অনুবাদঃ সৈকত জয়ধর
<৬, ৯২, ৭৪০>
শিরোনামঃ মানব সৃষ্ট ধ্বংসলীলা
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ ভলিউম ১ নং ১৪
তারিখঃ ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১
.
“মানবসৃষ্ট দুর্যোগ”
বাংলাদেশে “মানবসৃষ্ট দুর্যোগ” নিয়ে করা প্রথম সন্তোষজনক চলচ্চিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছিল ২৬ নভেম্বর এন, বি, সি নেটওয়ার্কের মাসিক অনুষ্ঠান “ক্রনোলগ”-এ।
তথ্যচিত্রটি রচনা, প্রযোজনা, পরিচালনা ও বর্ণনা করেছেন বব রজারস, যিনি কিনা বাংলাদেশে এবং ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে প্রায় দুই মাস কাটিয়েছেন।
মুক্তিবাহিনীর অপারেশনের এক্সক্লুসিভ সচিত্র প্রতিবেদন সংগ্রহের জন্য রজারস বেশ কয়েকবার অধিকৃত বাংলাদেশে গোপনে প্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ন্ত্রণকারী বড় একদল বাঙালী গেরিলাবাহিনীর সঙ্গে এন, বি, সি এর প্রতিবেদক দল চারদিন অতিবাহিত করে।
অধিকৃত বাংলাদেশে ভিন্ন এক যাত্রায় এন, বি, সি এর কর্মীবৃন্দ পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী কর্তৃক সম্প্রতি ধ্বংস হওয়া এক বাঙালী গ্রামের চলচিত্র ধারন করতে সক্ষম হন।
চলচিত্রের বিভিন্ন সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জান্তার অব্যাহত নৃশংসতা এবং বাঙালী নারীর উপর হামলার চিত্র ফুটে ওঠে। কখনও আবার ফুটে ওঠে ভারতে বাঙালী শরণার্থী শিবিরের জীবনযাত্রা।
রজারস, যিনি কিনা গত দশ বছরে সংগঠিত হওয়া অনেক সহিংস ঘটনার উপর অত্যন্ত প্রশংসিত চলচিত্র প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলী সম্পর্কে তার ধারাভাষ্যে বলেছেন, “আমি যেসকল ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বিভীষিকাময়। এবং সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হল তাবৎ দুনিয়া চুপচাপ বসে আছে এবং এমন একটি ঘটনা গটে যেতে দিচ্ছে।”
তথ্যচিত্রটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ২৭ নভেম্বরের ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, “দক্ষতার সঙ্গে নির্মিত, এমন আপোষহীন বিবরণ, যার জন্য প্রয়োজন ছিল প্রচন্ড শারীরিক ও নৈতিক শক্তির।”
বাস্তবিক অর্থেই তথ্যচিত্রটি ছিল অসাধারণ। এটি আমেরিকান কমিউনিকেশন মিডিয়ার দক্ষতা, বিশেষ করে এন,বি,সি টিমের সৃষ্টিশীলতার পরিচয় বহন করে। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া শোকাবহ ঘটনাসমূহ লাঘব করতে সাহায্য করার উদ্দেশ্য নিয়ে নির্মিত অনুষ্ঠানকে পৃষ্ঠপোষকতা করায় আমরা বব রজারস, তার দলের সদস্যবৃন্দ ও এন,বি,সি নেটওয়ার্ককে অভিনন্দন জানাই।