<2.154.641>
শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
জাতীয় পরিষদে যোগদানের আহবান জানিয়ে নূরুল আমিনসহ উভয় অংশের নেতৃবৃন্দ | পাকিস্তান অবজারভার | ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ |
জাতীয় পরিষদে আসুন: সকলের প্রতি নুরুল আমিনের আহ্বান
ভুট্টোর পক্ষাবলম্বনের নিন্দা
১৯৭১ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারিতে জনাব নুরুল আমিন এবং দুই অংশের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের বিবৃতি।
মঙ্গলবার পাকিস্তান ডেমোক্রেটিকপার্টির সভাপতি জনাব নুরুল আমিন জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে কায়েদ-ই-আজমের প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের জন্য একটি উপযুক্ত সংবিধান প্রণয়নকরতে দেশের দুই অংশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আহবান করেছেন।
জনাব ভুট্টোর পেশোয়ারের বিবৃতির উপর এপিপিকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় জনাব নুরুল আমিন জানান; এটা দু:খজনক যে দুই সংখ্যাগরিষ্ঠদলের নেতা শেখ মুজিব এবং জেড এ ভুট্টো ঢাকায় সাম্প্রতিক আলোচনায় সংবিধানের বিস্তৃত নীতির উপর আপোষে আসতে ব্যর্থ হয়েছে, যদিও আলোচনা সঠিক ভাবে এগুচ্ছে বলেই সংবাদপত্রের প্রতিবেদন গুলো জনগণকে জানাচ্ছিল।
জনাব ভুট্টোর জাতীয় পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে যোগ না দেবার সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র হঠকারী ও নোংরাই ছিল না, তা ক্ষমতার প্রাথমিক স্থানান্তরের ভবিষ্যত নিয়েও জনগনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। তার দলের লোকেদের পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিগুণ জিম্মি হবার কল্পিত অজুহাত ছিল অত্যন্ত আপত্তিকর।
“এটা এই অঞ্চলের জনগণের উপর একটি অযৌক্তিক অপবাদ, পিপিপি চেয়ারম্যান এর মনোভাব, কম করে বললেও খুবই দুঃখজনক।”
লাহোর থেকে একটি বার্তায় যোগ করা হয়েছে: মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী জাতীয় পরিষদের বাইরে সাংবিধানিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টাকে অবৈধ বলে বর্ণনা করছেন এবং অধিবেশনে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন এবং এইভাবেএই সন্ধিক্ষণে একটি সাংবিধানিক অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মওদুদী বলেন, ঠিক হতো যদি ক্ষিপ্ত মনোভাব ত্যাগ করে জনগণের ভোটে নিবাচিত সকল প্রতিনিধিরা অধিবেশনে অংশ নিতো।
সকল ছোট ও বড় দলগুলোর মধ্যে যারা সংখ্যালঘু (সংসদে) তারা তাদের সংবিধানের জন্য তাদের নিজস্ব খসড়া উপস্থাপন করা উচিত নয়। একমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ দল তার খসড়া উপস্থাপন করবে এবং খসড়ার সকল অংশ হবে রাষ্ট্রের ইসলামী চরিত্রের সাথে সাদৃশ্য রেখে। দেশের সংহতি, গণতান্ত্রিক নীতি, সবঅঞ্চলে সম ও মৌলিক অধিকার এবং অর্থনৈতিক ন্যায় বিচার গ্রহণ করা হবে এবং এই নীতিগুলোর পরিপন্থী অন্য সকল উপাদান অত্যন্ত জোরালো ও শক্তিশালীভাবে বিরোধিতা করা উচিত।
<2.154.642>
এবং যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল তার সংখ্যাগরিষ্ঠতার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়, তাহলে এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, যদি এধরণের সংবিধান পাশও হয়, তা সফল হবে না আর সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সেই ফলাফলের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, বর্তমানের জটিল পরিস্থিতি ১৯৬৮ সালের শেষের দিক থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সংঘটিত ধারাবাহিক ভুলের ফলাফল। এখনি সঠিক কোন পদক্ষেপ না নেওয়া হলে দেশের অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে পরার সম্ভবনা রয়েছে।
আতাউর রহমান
পাকিস্তান ন্যাশনাল লীগের প্রধান, জনাব আতাউর রহমান খান জনাব ভুট্টোর স্ট্যান্ডকে দেশবিভক্ত করার পদক্ষেপ (ষড়যন্ত্র) বলে অভিহিত করেন।
জনাব ভুট্টোর জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়া এবং সংবিধানের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। যদি তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতো, শুধুমাত্র তখন জনাব ভুট্টো এই ধরনের একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, জনাব আতাউর রহমান খান বলেন।
সালাম খান
পূর্ব পাকিস্তান পিডিপির সাবেক প্রেসিডেন্ট জনাব আবদুস সালাম খান মনে করেন, জনাব ভুট্টোর জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তিনি বলেন, জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে এবং একটি সংবিধান প্রণয়নের জন্য আসন্ন জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে জনাব ভুট্টো ও তার দলের নির্বাচিত সদস্যদের অংশগ্রহন হবে একটি বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত।