্বংস করে এবং অসংখ্য ঘর পুড়িয়ে দেয়।
২৬শে মার্চ থেকে তারা যশোর শহরে এই হত্যাকান্ড শুরু করে, রংপুর,পাবনা,কুষ্টিয়া,চুয়াডাজ্ঞা,বগুরা,টাংগাইল,ময়মনসিংহ এবং আরো অনেক জায়গায় নিরীহ মানুষের উপর বোমা ও গোলাবর্ষন শুরু করে। তারা রাস্তার পাশের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং গণহত্যা সংঘটিত করে, নারী এবং শিশুরাও রেহায় পায়নি। মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয় এবং প্রচুর পরিমানে খাদ্যসামগ্রী ও প্রানি সম্পদ লুট করা হয়। সৈন্যদের দ্বারা দোকানপাট ও ব্যাংক লুট করা হয়। স্কুল ও কলেজ থেকে নারীদের অপহরণ করা হয়।কে জানে তাদের কি হয়েছে?
কেউ এই ধরনের নৃশংসতা শুনেছে?ইতিহাসে কোনো উদাহরণ আছে?চীনের চিয়াং-কাই-শেক এবং রাশিয়ার কায়জার এবং অবিভক্ত ভারতে ব্রিটিশ অত্যাচার অথবা কারবালার জালেম ইয়াজিদের অমানবিক জুলুম নির্মমতার এইসব উদাহরণ সর্বশেষ উদাহরণের সামনে তুচ্ছ স্লান। ইয়াহিয়া সরকার ও তার সমর্থকরা মনে করে যে তারা এই ধরণের নিপীড়ন দ্বারা স্থায়ীভাবে পূর্ব বাংলার জনগণকে শেষ করতে পারবে এবং তারা বাঙালির মেরুদন্ড ভেঙ্গে তাদের শোষণ চালিয়ে যেতে সক্ষম হবে। তারা বিশ্বকে বুঝাতে চেয়েছে পাকিস্তানের শত্রু ভারতের দুর্বৃত্তদের একটি থাবা পূর্ব বাংলার এই আন্দোলন সৃষ্টি করেছে, কিন্তু পৃথিবীর মানুষ বিভ্রান্ত হয়নি। তারা জানত কেন বিদেশী সংবাদদাতাদের ২৬ শে মার্চ পূর্ব বাংলা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য বাংলার জনগণের মহান সংগ্রাম এবং বর্বর হত্যাযজ্ঞ বিশ্বকে জানানোর জন্য বিদেশী সংবাদে প্রকাশ করা হবে ইহাই কি পাকিস্তানী শাসকদের ভয়ের কারন ছিলো না?
বিদেশী সংবাদ প্রতিনিধিরা ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সংবাদ সংগ্রহের জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নিতো। সেখানে ইয়াহিয়ার মত একজন এক নায়ক দেশ থেকে প্রতিনিধিদের বহিষ্কার করেছে বিশ্ব ইতিহাসে ইহাই একমাত্র উদাহরণ নই,বর্বর সরকার শুধুমাত্র প্রতিনিধিদের আটকায়নি, তারা আন্তর্জাতিক রেডক্রস যারা গৃহহীন ও নিপীড়িত বাংলার জনগণকে সাহায্যের জন্য যেখানে যাচ্ছে সেখানে তাদের প্রতিরোধ করছে।তারা এই কাজ করছে তাদের নিজের অপকর্মের ধামাচাপা দেয়ার জন্য।বাংলার মানুষ স্বাধীনতার জন্য তাদের জীবন দিতে প্রস্তুত তারা বিশ্বকে তা না জানানো নিশ্চিত করতে চেয়েছে।এই গণযুদ্ধ ও ভারতের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।একটি জাতির তার নিজের ইচ্ছে না থাকলে বাইরের সাহায্যে স্বাধীনতা পেতে পারে না।
প্রশ্ন হলো বিশ্বের দেশ গুলির মানুষ ৭.৫ কোটি বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামকে নাকি ঘৃন্য ষড়যন্ত্র ও গণহত্যায় লিপ্ত একনায়কতান্ত্রিক শোষনের শাসনকে সমর্থন করবে।
ইয়াহিয়া, যিনি নিজে মুসলমান ধর্মের নামে নির্দয়ভাবে লক্ষ লক্ষ মুসলিম,হিন্দু,খ্রীষ্টান ও বৌদ্ধর প্রাণ নাশ করছে।তার সৈন্যরা যারা নিজেদের মুসলিম বলে তারা মুসলিম মহিলাসহ নারীদের ধর্ষণ করছে।যারা নিজেদের মুসলমান বলে তারায় মসজিদ ধ্বংস করছে।যে সব মুসলিম নামাজের আহবান করে তাদেরও হত্যা করছে। মুসলিম বিশ্ব এই সম্পর্কে কি করবে?হয় তারা অনৈসলামিক বর্বর ইয়াহিয়ার ঘৃন্য নীতি সমর্থন করবে অথবা তারা কি সত্য,ন্যয় ও ভালোবাসা সমর্থন করবে যেমনটা ইসলাম বলে।