শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বিক্ষুদ্ধ পাকিস্তান | বাল্টীমোর সান | ৩০ মার্চ, ১৯৭১ |
<১৪, ৬, ১৮>
বাল্টীমোর, মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ, ১৯৭১
বিক্ষুদ্ধ পাকিস্তান
যদিও রেডিও পাকিস্তান সরকারী কিছুই নয়, তবে তারা দাবী করে পূর্ব পাকিস্তান আগের মত স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে যাচ্ছে । মূলত ঢাকা থেকে বিদেশী রিপোর্টারদের নির্বাসনের পর বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোন সূত্র ছিলনা । সরকারী চ্যানেলগুলোকে যা বলতে বলা হয় তারা তাই বলে । একটি বিদ্রোহী রেডিও ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য জায়গার যুদ্ধের বর্ণনা দেয় কিন্তু এই উৎসের কর্তৃপক্ষও প্রতিষ্ঠিত নয় ।
একটা বিষয় পরিস্কার যে, বিতাড়িত হওয়ার আগে বিদেশী রিপোর্টারদের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যবেক্ষন আর সরকারী পর্যবেক্ষণ এর সাথে অনেক পার্থক্য পাওয়া যায় । সেনাবাহিনী, যারা পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ছিল তারা বিদ্রোহ দমনের কোন চেষ্টা করেনি । তারা পূর্বনির্ধারিতভাবে মেরে চলছে সব উস্কানি ছাড়িয়ে ।
দি সান এর একজন বিতাড়িত রিপোর্টার জন ই. উডরাফ নয়াদিল্লী থেকে পুরনো গুজব সম্পর্কে লিখছেন, তিনি সেই সময় সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকার আলোচনাকে ইচ্ছাকৃতভাবে দীর্ঘ করছে, পশ্চিম বাংলাকে একটা অনিবার্য সমঝোতার মাধ্যমে শান্ত করার জন্য এবং তারপর কোন পূর্বাভাস ছাড়াই আক্রমণ করবে ।
সত্যি বা মিথ্যা যাই হোক, সরকারের কৌতূহলী ব্যাখ্যার কারনে সেই লিখাটা বিশ্বাস করা হয় যেখানে বলা হয় সঙ্কট চরমে পৌঁছেছিল তাই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়, আইনি পরিভাষায় – বাংলার নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় পরিষদের নির্ধারিত সভার পূর্বেই চেয়েছিলেন বেসামরিক জনগনের উপর ক্ষমতার দলবদল আনতে । জুলফিকার আলি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিও একই কথা বলেছিল এবং একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল এবং পরবর্তিতে পরোক্ষ সম্মতি দিয়েছিল ।
যদি সরকার স্বাভাবিকভাবে নির্মম সামরিক নির্যাতন চালাতে থাকে, তাহলে অচিরেই পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হতে পারে । এমনকি এটা সন্দেহ করা যায় এবং নিশ্চিতভাবেই ধরে নেয়া যায় যে, এখন দুই পাকিস্তানের মধ্যকার বিভাজন সংস্কারের উর্ধ্বে এবং পশ্চিম বাঙালিরা এই বিদেশী শাসকদের শাসন চিরকাল মেনে নিবে না যাদের চেহারা, স্বভাব, ভাষা সবকিছুই তাদের থেকে আলাদা ।