পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক স্বাধীন পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠায় ১১-দফা কর্মসূচী

<2.108.493-495>

শিরোনামঃ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক স্বাধীন পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার ১১-দফা কর্মসূচী

সূত্রঃ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন

তারিখঃ ১১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭০

 

স্বাধীন জনতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার ১১-দফা কর্মসূচী

দুটি কথা

পূর্ব-বাংলার জনগণের উপর সাম্রাজ্যবাদী শোষণ আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজির শোষণ ও সামন্তবাদী শোষণ। পূর্ব বাংলার জনগণের শতকরা ৮৫ জন কৃষক যেহেতু তারা সামন্তবাদী শোষণের জর্জরিত-যেহেতু পূর্ব বাংলার জনগণের সাথে সামন্তবাদী শোষণের দ্বন্দ্ব প্রধান। যদিও এই কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক প্রচারিত হচ্ছে তবুও ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব নয়- এই কর্মসূচীর বাস্তবায়ন হতে পারে একমাত্র শ্রমিক শ্রেণীর আদর্শনিষ্ঠ বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে শ্রমিক, ভূমিহীন কৃষক, গরীব ও মাঝারী কৃষককে সংঘটিত কর বিপ্লবী, বুদ্ধিজীবী, শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতিসেবী, ছোট-মাঝারী ব্যাবসায়ীদের মাধ্যমে মুক্তি ফ্রন্ট গঠন করার মধ্য দিয়ে, গ্রাম অঞ্চলে শ্রেণী সংগ্রাম তীব্রতর করে, শ্রেণী সংঘর্ষের রুপান্তরিত করে দীর্ঘ দিয়েই স্বধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ছাত্রসমাজ জনতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েমের জন্য সহায়কের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম-যদি ছাত্রসমাজ নিজেদের আরাম, আয়েশ, ভোগ-বিলাস শ্রেণীচ্যুত হয়ে পূর্ব বাংলার জনগণের শ্রেণীশত্রুকে খতম করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করে। সাম্রাজ্যবাদ বিশেষতঃ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির (যাহার চরিত্র আমলা মুৎসুদ্দি) এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উচ্ছেদ সাধন করিয়া পূর্ব বাংলার দেশরক্ষা অর্থনীতি, শাসন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি তথা সর্বময় কর্তৃক পূর্ব বাং;আর জনগণের হাতে থাকিবে। সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির জাতীয় নিপীড়ন ও শ্রেণী শোষণের কবলমুক্ত এই ব্যবস্থায় জনগণের নিরঙ্কুশ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হইবে ও জনতার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হইবে।

 

২। (ক) আঠারো ও তদূর্ধ্ব বয়স্ক-বয়স্কা নর-নারীর ভোট ও প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ভিত্তিতে জনগণ পরিষদ নির্বাচিত হইবে। কোন নির্বাচনী এলাকায় জনগণ ইচ্ছা করিলে যে কোন সময় তাদের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করিতে পারিবে।

   (খ)জনতার গণতান্ত্রিক অধিকার নিরঙ্কুশ করিবার জন্য সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির দালাল ও সমর্থক যে কোন শ্রেণী ও ব্যক্তিকে ভোটাধিকার হইতে বঞ্চিত করা হইবে।

   ৩। (ক) হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী জাতি-উপজাতি বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের জনগণের সমান রাজনৈতিক অধিকার থাকিবে।

   (খ) নারী জাতির সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হইবে।

   (গ) জনগণের সকল প্রকার মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মতাদর্শের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হইবে।

Scroll to Top