গণ-আন্দোলনের প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানঃ বিক্ষোভ করে সরকারকে টলানো যাবে না।

<2.73.399-400>

 

 

শিরোনাম সূত্র তারিখ
গণ-আন্দোলনের প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানঃ বিক্ষোভ করে সরকারকে টলানো যাবে না। দৈনিক পাকিস্তান ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৮

 

বিক্ষোভ করে সরকারকে টলানো যাবে না

 

          একের পর এক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বা সভা করে বিরোধী দল বর্তমান সরকারকে টলাতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট মোঃ আইয়ুব খান গতকাল শনিবার ঢাকায় এ কথা ঘোষণা করেন।

 

          তিনি গতকাল মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন।

 

          এ,পি,পি-পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, প্রদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসলিম কর্মীদের এই সম্মেলনে ১ ঘন্টাব্যাপী জোরালো ভাষায় বক্তৃতাকালে এই মর্মে সতর্ক করে দেন যে, বিরোধী দরের সর্বাত্মক লক্ষ্য হচ্ছে কিছু লাভের আশায় জাতীয় ঐক্য ও সংহতিকে ধ্বংস করা।

 

          প্রেসিডেন্ট বলেন, তাদের ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার দাবীর লক্ষ্যে হচ্ছে দুই প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো করে ফেলা। খোদা না করুন, যদি তাই হয়, তবে তা হবে আমাদের সকলের কাছেই আত্মহত্যার শামিল। তিনি আরো বলেন, আয়তনে ভারতের পাঁচভাগের এক ভাগের সমান পাকিস্তান যদি খন্ড খন্ড হয়ে যায়, তবে তার অস্তিত্বই বিলুপ্ত হবে।

 

          তিনি বলেন, বিরোধী দলের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার অর্থ হচ্ছে সেইসব দুর্যোগময় দিনে ফিরে যাওয়া যা কি না দেশ ও জাতিকে বিভেদের দিকে টেনে নিয়ে যাবে এবং এর সার্বিকি অর্থ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পিঠেই ছুরিকাঘাত করা।

 

          মুসলিম লীগের এই সম্মেলনে থানা, শহর, মহকুমা, জেলা ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি ও সম্পাদকগণ ছাড়াও গভর্ণর জনাব আবদুল মোনেম খান, পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক, প্রাদেশিক মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যগণ এবং সারা প্রদেশের মুসলিম লীগের নেতা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

          প্রেসিডেন্ট বলেন, কিভাবে ক্ষমতা দখল করা যায় বিরোধী দলের সবাই সেই মতলব আঁটতেই ব্যস্ত। বিরোধীদলিয় নেতাদের কারোরই কোন সুষ্ঠু বা গঠনমূলক কর্মসূচী নেই। তাঁরা আগে ক্ষমতা দখল করতে চান, তাঁর পরে তাদের কর্মসূচী গ্রহণ করতে চান।

 

          বিরোধী দলগুলির হীন কার্যকলাপ নসাৎ করে দেবার জন্য প্রেসিডেন্ট দলীয় কর্মীদের প্রতি সকল আভ্যন্তরীন বিরোধ বিসর্জন দিয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলার আহবান জানান। তিনি তাদেরকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন যে, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ব্যাপারে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতির ঐক্য, দেশের সংহতি ও মাতৃভূমির উন্নয়ন বা অগ্রগতি এসব কিছু নির্ভর করছে মুসলিম লীগের উপর।

 

          প্রেসিডেন্ট বলেন, মুসলিম লীগ কর্মীদের এসব কিছুকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, বিরোধী দলগুলি এসবকে চুরমার করে দিতে চায়।

 

 

শক্তিশালী কেন্দ্র

 

          প্রেসিডেন্ট পুণরায় একটি শক্তিশালী কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, একমাত্র এতেই পাকিস্তান একটি শক্তিশালী দেশে পরিণত হতে পারে এবং জনসাধারণ একটি সমৃদ্ধিশালী ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জীবন যাপনের নিশ্চয়তা পেতে পারে।

 

          ১৯৫৮ সালের বিপ্লবের পর থেকে দেশের যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরো জোরদার হয়েছে এবং ১৯৬৫ সালের যুদ্ধই এর প্রমাণ।

 

          তিনি বলেন, এসবই সাধারণ মানুষের কঠোর পরিশ্রমের ফল।

Scroll to Top