সজীব বর্মণ
<৬,২৫৯,৪৩৯>
শিরোনাম | সংবাদপত্র | তারিখ |
ঐ নতুনের কেতন উড়ে | সংগ্রামী বাংলা
১ম বর্ষঃ৮ম সংখ্যা |
৮ডিসেম্বর,১৯৭১ |
ঐনতুনের কেতন ওড়ে
(সংগ্রামী বাংলার রিপোর্ট)
চটল তথা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এক ডাকে সমস্ত মুক্তিবাহিনী জেগে উঠেছে। উত্তরের দিকে ঠাকুরগাঁ মহকুমা সম্পূর্ণ মুক্ত। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে দিনাজপুর জেলা আমাদের দখলে আসবে তাতে কোন ভুল নাই। খানসেনারা এখানে দারুণভাবে মার খেয়ে সৈয়দপুর ঘাঁটি কাঁহা হ্যায় বলতে বলতে দৌড়িয়েছে। ফরিদপুর জেলা সম্পুর্ন মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীনে। সেখানকার নদীগুলোর প্রতিটি নৌকার মাঝিই মুক্তিবাহিনীর একজন বীর সেনা। টাঙ্গাইল জেলার সম্পুর্ণ, কুমিল্লা, ফেনী, মাগুরা প্রভৃতি এলাকায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়ছে পত পত করে। খান দস্যুসেনাদের তাড়িয়ে দিয়ে আজ বাংলা ধন্য। প্রতিটি এলাকায় বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। দেশকে আবার নতুন করে গড়ার কাজে দেশের ছাত্র জনতা ও নেতৃবৃন্দ দিবা-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। “আমরা বাঙালী” এই মন্ত্রে একতাবদ্ধ হয়ে সমস্ত জাতি আজ দেশ গঠনের কাজে ব্যস্ত, বর্বর খানসেনারা পিছু হটার সময় আশে পাশের ঘরবাড়ী দোকান-পাট কিছুই ভাল রেখে যায়নি। যেভাবে সমস্ত এলাকাগুলো একের পর এক মুক্ত হয়ে চলেছে তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। আমরা আরো আশা করছি, যেভাবে মুক্তিবাহিনীর বীর জোয়ানেরা দৃঢ় সংকল্পে ঐক্যবদ্ধ তাতে আর দশ দিনের ভেতর সমস্ত বাংলা ভূমি মুক্তি পাবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সাম্রিক বিজয়ের সাথে সাথে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা জনতার ধন, মাল , জানের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
দেশকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য জনতা আজ একতাবদ্ধ। বাংলার মাটিতে সমস্ত হানাদার দস্যুরা একে একে নির্মুল হয়ে পড়েছে। ভাঙা পাকিস্তানের উপর মুক্তিবাহিনী একটি করে নতুন গাছের চারা লাগিয়ে দিচ্ছে। তা হচ্ছে, “স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ”। তর তর করে বেড়ে উঠবে এই গাছ। অচিরেই ডালপালা মেলে ফুলে ফলে ভরে উঠবে এই নতুন চারাটি।