কম্পাইলারঃ পার্থ সুমিত ভট্টাচার্য্য
<৬,৭২,১২১>
শিরোনামঃ রাজাকাররাও আর বিশ্বাসী নয়।
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ, ১ম বর্ষঃ ১৯শ সংখ্যা।
তারিখঃ ১ নভেম্বর, ১৯৭১।
.
রাজকাররাও আর বিশ্বাসী নয়।
ঢাকা ২৮শে অক্টোবর- এক জেলার রাজাকারদেরও অন্য জেলায় ব্যাপকভাবে বদলি করে মুক্তিবাহিনীর মোকাবিলা করবার কাজে নিয়োগ করতে পাক হানাদাররা উঠে পরে লেগেছে। পাকবাহিনী শহর, গ্রাম, গঞ্জ থেকে সক্ষম লোকদের এক বিশেষ আদেশ বলে সামরিক ছাউনীতে নিয়ে গিয়ে মোটামুটি গোছের একটা প্রশিক্ষণ দিয়ে রাজাকার বাহিনীতে শামিল হতে বাধ্য করছে।
.
জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ প্রভৃতি জেলা থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রাজাকারদের রংপুর দিনাজপুর প্রভৃতি এলাকায় প্রেরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জনৈক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির ধারণা দলে দলে মুক্তিবাহিনীর হাতে রাজাকারদের আত্মসমর্পনের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের জন্যই এক জেলার লোকদের অন্য জেলায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর হাতে ধৃত বেশ কিছু সংখ্যক রাজাকারদের মধ্যে বিভিন্ন জেলার লোকও দেখা গেছে। ধৃত রাজাকারদের কাছ থেকে জানা গেছে যে, পাকবাহিনী এক ফতোয়া জারী করে তাদের রাজাকার বাহিনীতে প্রবেশ করতে বাধ্য করছে।
.
জনৈক রাজাকার বলেন যে, অনেকে মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধাচরনের ভূমিকা প্রদর্শন করেও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে কারণ এর ফলে অতি সহজে যদি প্রাণে বেঁচে থাকা যায় তাহলে অস্ত্র শস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পনের নামে মুক্ত জীবনের অধিকারী হওয়া সম্ভব হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য, এত সাবধানতা স্বত্বেও খানসেনারা রাজাকারদের আত্মসমর্পন আটকাতে পারছে না। কারণ জেলাব্যাপী ব্যাপকভাবে বদলী করেও রাজাকারদের মানসিক গতিকে অর্থাৎ বাঙালীদের বাংলাদেশ প্রীতিকে ঠেকিয়ে রাখতে পারছে না যদিও ব্যতিক্রম কিছু বিশ্বাসঘাতক ক্ষমতালোভী ইয়াহিয়ার তাবেদার।