<2.140.595-596>
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
“পিপল’স পার্টি জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলে বসবে না” বলে ভুট্টোর ঘোষণা
|
পাকিস্তান টাইমস | ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭০ |
পিপল’স পার্টি বিরোধী দলে বসবে না
আমাদের সহযোগিতা ছাড়া কোন সংবিধান হবে না।
লাহোরে ২০ ডিসেম্বর ১৯৭০-এ জনাব জেড, এ, ভুট্টোর বিবৃতি।
রোববার লাহোরে পাকিস্তান পিপল’স পার্টির চেয়ারম্যান জনাব জেড, এ, ভুট্টো ঘোষণা করেন যে, তাঁর দলের সহযোগিতা ছাড়া কোন সংবিধান রচনা কিংবা কেন্দ্রে কোন সরকার পরিচানলনা করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, পিপিপি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার জন্য প্রস্তুত নয়।
তিনি বলেন যে, পিপিপি আরো পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় না গিয়ে অপেক্ষা করতে পারে না কারণ এতে তারা জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারবে না এবং তাদের সমস্যারও সমাধান হবে না।
লারকানা থেকে এসে চার ঘন্টা পরেই, সাত মাইল দীর্ঘ এক মিছিলের শেষে পাঞ্জাব এসেম্বলি চেম্বারের বাইরে অপেক্ষমাণ বিশাল জনতার সামনে তিনি বলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য তাঁর শুভেচ্ছা রয়েছে যিনি জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের পক্ষে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এসেছেন। এরপর তিনি বলেন,”কিন্তু শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতাই জাতীয় রাজনীতিতে একমাত্র বিষয় নয়”।
তিনি বলেন যে, পিপিপি পাঞ্জাব ও সিন্ধুর প্রাদেশিক সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে এবং এ দুই প্রদেশেই কেন্দ্রের সত্যিকার ক্ষমতা নিহিত। তিনি জানিয়ে দেন যে, পিপিপির সহযোগিতা ছাড়া কেন্দ্রে কোন সরকার চলতে পারবে না। তিনি জানান, সকল প্রদেশের জন্য সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসন দিয়ে পাকিস্তানের জন্য একটি জনগণের সংবিধান তৈরির চেষ্টাই পিপিপি করবে। এক কেন্দ্রিক ব্যবস্থা লুপ্ত হয়েছে এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সকল প্রদেশ পুনরুত্থিত হয়েছে। প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেয়ার জন্য পিপিপির সহযোগিতা অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
* * * * *
এর আগে তিনি ব্যাখ্যা করেন কিভাবে পিপিপি আইয়ুব শাহীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে এবং একনায়কতন্ত্রের অবসানের জন্য তাদের কী পরিমাণ প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন কিভাবে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য এক গোল টেবিল বৈঠকের আহ্বান করেছিলেন, যা ছিল পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে এক পরিষ্কার ষড়যন্ত্র। এটি ছিল সংসদীয় গণতন্ত্রের আদর্শ ছুঁড়ে ফেলে নিজেকে ক্ষমতায় রাখার জন্য আইয়ুব খানের এক পরিকল্পনা। আর এ কারণেই, তিনি বলেন, পিপিপি সেই বৈঠকে অংশ নিতে অস্বীকার করেছিল।
তিনি বলেন যে, আইয়ুবের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে যখন সারা দেশের জনগণ আন্দোলন করছে, তখন প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি ‘ইসলাম বিপন্ন’ বলে ধুয়া তুলে এ গণজোয়ারে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করেছে। এবং তা করেছে শুধু তাদের জায়গীরদারি, জমিদারি, সম্পদ আর অন্যান্য বিনিয়োগ রক্ষার স্বার্থে। এ সকল প্রতিক্রিয়াশীলদের কেউ কেউ ইসলামকে এত অপব্যবহার করেছে যে, শুধুমাত্র আইয়ুব শাহীর বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মশালের দিকে দোষের আঙ্গুল তোলার জন্য তারা এমনকি পবিত্র কোরান শরিফে পর্যন্ত আগুন দিতে দ্বিধা করেনি।
পিপিআই সূত্র মতে, জনাব ভুট্টো একটি স্থানীয় ইংরেজি দৈনিকের পরামর্শের প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রশ্ন করেন, যদি তিনি বিরোধী দলে থাকতেন, তাহলে কিভাবে জনগণের সমস্যার সমাধান করতেন, দ্রব্যমূল্যের লাগাম কে টেনে ধরতেন আর পুঁজিপতিদের থাবা থেকে কে জনগণকে মুক্ত করতেন ?