<001.018.049>

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র প্রথম খণ্ড

শিরোনামসূত্রতারিখ
বাংলা ভাষার পক্ষে প্রকাশিত তমদ্দুন মজলিশের পুস্তিকা (অংশ)পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিশ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭

পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু?- তমদ্দুন মজলিশ*

১। বাংলা ভাষাই হবেঃ

(ক) পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন।

(খ) পূর্ব পাকিস্তানের আদালতের ভাষা।

(গ) পূর্ব পাকিস্তানের অফিসাদির ভাষা। ২। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ভাষা হবে দুটি- উর্দু ও বাংলা।

৩। বাংলাই হবে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা বিভাগের প্রথম ভাষা। ইহা পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা একশতজনই শিক্ষা করবেন।

(খ) উর্দু হবে দ্বিতীয় ভাষা। যারা পাকিস্তানের অন্যান্য অংশে চাকরী ইত্যাদি কাজে লিপ্ত হবেন তারাই শুধু ও-ভাষা শিক্ষা করবেন। ইহা পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা ৫ হইতে ১০ জন শিক্ষা করলেও চলবে। মাধ্যমিক স্কুলের উচ্চতর শ্রেণীতে এই ভাষা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে শিক্ষা দেওয়া যাবে।

(গ) ইংরেজী হবে পূর্ব পাকিস্তানের তৃতীয় ভাষা বা আন্তর্জাতিক ভাষা। পাকিস্তানের কর্মচারী হিসাবে যাঁরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে চাকরী করবেন বা যাঁরা উচ্চতর বিজ্ঞান শিক্ষায় নিয়োজিত হবেন তাঁরাই শুধু ইংরেজী শিক্ষা করবেন। তাদের সংখ্যা পূর্ব পাকিস্তানের হাজারকরা ১ জনের চেয়ে কখনো বেশী হবে না। ঠিক একই নীতি হিসাবে পশ্চিম পাকিস্তানের প্ৰদশেগুলিতে ওখানের স্থানীয় ভাষা বা উর্দু ১ম ভাষা, বাংলা ২য় ভাষা, আর ইংরেজী ৩য় ভাষার স্থান অধিকার করবে।

৪। শাসনকার্য ও বিজ্ঞান-শিক্ষার সুবিধার জন্য আপাততঃ কয়েক বৎসরের জন্য ইংরেজী ও বাংলার উভয় ভাষাতেই পূর্ব পাকিস্তানের শাসনকার্য চলবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলা ভাষার সংস্কার সাধন করতে হবে।

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও অধ্যাপকের উদ্যোগে ১৯৪৭ সনের ২রা সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিশ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষার মাধ্যমে সংস্কৃতি সেবা। বাংলা ভাষার পক্ষে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এদের ভূমিকা ছিল প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ।
Scroll to Top