পূর্ব পাকিস্তানে বিদেশী স্বেচ্ছাসেবী দ্বারা সাহায্য বিতরণ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি

৭.২১.৫২-৫৩

শিরোনাম সূত্র তারিখ
২১। পূর্ব পাকিস্তানে বিদেশী স্বেচ্ছাসেবী দ্বারা সাহায্য বিতরণ সম্পর্কে ওয়াশিংটনস্থ রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রেরিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি সূত্রঃ সরকারী দলিলপত্র

 

তারিখঃ২৯ এপ্রিল,১৯৭১

 

গোপনীয়

জরুরী

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ইসলামাবাদ।

No. IC-9/1/70 April 29,1971

 

মাননীয় রাষ্ট্রদূত,

অনুগ্রহ পূর্বক এপ্রিল ২৯,১৯৭১ এ আমার পাঠানো ত্রাণ সহায়তা বিষয়ে সম্পর্কিত টেলিগ্রামটি (নং ৩০১৪) পড়ে দেখার জন্য অনুরোধ রইল। এর সাথে সম্পর্কিত টেলিগ্রাম নং ২২৪৬, তারিখ এপ্রিল ২৪,১৯৭১ এবং বিজ্ঞপ্তি নং IC-9/1970 ,তারিখ ২৪/৪/৭১- এগুলোর প্রতিও আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

২. উপরে উল্লেখিতসূত্র সমূহেও আমরা যেমনটি বলতে চেয়েছি, সরকার বাইরের রাষ্ট্র হতে আগত শত শত ‘স্বেচ্ছাসেবী’ দের ত্রাণ সহায়তার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ছেড়ে দেওয়ার বিপক্ষে। এর কারণ হিসেবে প্রথমত বলা যায়, এভাবে উনাদের দেখাশোনা এবং তত্ত্বাবধান করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে। আমরা ঘূর্ণিঝড় এর সময়কার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে, বেশিরভাগ বিদেশী মেহমানদের কিছু ন্যূনতম সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন, এবং এই সময়ে তার ব্যবস্থা করার মত অবস্থায় আমরা নেই। এছাড়াও নিরাপত্তা জনিত কিছু সমস্যা ও রয়েছেঃ একটি দিক হচ্ছে বিদেশী নাগরিকরা যে কোন সময় দুর্বৃত্তদের হামলার সম্মুখীন হতে পারেন, যাদের অনেকেই এখনো সশস্ত্র। আরেকটি দিক আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তার সঙ্গেও সম্পর্কিত, কারণ এ সমস্ত ‘স্বেচ্ছাসেবী’দের সদিচ্ছা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি ধরেও নেওয়া যায় যে তারা সবাই সত্যিকারের সমাজকর্মী, তারপরও তাদের ঠিকমত দেখাশোনা ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে না পারার বিষয়টি থেকেই যাচ্ছে যা তাদের মাঝে শুধু হতাশাই তৈরি  করবে এবং যার ফলে এক ধরণের নেতিবাচক প্রচারনার সৃষ্টি হবে। সরকার এ সমস্ত ত্রাণ কার্যক্রম তার নিজস্ব সংস্থার মাধ্যমেই পরিচালনা করতে ইচ্ছুক। আর আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, এ বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো সশস্ত্র বাহিনীকেই দেওয়া হবে।

৩. তবে আমরা এমন কোন প্রকার সমস্যা তৈরি করতে চাই না যা এড়ানো সম্ভব, সে জন্য যখন আপনি আমাদের আমাদের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করবেন তখন অনুগ্রহ পূর্বক এই বিষয়টির উপর জোর দিবেন যে, এই মুহূর্তে জরুরী সরবরাহের কোন ঘাটতি নেই। উপরন্তু, সরকার বর্তমানে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত, এবং আমরা যথাসময়ে বিভিন্ন সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের নিকট বিভিন্ন সামগ্রী এবং আর্থিক সহায়তার জন্য অনুরোধ করবো, যা আমাদের নিজস্ব সংস্থার মাধ্যমেই বিতরন করা হবে কারণ বিদেশী নাগরিকরা এ সমস্ত কাজ করতে গেলে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হবেন। যদি পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে, তাহলে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ বিষয়ে যারা অভিজ্ঞ এবং বিশেষজ্ঞ তাদের মতামতও নেয়া হতে পারে। সংক্ষেপে আমরা বলতে চাই যে, আমরা মানবতার খাতিরেই ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার বিপক্ষে নই এবং যখন প্রয়োজন হবে তখন বন্ধুভাবাপন্ন যে কোন রাষ্ট্র এবং সংগঠন হতে যে কোন ধরণের সাহায্য নিতে প্রস্তুত। সেই সাথে এটাও বলতে চাই যে, বর্তমান সময়ে ত্রাণ বিতরন কর্মসূচি শুধুমাত্র সরকারী উদ্যোগেই পরিচালনা করা হবে, এ নিয়ে জোর করা উচিত হবে না।

৪. আপনার টেলিগ্রাম পাওয়ার কিছুক্ষন পর আমি আজ জনাব ফার্মল্যান্ড এর সাথে দেখা করি এবং ত্রাণ বিতরন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশী নাগরিকদের নিকট দিলে কি কি অসুবিধা হতে পারে তা বুঝিয়ে বলি। তিনি আমাকে জানান যে সমস্যাগুলোর ব্যাপারে তিনি ভাল করে বুঝতে পেরেছেন এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট বরাবর এ বিষয়ে চিঠি লিখবেন। বর্তমান অবস্থায় আমাদের নিজস্ব লোকই যে এ কাজের জন্য উপযুক্ত সে ব্যাপারেও তিনি একমত প্রকাশ করেন।

ধন্যবাদান্তে

Sd.

(সুলতান এম. খান)

 

H.E. জনাব এ. হিলালী, HQA, SPK, PFS

পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত

পাকিস্তান দূতাবাস

ওয়াশিংটন ডিসি

 

তথ্য এবং দিকনির্দেশনার জন্য অনুলিপি যাবেঃ

  1. H.E. Mr. J. G. Kharas, PFS

      Embassy of Pakistan, Bad Godesberg

  1. H.E. Mr. M. Masood, PFS

      Embassy of Pakistan, Brussels

  1. H.E. Mr. M. Aslam Malik, PFS

      Pakistan High Comission, Canberra

  1. H.E. Mr. Salman A. Ali, SQA, PFS

     Pakistan High Comission, London

Scroll to Top