বাঙালি হত্যার জন্য আরও আমেরিকান অস্ত্র
আপসো বাংলাদেশকে বুঝতে অপারগ
.
এই সময়ে ইউ এস সরকারের ভূমিকা আমাদের জন্য আরো পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছিল। যেখানে ১০ লাখ লোক ইতোমধ্যেই প্রান দিয়েছিল, সেখানে ইউ এস পাঠানো আর্মি দের জন্য অস্ত্র পরিস্থিতি কে আরো খারাপ করে তুলেছিল। যদিও ২৫ মার্চের ভয়াবহতার পর আরমি দের কোন কিছুর সাপ্লাই দেয়া কংরেস থেকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছিল, এরপরে ও নিউইয়র্ক থেকে তাদের জন্য বিশাল পরিমান অস্ত্র এসেছিল। স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এই অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়েছিল, ৩১ মার্চ ও ৬ এপ্রিল এই অনুস্মতি দেয়া হয় এবং এতে বলা হয় যে , ২৬ মার্চ এর দেয়া নিষেধাজ্ঞার এখন আর কোনো কার্যকরীতা নেই।
এই ঘটনা জানার পর সিনেটর স্টুয়ারট সিমিংটন বলেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট যেহেতু এর অনুমতি দিয়েছে তার মানে তারা জানেনা যে আসলে সেখানে কি হচ্ছে। এরপর সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি তাদের সরকারকে ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এর মধ্যেই খবর পাওয়া যায় যুদ্ধের অনেক সরঞ্জাম নিয়ে ৩য় শীপমেন্ট পাকিস্তানে রওয়ানা দিয়েছে। এ ঘটনা শুধু আমেরিকা না সারা বিশ্বকেই হতবুদ্ধি করে দেয়।
বাংলাদেশে বসে আমরা চিন্তা করি যে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ আসলে প্রো পাকিস্তান সেইল বলে কিছু আছে কিনা, কোনো এমন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আছে কিনা যারা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এসব শীপমেন্টের ব্যাবস্থা করছে। যদি এমন কিছু থেকে থাকে তাহলে তাৎক্ষনিক ব্যাবস্থা গ্রহন করা উচিত আরো বড় ক্ষয়ক্ষতি হবার পূর্বেই ।
পাকিস্তানী আর্মিরা ছিল অতি ধূর্ত । তারা সরকারের কোনো পদক্ষেপ আগে থকেই অনুমান করে ফেলতে পারলে এমন স্মভাবনা চাহে যে কার্গো থেকে এসব মারণাস্ত্র অন্য কোনো জাহাজে করে নিয়ে যাবে। তাই আর দেরি করার মত সময় নাই, আমেরিকার সরকার কে অতি দ্রুত ই কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে।
এমন সময় মিড ইস্টার্ন ফন্ট থেকে আরেকটি খারাপ খবর আসে। আফ্রো এশিয়ান সমন্বয়কারী সংস্থা দামাস্কাস এ তাদের ১০ম সম্মেলন করে কিন্তু সেখানে পাকিস্তান বাহিনীর এই নারকিয়তা তাদের সহানুভূতি অর্জনে ব্যারথ হয়। ভারতীয় ডেলিগেটদের চাপে পরে তারা এই ইস্যুতে নাম মাত্র লোক দেখানো সহানূভুতি প্রকাশ করে। কবির আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি এই সেশন এ নেতৃত্ব দিলেও তাকে আসলে কিছু বলার সুযোগ দেয়া হয়নি। আরব দেশ গুলো কেন ইতিহাসের এত বড় নারকীয় হত্যা যজ্ঞের বিরোধিতা করার মত কিছু খুজে পেলনা জিনিসটা আসলেই ছিল অবাক হবার মত। একটি ব্যাপার অত্যন্ত দুঃখের ছিল যে সিরিয়া , লিবিয়া , নাইজেরিয়া এমন কিছু মুস্লিম দেশ শুধু মাত্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম হওয়ায় তাদের সাপোর্ট করছিল। যদিও নাইজেরিয়া বাংলাদেশকে সাপোর্ট করবে এমন আশা করাও ভুল ছিল কেননা তারা নিজেরাই তাদের সংখ্যা লঘু ব্লাফরা জাতির উপর ঠিক একই ভাবে নির্যাতন চালিয়েছিল। লিবিয়ায় রাজতন্ত্র চলছিল, তাই গণতন্ত্র এর ব্যাপারে তাদের কোনো আগ্রহ ছিলনা,। পেলেস্তাইন গেরিলাদের আল ফাত্তাহ এর নেতা ইয়াসির আরাফাত, বাংলাদেশি দের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন, যারা নিজেদের অস্তিত্তের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। এটি আসলেই অত্যন্ত দুঃখজনক ছিল যে আফ্রো এশিয়ান সমন্বয়কারী সংস্থা র মত এমন একটি প্রতিষ্ঠান সেই ৭৫ লক্ষ দুর্দশাগ্রস্ত , ভয়াবহতার শিকার বাঙ্গালীদের সমর্থন না করে কুচক্রি পাকিস্তানী দের সমর্থন করছিল, এর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠানটির নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।