শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১০৯। পূর্ব-পাকিস্তানের উপনির্বাচন | নিউ ইয়র্ক টাইমস | ৩ নভেম্বর ১৯৭১ |
<১৪, ১০৯, ২৫৩-২৫৪>
নিউ ইয়র্ক টাইমস, ৩ নভেম্বর, ১৯৭১
পাকিস্তান ৫৩ টি আসনে নির্বাচন বাদ দিয়েছে
- ম্যালকম ব্রাউন
পাকিস্তান সরকার আজ (২ নভেম্বর) পূর্ব পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সদস্যদের কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া জাতীয় পরিষদের ৫৩ টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পূর্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
এখানে (ঢাকা) যে ঘোষণা দেয়া হল তাতে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের জন্য বড় হতাশার বিষয়। মাত্র ২৫ টি আসনে সামনের মাসে নির্বাচন হবে। এই আসনের সকল প্রার্থীদের সরকার সাবধানে বাছাই করেছে।
জাতীয় পরিষদের ৩১৩ জন সদস্য রয়েছেন যারা ৭ ডিসেম্বর নির্বাচিত হয়েছেন এবং তাদের বেসামরিক শাসনের জন্য পাকিস্তানের সংবিধান লেখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
অধিবেশন স্থগিত
কিন্তু যখন সামরিক সরকারের প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে মার্চ মাসে প্রথম অধিবেশন স্থগিত করা হল, আওয়ামী লীগ ধর্মঘট দিল, যারা ৩১৩ টি আসনের ১৬৭ টি জিতেছিল। পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর সামরিক একশন মার্চের শেষে শুরু হয়, এবং লীগ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পরে ঘোষণা করেন যে জাতীয় পরিষদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে তবে আওয়ামী লীগের ১৬৭ টি আসন বাতিল ঘোষণা করা হল কারণ তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে।
শেখ মুজিবুর রহমানের একটি আসনের ফলাফল স্থগিত রাখা হয় যেহেতু তার বিরুদ্ধে ট্র্যায়াল চলছিল। ৮৮ জনকে বলা হয়েছে তারা স্বতন্ত্র হিসেবে অংশগ্রহণ করতে পারেন যেহেতু আওয়ামীলীগ কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২৭ ডিসেম্বর অধিবেশনের দিন ধার্য
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১২ অক্টোবর ঘোষণা করেন যে পরিষদের সভা ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবং একটি নতুন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, ক্ষমতা স্থানান্তরের ৮০ দিনের মধ্যে পরিষদ একটি সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করতে পারেন যা রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় তৈরি করা হবে।
বাংলার জনগণ পাকিস্তানি সামরিক সরকারের মধ্যবর্তি নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। তারা পরিষদের সভাকে জালিয়াতি ঘোষণা দিয়েছেন এবং গত ডিসেম্বরের নির্বাচনকে না মানায় সরকারের নিন্দা করেছেন।
ডঃ এ এম মালেক নামক একজন বেসামরিক ব্যাক্তিকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন গভর্নর হিসেবে সেনাবাহিনী নিযুক্ত করেছে। সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে “উপনির্বাচনের অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, কিন্তু একদম কিছু না হবার চাইতে অন্তত সেটা ভালো হবে।”
আওয়ামী লীগের মতাদর্শে বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলকে উপনির্বাচনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এবং সম্ভাব্য প্রার্থীকে সরকার-নিয়ন্ত্রিত প্রেস থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
সরকার ডানপন্থীদের মদদ দিচ্ছে
সরকার কঠোরভাবে ধর্মীয় এবং সরকারপন্থী প্রবণতার সঙ্গে মেলে এমন কিছু ছোটখাট ডানপন্থী দলকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাঁধা দেয়নি। এই দলগুলোর সাধারণত তাদের প্রার্থীদের বেছে নেয়।
যে দলটি ৫৩ টি আসন থেকে সবচেয়ে বেশী সিট পাবে সেটি হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। এটি মোসলেম গোঁড়া দল হিসেবেও পরিচিত। এটি অত্যন্ত ডানপন্থি এবং আজ জানা গেছে যে এরা ১৪ টির মত আসন পাবে।
এই দলের পূর্ব পাকিস্তানে কোন রাজনৈতিক প্রভাব নেই এবং গত ডিসেম্বরের নির্বাচনে এরা কোন আসনে জয়ী হয়নি।
সরকার পূর্ব পাকিস্তানে যে ৮৮ টি আসন বাতিল করেনি তাদের নির্বাচিতদের সিট গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। তবে, তাদের অধিকাংশই ভারতের কাছে মিথ্যা কথা বলেছে অথবা গেরিলা বাহিনীতে যোগ দিয়েছে।