৭.৫ কোটি বাঙালি গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে জানতে চায় তারা কি ইয়াহিয়ার একনায়কতন্ত্রকে সমর্থন করবে। তারা কি নিশ্চুপ থাকবে এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপার এই অজুহাতে তারা তাকে এই পরিস্থিতির সমর্থন দিয়ে যাবে।পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপার হতে পারে না।পশ্চিম পাকিস্তানীরা লাহোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যা পাকিস্তান আন্দোলনের মূল বিধান যা অবিভক্ত ভারতের ১০ কোটি মুসলমান কর্তৃক সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছিল তারা গত ২৩ বছর ধরে পূর্ববাংলাকে তাদের উপনিবেশ বানানোর চেষ্টা করছে।এই গণহত্যা বিষয়ে কি কোনো বিশ্ব মতামত নেই?কিছু অজুহাত অথবা অন্য কোনো কারনে গণতান্ত্রিক বিশ্ব কি এই গণহত্যা সমর্থন করবে।চীনসহ সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব সব সময় শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাদের সাহায্যে করেছে.২৩ বছর শোষিত হওয়ার পর পূর্ব বাংলার ৭.৫ কোটি জনগন যখন স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত যুদ্ধে লিপ্ত তখন বর্তমান হত্যাকান্ডে তারা কি ভূমিকা রাখছে।তারা ইয়াহিয়াকে সমর্থন করে কিভাবে বিশ্ব মতামতকে বোঝাতে পারবে যে তারা নিপীড়িত জনগনের বন্ধু।
পূর্ব বাংলা এশিয়ার একটি অংশ, এই দেশের জনগণ এশিয়ার জাতি গুলির দিকে তাকিয়ে বিশেষ করে আফ্রো এশিয়ান জাতি গুলির দিকে।পূর্ব বাংলার জনগণ মানবতার জন্য একটি জ্বলন্ত প্রশ্ন রাখে যখন তাদের মহান সংগ্রামকে চিরতরে ধ্বংস করা হচ্ছে ।
নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত প্রাথমিক স্বীকৃতি দিতে সব শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষ এবং বিশ্বের সরকার গুলির নিকট বিনীত আবেদন করছি। আমি পূর্ব বাংলার সব মানুষের নিকট আবেদন করছি,আমি কৃষক,শ্রমিক,কামার,মৃত শিল্প শ্রমিক,মাঝি,তাতি,কুটির শিল্প,ছাত্র,ব্যবসায়ী,বুদ্ধিজীবি সমাজ এবং চাকুরিজীবি এবং অন্যান্যদের নিকট একটি ইস্পাতের ন্যায় ঐক্যর আবেদন করছি।পূর্ব বাংলার কিছু সুবিধাবাদী যারা ধর্ম ও অখন্ডতার নামে তোমাদের ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে,তারা পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জান্তা,শিল্পপতি,সামন্তবাদী,স্বৈরচারী আমলার এজেন্ট।এই পূর্ব বাংলার মীর জাফররা গত ২৩ বছর যাবত পশ্চিম পাকিস্তানের স্বার্থের এজেন্ট হয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনের পিছনে ছোড়া মারছে।এই বিশ্বাস ঘাতকদের কথা শুনো না। কায়েমী স্বার্থের উদ্দেশ্য হলো আপনাদের প্রতিজ্ঞা এবং ইস্পাতের ন্যায় দৃঢ় ঐক্য বিভক্ত করা। তাহলে আপনারা যুগ যুগ ধরে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসক,পুজিপতি, আমলা ও সামন্তবাদীদের দাস থাকবেন।বর্তমান মুহূর্তে ঐক্য,মানসিক শক্তি ও জ্বলন্ত দেশপ্রেম আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন অস্ত্র,আমাদের বিজয় নিশ্চিত।সৃষ্টিকর্তা অত্যাচারী এবং বিশ্বাস ঘাতকদের ঘৃণা করে।আমরা আমাদের মহান সংগ্রামে অবশ্যই আল্লাহর সাহায্যে পাবো এবং পূর্ব বাংলায় আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম সুখী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন ।