বিপন্ন যখন

শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৩। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত

সাহিত্যানুষ্ঠান থেকে

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের

দলিলপত্র

….. ১৯৭১

বিপন্ন যখন

…অক্টোবর, ১৯৭১

এই অন্ধকার, নিটোল নিশছিদ্র অন্ধকার, অন্তহীন হোক- সে প্রার্থনা করল মনে মনে। আর সেই সুতীব্র অন্ধকারের কামনার সাথে অসাড় হয়ে যাওয়া চেতনা ফিরে আসে নিঃশব্দে, এবং যখন নিজেকে সে আবিষ্কার করল কচুরিপানার ভরা জলাশয়টির এক প্রান্তে। এক গলা জলের মধ্যে মাথায় কচুরিপানা চাপিয়ে কতক্ষণ লুকিয়ে রয়েছে তার নিজেরই মনে নেই। আমার মা, বউ, চার বছর বয়সের ফুটফুটে ছেলেটি- কেউ বেঁচে নেই, নৈঃশব্দের হু-হু ধূসর পটভূমিতে এই সব মনে এল এখন। ছোট ছোট মাছ অথবা জলের পোকা ক্রমাগত তার শরীরের অনাবৃত অংশ ছুয়ে ছুয়ে যাচ্ছে একটি তীব্র অনুভূতি, সে ঠিক জানে না তা কি, তার সমস্ত শরীরে ওঠানামা করছে। আস্তে করে কচুরিপানা সরিয়ে সে মাথা তুলল এবং একটি আহত জন্তুর মত ভীত দৃষ্টিতে তাকাল চারপাশে কিছুই চোখে পড়ছে না। অন্ধকার, তার চারপাশে এখন মৃত্যুর মত শীতল অন্ধকার।

এবার উঠি, সে ভাবল এবং অশক্ত পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করল। যেহেতু ক্লান্তিতে এখন শরীর ভেঙ্গে পড়ছে, তার পদক্ষেপ সংক্ষিপ্ত এবং এলোমেলো।

জলাশয় পেরিয়ে মাঠ, তার পর আম-জাম-কাঁঠালের বাগান। তারপর, কি আশ্চর্য, তেঁতুল গাছের পেছনে উকি মারে মৃত্যুশয্যার বিবর্ণ স্নান চাঁদ। দু’এক পা এগোতে এই প্রথম স্পষ্ট বুঝতে পারল ক্ষিধে পেয়েছে তার, এক্ষুনি কিছু খেতে না পেলে সে বোধ হয় মরে যাবে। সতর্ক চোখে তাকায় চারিদিক, কোন বাসগৃহ চোখে পড়ে না- কোন নিকানো আঙিনা বা অস্পষ্ট কোন আলো রেখা। এ গাঁয়ে বোধ হয় কেউ বেঁচে নেই। আখের ক্ষেতের আশেপাশে লুকিয়ে নেই কোন সতর্ক প্রহরা। সে ভাবলো এবং হুমড়ি খেয়ে পড়ল ফলন্ত ক্ষেতের কিনারে। আশ্চর্য ক্ষিপ্রতায় কয়েকটি আখ ভেঙ্গে নিয়ে একটিতে কামড় বসাল।

এখন সে একটার পর একটা আখ চিবিয়ে চলছে। শক্ত খোসায় লেগে একপাশ কেটে গিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে, সেদিকে খেয়াল নেই। আখের খোসা ছাড়ান খণ্ডগুলো দাঁতে পিষতে অল্প মিষ্টি অথচ নোনতা তরল পদার্থে মুখের ভেতটা ভরে উঠছে। এখনো পাকেনি, পাক ধরতে সেই আশ্বিন মাস, পুজোর সময়। আর বোধ হয় আমার ক্ষিধে নেই, সে ভাবল এবং আখ চিবানো বন্ধ করল। মাথা ঝিম ঝিম করছে, সমস্ত শরীরে অসহ্য ক্লান্তি এবং ক্রমশ ভারী হয়ে আসা চোখের পাতার সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে অজস্র দৃশ্যাবলী। না, ঘুম আসবে না এখন- কারণ সেই বীভৎস দৃশ্যটি এখনো তার চেতনায় অনির্বাণ। ঘাসের উপর শরীরটা ছেড়ে দিতেই স্মৃতিরা ফিরে এল দ্রুত লয়ে, প্রপাতের মত- তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় অতীতের সেই নির্দয় মুহুর্তটির নৈকট্যে।

আমার নাম জীবন, জীবন দাস- তার মনে পড়ল। মনে পড়ল বিধবা মাকে, জোয়ান বউ সরমাকে, আর চার বছরের ফুটফুটে বাবুকে। গত পরশু সকালে ওরা বেঁচে ছিল, সুস্থ ছিল, প্রাণবন্ত ছিল। অথচ, কি আশ্চর্য, ওরা এখন নেই। হিংসার জানোয়ারগুলো নিরস্ত্র নিষ্পাপদের গুলি করে মেরেছে। আর আমি, উনত্রিশ

বছরের ক্লীব, অক্ষম যুবক আমি, মা ছেলে- বৌকে ঘাতকের হাতে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে এসেছি নিজের মহামূল্য প্রাণটি বাঁচাতে- একথা ভাবতে চোখের জলে ঝপসা হয়ে এল তার সামনের দৃশ্যাবলী।

এখন, এই বিষগ্ন রাতে, তার মনে পড়ল কয়েকদিন আগের একটি অনিশ্চয় রাত্রিকে।

        : আমার বড় ভাবনা হচ্ছে। অন্তরঙ্গ শয্যায় সরমা বলেছিল তাকে।

তা ভাবনা হবারই কথা। যদিও শহর থেকে যাত্রী বোঝাই লঞ্চের আসা যাওয়া হঠাৎ করেই বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। বাতাসে ভেসে ভেসে অনেক মন-কেমন-করা গুজব ছড়িয়ে পড়ছিল দক্ষিণ খুলনার সুদূর নিস্তরঙ্গ এই গ্রামটিতেও। একটা প্রচণ্ড লড়াই শুরু হয়েছে নাকি পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা মিলিটারি আর বাংলাদেশের শহর গঞ্জে বাস করা মানুষগুলোর মধ্যে। কারণটা কি, ওরা সঠিক জানে না কেউ- কেবল গ্রামের একমাত্র কলেজে পড়া ছেলে রফিকের কথাবার্তা থেকে একটা ধোঁয়াটে উপলব্ধির প্রান্তসীমায় পৌঁছেছে ওরা। হাতে টাকা নেই, মাঠে ফসল ফলে না, অনাবৃষ্টি বন্যা অনাহার, দুঃস্বপ্নের অনাবাদী বছরে নিষ্ঠুর দারিদ্র্য দাওয়ায় উঠে বসে পাওনাদারের মত- এ সবকিছুই নাকি পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তাদের ষড়যন্ত্রের ফল। যে বিপুল ষড়যন্ত্রে বিরান হয়ে যায় উর্বর, বর্ধিষ্ণু জনপদ- ফলবতী হয়ে ওঠে আজন্মের অনুর্বর মরুভূমিও। বছরের পর বছর অত্যাচার, অনাচার আর শোষণের অবসান ঘটাতে এই জীবনান্ত যুদ্ধ। আর এ যুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষ জিতবই- রফিকের কণ্ঠে বলিষ্ঠ প্রত্যয় ঝলমল করে।

: আমার বড্ড ভাবনা হচ্ছে। সরমা আবার পুনরাবৃত্তি করে।

ভাবনা আবার কিসের? সরমাকে নয়, যেন নিজেকেই সান্তনা দিতে চেয়েছে জীবন শহরে নাকি তুমুল কাণ্ড হচ্ছে। ক্ষ্যাপা কুকুরীর মত হয়ে গেছে মিলিটারী। মানুষ পেলেই গুলি। কোন বাছবিচার নেই। সরমার গলায় উদ্বেগ স্পষ্টতর হয়ে ওঠে।

: তা শহরে যাই হোক গাঁয়ে তার কি? আমাদের এখানে ত আর যুদ্ধ হচ্ছে না। জীবন সান্তনা দিতে চেয়েছে।

: কিন্তু যদি হয়?

: পাগল! এই অজপাড়াগাঁয়ে মিলিটারী আসপে মরতি? আর কার সঙ্গে যুদ্ধ করবে এখেনে?

সব আশঙ্কাকে জোর করে সরিয়ে পাল্টা এক প্রত্যয়ের প্রশ্নকে বউয়ের দিকে ছুড়ে দিয়েছে জীবন। চুপ করে গেছে সরমা।

গত পরশুর ভয়ঙ্কর সকালের কথা মনে পড়ল এখন। যথারীতি সূর্য উঠেছিল, নদী থেকে এলোমেলো হাওয়া উঠে এসে গ্রামের গাছপালা, বাড়িঘর, মানুষগুলোকে ছুয়ে যাচ্ছিল। সেই প্রশান্ত সকালে আকাশে অনেক সঞ্চারণশীল মেঘ চোখে পাড়েছিল এবং স্পষ্ট মনে আছে জীবনের, বাড়ির পাশের গাছপালা থেকে যথারীতি পাখিদের ডাকাডাকি শুনেছিল ঘুম থেকে উঠেই।

মুখ-হাত ধুয়ে, দু’মুঠো পান্তা খেয়ে, রোজকারের মত রফিকদের বাড়িতে হাজির হয়েছিল। এই আসাটা প্রায় একটি অভ্যেসে পরিণত হয়ে পড়েছিল বেশ কিছুদিন থেকেই- কর্যত শহরে গণ্ডগোল শুরু হবার পর থেকেই। কেবল জীবন নয়, গ্রামের অনেকেই রফিকদের বাড়িতে ভিড় করত রেডিওর খবর শুনতে।

রফিকদের বাড়িতে পৌছে জীবন শুনতে পেল রেডিওতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর হচ্ছে এবং তার চারপাশে ছোটখাটো একটি উৎসুক জনতা। খান সেনারা মার খাচ্ছে। ক্রমাগত জিতে চলছে মুক্তিবাহিনী,

এক রণাঙ্গন থেকে অন্য রণাঙ্গনে। শিগগির বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হবে, রফিকের দৃপ্ত ঘোষণা ভোর বেলাকার এক মিষ্টি স্বপ্লের আমেজ বয়ে আনে যেনবা।

বেলা একটু বাড়তে দূর থেকে অবিরত এক যান্ত্রিক আওয়াজ স্পষ্টতর হয়ে ওঠে। লঞ্চের শব্দ অথবা কোন ষ্টীমারের প্রত্যাশায় ব্যগ্র গ্রামবাসীরা ভাবে। অনেকগুলো জিজ্ঞাসা পাক খায়ঃ যুদ্ধ কি শেষ হয়ে গেল তবে? হেরে গেছে খান সেনাদের দল? সেই শুভ ঘোষণা করতে আসছে বিজয়ী মুক্তিসেনারা?

দুপুরের দিকে তারা এল এবং ঝাঁপিয়ে পড়ল ঘুমিয়ে থাকা পাখির মত অসহায় গ্রামটির ওপর। গানবোট থেকে দূরপাল্লার কামানের শব্দ জেগে উঠতেই আগন্তকের পরিচয় গোপন থাকেনি। গ্রামবাসী প্রথমে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছে। এ রকম একটি ভয়াবহ সম্ভাবনার কথা ওদের কল্পনাতেও অনুপস্থিত ছিল। এখন, এই নির্দয় দুপুরে, অকস্মাৎ তাকে শরীরী হয়ে উঠতে দেখে বৃষ্টির মত আতঙ্ক নামে এবং তা গড়িয়ে গড়িয়ে যায় গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

গানবোটের কামানের শব্দ শুনেই দৌড়ে বাড়ি ফিরেছে জীবন। ওদের বাঁচাতে হবে- আমার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী আর সন্তানকে। এই একটিমাত্র চিন্তায় সে একাগ্র এখন।

দাওয়ায় বসে মা চীৎকার করে কাঁদছে, সরমার মুখ মৃতের মত ফ্যাকাসে, ছোট্ট বাবু অবাক হয়ে চেয়ে আছে- বাড়িতে পা দিতে তার সামনের দৃশ্যপটটি ছিল এই রকম।

-চল, পালাতি হবে। মিলিটারী।

কথা নয়, যেন কাঁদছে জীবন।

-না মা, কিছছু নিতে হবে না। খালি হাতে চল। শিগগির।

মা-বউ-ছেলেকে নিয়ে দ্রুত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছিল জীবন। এখন, এই অভাবনীয় সংকটকালে, মৃত্যু যখন একটু ওপাশে ছা করে দাঁড়িয়ে, একটি নিশ্চিন্ত নির্ভাবনার আশ্রয়ের বড় প্রয়োজন।

অথচ সেই নিশ্চিন্ততার আশ্রয় ওদের জোটেনি। রাস্তার মোড়ে সৈন্যের পোশাক পরে মৃত্যু ওদের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে বসে ছিল। যমদূতগুলোর মুখোমুখি হতে আর্ত চিৎকার করে উঠেছে মা, গলা ছেড়ে কেদে উঠেছে সরমা, আর সেই সাথে ওদের হাতের মেশিনগানগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। চোখের সামনে লুটিয়ে পড়েছে মা, সরমা আর বাবু অথচ, কি আশ্চর্য, জীবনের চুল ছুয়ে বেরিয়ে যায় এক ঝাঁক গুলি এবং সেই সাথে রাস্তার পাশের আগাছা ভর্তি খানার মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ল সে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায়। দ্রুত ঘন ঝোপের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে শুনতে পেল বাবুর গোঙানি, ভারী ভারী বুটের আওয়াজ, বিজাতীয় ভাষার বীভৎস উল্লাসধ্বনি, সহসা কোন নারীকণ্ঠের আর্তনাদ উচ্চগ্রামে উঠে হারিয়ে যায় নিঃশব্দে। গুলির শব্দ থেমে যেতে এবং বুটের আওয়াজ ক্রমশ অপসৃয়মান মনে হতে, হামাগুড়ি দিয়ে বাইরে এসেছে জীবন রাস্তায় তার চোখের সামনে পাশাপাশি এলোমেলো শুয়ে তার জননী, তার জায়া, তার একমাত্র সন্তান, ওরা মরে গেছেএই নির্মম সত্যটি উপলব্ধির পরও চোখে জল এল না তার।

