বাংলাদেশ সরকারকে আন্দোলনের অগ্রগতি ও সমস্যা সম্পর্কে লিখিত “আমরা” গোষ্ঠীর চিঠি

<৪,১৮৬,৩৬৯-৩৭০>

অনুবাদকঃ খন্ডকার কাফি আহমেদ

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৮৬। বাংলাদেশ সরকারকে আন্দোলনের অগ্রগতি ও সমস্যা সম্পর্কে লিখিত “আমরা” গোষ্ঠীর চিঠি ‘আমরা’ ১১ আগস্ট, ১৯৭১

    জাকার্তা, ১১ই আগস্ট,১৯৭১

প্রিয় জনাব মাকসুদ আলী,

ইতোমধ্যে আপনাকে আমাদের পথের বাধা ও প্রতিকূলতা সম্পর্কে অভিহিত করেছি। আমাদের উৎসাহী জনগণ সেই সঙ্গে সমর্থকরা লক্ষ লক্ষ মনকে আন্দোলিত রাখছিলো এবং অনুকূল মতামতের একটি কাঠামো গঠন শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমাদের ভুলের কারণে সম্প্রতি শত্রুরা বিপুল অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশের ঘটনা প্রবাহের তথ্য প্রকাশ হতে বিরত রাখতে কিছুটা সাফল্য অর্জন করেছে। মিশন থেকে বড় মাপের দল ত্যাগ সাংবাদিক এবং পাঠক সমাজকে আবারো আশ্বস্ত করেছে যে পাকিস্তানের কঠোর নিপীড়ন ও নগ্ন মিথ্যার পরও বাংলাদেশের আন্দোলন এখনো টিকে আছে। নিচে বহুল পঠিত ইংরেজী দৈনিক দ্য জাকার্তা টাইমস এ বিলি’র কলামে সমালোচনাভরে মন্তব্য করা হয়েছে যে (পেপার কাটিং সংযুক্ত করা হল),

“ওয়াশিংটনে ৭ জন এবং লন্ডনে ২ জন কূটনীতিক পদত্যাগ করেছেন এবং ‘বাংলাদেশ’ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন। আমার মনে হল ‘বাংলাদেশ’কে এরই মধ্যে পুরোপুরি মেনে নেওয়া হয়ে গেছে। এটি ছিল পাকিস্তানী ইনফরমেশন সার্ভিসের উক্তি, বুঝতেই পারছেন!”

এমন পরিবর্তীত অবস্থায়, আমরা আমাদের কৌশল পরিবর্তনের কথা চিন্তা করেছি। এর সঙ্গে আমরা একটি বৃহৎ নির্বাচিত প্রভাবশালী অভিজাত শ্রেণী গঠনের প্রস্তাব করেছি। কিন্তু আপনি জানেন এখনও আমাদের চাওয়া স্পষ্টতই খোলাখুলি প্রকাশ করা যাচ্ছে না। যা হউক কিছু গুরুত্বপূর্ণ নাম আপনাকে পাঠাচ্ছি। আমরা সুপারিশ করেছি যে তাদের “দ্য পিপল” পত্রিকার কপি নিয়মিত সরবরাহ করা হবে। এসবের খরচ তাৎক্ষনিক পরিশোধের জন্য আমাদের কাছে বিলগুলো পাঠাবেন। আমরা অন্যদের কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা শুরু করেছি। আমরা আশা করতে পরি যে, শত্রুপক্ষের ছড়ানো মিথ্যা মোকাবেলা করতে পারব এবং আপনাদের সহযোগীতা অবিলম্বে আমাদের কাছে পৌছাবে।

আমরা কি আশা করতে পারি যে, পূর্বের পত্র দ্বারা যে সমস্ত পদক্ষেপ প্রস্তাবিত হয়েছিল তা আপনারা গ্রহন করেছেন?

আমরা এখনও জানি না জনাব হোসেন আলী কর্তৃক প্রেরিত অর্থ আপনারা পেয়েছেন কি না, দয়া করে জানাবেন কি?

সালাম রইল।

আপনার বিশ্বস্ত,

(আমরা)

জনাব এম মাকসুদ আলী,

প্রেস কর্মকর্তা,

বাংলাদেশ মিশন

৯ সার্কাস এভিনিউ,

কলকাতা-১৭,

ভারত।

 

নং। তথ্য ১০/০১/৭১                                              আগস্ট ২১, ১৯৭১

 

প্রিয় আমোরা,

আপনাদের প্রেরিত আগস্ট ১ তারিখের রিপোর্ট এবং আগস্ট ১১ তারিখের পত্রের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আমাদের আগস্ট ৭, ১৯৭১ তারিখের চিঠিতে আমরা আপনাকে জানিয়েছিলাম যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র সচিব স্বাক্ষরিত পত্র উভয় ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। আপনি হয়তো আমাদের চিঠি পেয়েছেন। বস্তুত আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আপনাদের প্রতিষ্ঠানসহ সকল বাঙ্গালী কূটনীতিক যারা প্রবাসে কাজ করছেন তাদের কাছে লিখেছে। আমরা ইন্দোনেশিয়ায় কিছু পত্রিকার এবং মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের ঠিকানার লিস্ট পেয়েছি। বর্তমানে আমরা আপনাকে ২০ কপি সাপ্তাহিক বুলেটিন বাংলাদেশ এবং এক কপি ‘দ্য পিপল’ সরবরাহ করছি। আমরা মনে করি বুলেটিন এবং ‘দ্য পিপল’ এর কপি আপনার দেয়া ঠিকানায় পাঠানোর পরিবর্তে বর্ধিত পরিমান কপি আপনাদের সরবরাহের পর সেখান থেকে বিতরণ করা সুবিধাজনক হবে। আমরা সেখানে এই কপি বিতরনে অসুবিধা সম্পর্কে অবগত নই। আমরা অবশ্য আপনার প্রচারণার খরচের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের ব্যবস্থা করতে পারি।

যদি আপনারা বিতরণ কার্য সম্পাদন করেন দয়াবশত জানাবেন কি আমাদের কোথায় এবং কার কাছে অর্থ পাঠাতে হবে?

আমরা জনাব মাহমুদের কাছ থেকে মোট ৫০ ইউ এস ডলার পেয়েছি এবং এখন পর্যন্ত এটিই ইন্দোনেশিয়া থেকে মিশনের পাওয়া প্রথম সাহায্য।

বিনীত,

স্বাক্ষরিত

(এম মাকসুদ আলী)

জনাব আমোরা

জাকার্তা পেমান্ডাঙ্গান ১১/১০

জিএন সেহারিয়ান্টজাল

ডেপান এ ১ পি

জাকার্তা উতারা

ইন্দোনেশিয়া

Scroll to Top