<৪,২৩৩,৫১৩-৫১৪>
অনুবাদকঃ রায়হান রানা
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৩৩। আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও কংগ্রেস সমবায়ে সংযুক্ত কমিটি গঠন | মুক্তিযুদ্ধ | ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
আওয়ামীলীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও কংগ্রেস
সমবায়ে সংযুক্ত কমিটি গঠন
সংগ্রামী ঐক্য প্রতিষ্ঠায় পথে শুভ পদক্ষেপ
\ বিশেষ প্রতিনিধি \
বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে গত বুধবার পাঁচটি সংগ্রামী দলের প্রতিনিধিদের সমবায়ে মন্ত্রিসভার পরামর্শদাতা কমিটি গঠিত হইয়াছে। এই কমিটিতে রহিয়াছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী খোন্দকার মুশতাক আহমদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, কমিউনিস্ট পার্টির কমরেড মণি সিং,জাতীয় কংগ্রেসের শ্রীমনোরঞ্জন ধর ও ভাসানী ন্যাপের মাওলানা ভাষানী। আওয়ামী লীগের দুইজন প্রতিনিধি এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হইবেন। তাঁহাদের নাম এখনো ঘোষণা করা হয় নাই। জনাব তাজউদ্দিন এই কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হইয়াছেন।
গত বুধবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদের আহবানে মুজিবনগরে উপরোক্ত দলগুলির নেতৃবৃন্দের দুই দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে পরামর্শদাতা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। বৈঠকে যোগদান করেন জনাব তাজউদ্দিন আহমদ, খোন্দকার মুশতাক আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, জনাব কামরুজ্জামান ও জনবা আবদুস সামাদ (আওয়ামীলীগ), কমরেড মণি সিং, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ , মাওলানা ভাসানী ও শ্রীমনোরঞ্জন ধর।
এখানে উল্লেখ্যযোগ্য যে , বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম আরোও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং সংগ্রামী রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠনের জন্য কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি প্রথমাবধি দাবি জানাইয়া আসিতেছিল। ‘পরামর্শদাতা কমিটি’ জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট না হইলেও ইহাকে সঠিক পথে একধাপ অগ্রগতি বলা যায়। ঐক্যফ্রন্টের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন।
বুধবারের সর্বদলীয় বৈঠক খুবই আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। আশা করা যায় যে, ইহার ফল সুসূরপ্রসারী হইবে এবং বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি উজ্জ্বল হইয়া থাকিবে।
প্রস্তাবাবলী
সর্বদলীয় বৈঠকে গৃহীত এক প্রস্তাবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান শেখ মুজিবর রহমানের অবিলম্বে ও বিনাশর্তে মুক্তি দাবি করা হয়। অপর এক প্রস্তাবে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে আত্মদানকারী নাম জানা না-জানা সকল শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে অকুন্ঠ সমর্থন
দান এবং বাংলাদেশের বাস্তত্যাগীদের আশ্রয় ও সাহায্য দানের জন্য ভারতের জনগণ, ভারত সরকার ও অন্যান্য সাহায্য- সমর্থন দানকারী দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিয়া একটি প্রস্তাব গ্রহন করা হয় । অপর এক প্রস্তাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি ব্যতীত অন্য কোন ভিত্তিতে রাজনৈতিক সমাধান গ্রহণযোগ্য নয় বলিয়া দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করা হয়। আর একটি প্রস্তাবে পশ্চিম পাকিস্তানের নিপীড়িত জনগনের সহিত সংহতি জ্ঞাপন করা হয় এবং গণতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে তাঁহাদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করিয়া তাঁহাদের প্রতি বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সমর্থন দানের আহবান জানান হয়।