অনেকক্ষণ বিরতির পর আবার খুব কাছাকাছি শোনা গেল গুলির আওয়াজ এবং আর্তচীৎকার। জীবন আর দেরী করেনি। ঝোপের মধ্যে গা-ঢাকা দিয়ে আবার মড়ার মত পড়ে রয়েছে। এই মৃত্যুপুরী থেকে, এই নরককুণ্ড থেকে আমি পালিয়ে যেতে চাই, তার লুপ্তপ্রায় চেতনায় তখন একটিমাত্র সিদ্ধান্ত।

দূর গাঁয়ের এই পরিত্যক্ত জলাশয়ে সে লুকিয়ে থেকেছে সারাটা দিন এবং সমস্ত সন্ধ্যে। কারণ, গানবোটের আওয়াজ মনে হয়েছে কখনো দূরে, আবার কখনও খুব কাছে। রাইফেল, মেশিনগানের আওয়াজ ভেসে এসেছে অনেক বার।

এখন, এই বিবর্ণ শেষরাতে ঘাসের ওপর শুয়ে আছে মানুষটি, যার নাম জীবন, আর যার জীবন এক অন্তহীন অর্থহীন যন্ত্রণার উপাখ্যানে পরিণত। সব হারিয়েও আমি এক অন্ধকারের জন্তুর মত পালিয়ে বেড়াচ্ছি, আমার বিষে নীল হয়ে যাওয়া পদ্মপাতার জীবনকে বাঁচাতে এ কি এক হাস্যকর প্রহসন,এলোমেলো ভাবনারা ঘুরেফিরে আসে।

এই মুহুর্তে, নিজের ওপর প্রচণ্ড ঘৃণাবোধ হতে লোকটি আবিস্কার করে- আজন্মের অন্তরঙ্গ মৃত্যুভয় অকস্মাৎ অপসারিত। তার এখন মরতে কোন ভয় নেই, ভয় নেই সেই সব হিংস্র ঘাতকদের মুখোমুখি দাঁড়াতে। আমি প্রতিশোধ নিতে চাই, সারা শরীরে মাখতে চাই আমার সন্তান-হত্যার রক্ত, একটি অমোঘ প্রতিজ্ঞা ক্রমশ ওকে জড়িয়ে ধরছে নিবিড় করে। অতএব, আমি ফিরে যাব। একটি আশ্চর্য সিদ্ধান্তে নিজেই অবাক হল জীবন।

এখন, ভোররাতের আবছা অন্ধকার গায়ে মেখে, একটি মাত্ৰ কামনা করে হঠাৎ ঋজু হয়ে বসা মানুষটিঅস্ত্র চাই, একটি অমোঘ শাণিত অস্ত্র, যা দিয়ে নিষ্ঠুর আঘাত হানতে পারি আমার সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া হার্মাদদের ওপর।

হঠাৎ জীবনের স্মৃতিতে তার ফেলে আসা বাড়িটি একটি ছায়াছবির দৃশ্য হয়ে ভেসে ওঠে। শোবার ঘর, রান্নাঘর, উঠোন। তারপর ধানের গোলার নীচে এসে থমকে দাঁড়ায় যেন ক্যামেরার চোখ। ওই তো স্পষ্ট চোখে পড়ছে- তীক্ষ্ণধার অস্ত্রটিকে, বিকেলের সূর্যালোক তার অবয়বে প্রতিফলিত।

ফেলে আসা বাড়িটি এক দুর্বার আকর্ষণে ডাকছে জীবনকে। চুম্বকের মত আকর্ষণ করছে গোলার নীচে কাটপাতার তলে লুকিয়ে রাখা হঠাৎ বিপদের অবলম্বন সেই চকচকে ফলার বর্শাটি।

আমি এখন বাড়ি যাব। শেষরাতের হালকা অন্ধকারের মধ্য দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাড়ি যাব- বিড় বিড় করে নিজেকে শোনায় জীবন। আর তখন সে স্পষ্ট শুনতে পেল- একটি চার বছরের কচি ছেলে তার কানের কাছে ফিস ফিস করে বলছে, শোধ নেবে না বাবা?

উঠে দাঁড়ায় জীবন। শোধ নেবে সে।

সব মৃত্যুর প্রতিশোধ।

(অসিত রায় চৌধুরী রচিত)

Scroll to Top